শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৬:৫৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ইফতারে সতর্কতা

মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ:
ইফতার রোজার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইফতারের মাধ্যমে সমাপ্তি। তাই ইফতার সুন্নত পদ্ধতিতে করা আবশ্যক। কিন্তু মানবিক প্রবৃত্তি, ভুল ধারণা ও স্থানীয় প্রচলনের কারণে মানুষ কিছু ভুল করে থাকে, যা পরিহার করতে পারলে রোজাগুলো অনেক বেশি সুন্দর হবে।

দেরিতে ইফতার করা : ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ার পরও ইফতার না করা। সাংসারিক কাজ বা অন্যকোনো কাজে ব্যস্ত থাকা। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘দ্রুত ইফতারকারী কল্যাণ লাভ করতে থাকে।’ -সহিহ বোখারি

আজান শেষ হওয়ার অপেক্ষা করা : ইফতারের জন্য আজান শেষ হওয়ার অপেক্ষা করা। অথচ অপেক্ষা করতে বলা হয়নি। কোরআন মাজিদে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজতা চান। কঠোরতা চান না।’ -সুরা বাকারা : ১৮৫

আজানের উত্তর না দেওয়া : ইফতারের সময় আজানের উত্তর প্রদান না করা। রাসুলে আকরাম (সা.) রোজাদার ও রোজা নয় এমন সব ব্যক্তিকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘তোমরা যখন আজান শুনবে, মুয়াজ্জিন যেমন বলে তেমন বলবে।’ -সহিহ মুসলিম : ৮৪৯

ইফতারে অধিক সময় ব্যয় করা : ইফতারের জন্য বেশি সময় ব্যয় করা, নামাজ আদায়ে দেরি করা, জামাতে অংশগ্রহণ না করা নিন্দনীয়। সহিহ মুসলিমে ইবনে আতিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী হজরত রাসুল (সা.) সামান্য ইফতার গ্রহণ করে দ্রুত নামাজ আদায় করে নিতেন।

ইফতারের সময় দোয়া না করা : ইফতারের সময় আল্লাহতায়ালা দোয়া কবুল করেন, অথচ অনেকেই দোয়ার প্রতি গুরুত্ব দেয় না। বিশেষত নারীরা ঘরের কাজেই ব্যস্ত থাকেন। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিন ব্যক্তির দোয়া ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। পিতামাতার দোয়া, রোজাদারের দোয়া ও মুসাফিরের দোয়া।’ -মুসনাদে আহমদ

ইফতারে অপচয় করা : অতিরিক্ত খাবারের আয়োজন করা এবং তা অপচয় করা। খাবারের জৌলুশ রোজার সংযম ও ধৈর্যের শিক্ষার পরিপন্থী। আল্লাহতায়ালাও অপচয় পছন্দ করেন না। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা খাও ও পান করো। অপচয় কোরো না।’ -সুরা আরাফ : ৩১

ইফতারের সময় নিয়ে সতর্কতা

সূর্যের পুরো বৃত্ত অদৃশ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতারের সময় হয়। আর সে সময় হলো মাগরিবের নামাজের আগে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘…অতঃপর নিশাগম (রাতের আগমন) পর্যন্ত তোমরা সিয়াম (রোজা) পূর্ণ করো…।’ -সুরা বাকারা : ১৮৭

রোজার নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে ইফতারের জন্য প্রত্যেক রোজাদারের অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করা স্বাভাবিক। অতএব ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রিয় নবী (সা.) আমাদের দ্রুত ইফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন। হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘মানুষ ততক্ষণ মঙ্গলে থাকবে, যতক্ষণ তারা (সূর্য ডোবার পর নামাজের আগে) ইফতার করতে তাড়াতাড়ি করবে।’ -সহিহ বোখারি : ১৯৫৭

অতএব দেখার বিষয় হলো সূর্যাস্ত- আজান নয়। সুতরাং রোজাদার যদি নিজ চোখে দেখে যে সূর্য ডুবে গেছে; কিন্তু মোয়াজ্জিন এখনো আজান দেয়নি, তাহলেও তার জন্য ইফতার করা বৈধ।

ইফতার করে নামাজ পড়ার পর প্রয়োজনীয় আহার ভক্ষণ করবে রোজাদার। অবশ্য যদি আহার প্রস্তুত থাকে, তাহলে প্রথমে আহার খেয়েই নামাজ পড়বে। যেহেতু হজরত আনাস (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাতের খাবার উপস্থিত হলে মাগরিবের নামাজ পড়ার আগে তোমরা তা খেয়ে নাও। আর সে খাবার খেতে তাড়াহুড়া কোরো না।’ -সহিহ বোখারি : ৬৭২

ইফতারের ফজিলত

সারা দিন রোজা রাখার পর রোজাদারের জন্য ইফতারের মুহূর্তটা পরম আনন্দের। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ -জামে তিরমিজি : ৭৬৬

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION