বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:২৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কমে যাওয়ায় চিন্তিত চাষিরা

বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজারে মাঠ পর্যায়ে লবণের মূল্য কমে যাওয়ায় চিহ্নিত প্রান্তিক চাষিরা। প্রতিদিন এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে পথে বসবে বলে মনে করেন লবণ চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজারে একটি তারকামানের হোটেলের হল রুমে লবণ চাষিদের সাথে মোল্লা সল্ট ও মোল্লা সুপার সল্টের আলোচনা সভায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা এ অভিযোগ করেন।

আলোচনা সভায় মিল মালিক, লবণ ব্যবসায়ী ও চাষিরা মনে করেন, গত মৌসুমে ৬১ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উৎপাদন হলেও সেটি দেশের চাহিদার তুলনায় কিছুটা কম ছিল। তবে এবার চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

‘অটুট বন্ধনে সমৃদ্ধ পথচলা’ স্লোগানকে সামনে রেখে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজারের ডুলাহাজারার লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী জমির হোসেন, ছাবের আহমদ, মো: শহীদুল ইসলাম, আবু কায়ছার, মহেশখালীর আবদুল মালেক, চকরিয়া বদরখালী এলাকার সরওয়ার আলম, জাফর আলম মেম্বার, টেকনাফ এলাকার লবণ চাষি আবদুস সালাম, মো: রাসেল, বাঁশখালীর মো: ওসমান ও বাংলাদেশ লবণ চাষি সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল।

বাংলাদেশ লবণচাষী সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল চৌধুরী বলেন, আমরা সকলে লাভের আশাবাদী ক্ষতির সম্মুখীন হতে প্রস্তুত নই। আমি সরকারকে প্রস্তাব দিয়েছিলাম, মাঠের লবণ দেখে মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। যদি সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা যায় তবে লবণচাষ বন্ধ হবে না।

লবণচাষী আবু কায়সার বলেন, যদি আপনারা লবণ ক্রয় বন্ধ করেন তবে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।  অনেক সময় আমরা মাঠ পর্যায় থেকে ক্রয় করে আপনার দিই। লবণের মাঠ কিছুদিন আগে দাম বাড়লেও এখন হঠাৎ করে লবণের দাম কমেছে মাঠ পর্যায়ে। হঠাৎ করে লবণের দাম কমে গেলে চাষীদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।

মহেশখালীর লবণ চাষি সারওয়ার আলম বলেন, মাঠে সাদা লবণের চাহিদা বেড়েছে। পলিথিন ব্যবহারের ফলে আমরা এই সাদা লবণ পাচ্ছি। পলিথিন ব্যবহারের ফলে সাদা লবণের দাম একটু বেশি পড়ে। অন্যদিকে নদী ভরে যাওয়ার কারণে জোয়ার ভাটায় প্রভাব পড়েছে।

লবণ চাষি জাফর আলম বলেন, এখন লবণ উৎপাদনে আমাদের ব্যয় বেড়েছে, তাই বড় কোম্পানিদের খেয়াল রাখতে হবে যেন লবণচাষ বন্ধ করতে না হয়। ন্যায্য মূল্যে যেন মাঠ থেকে লবণ ক্রয় করা হয়।

মোল্লা সল্টের এসিসট্যান্ট ম্যানেজার মামুনুর রশীদ বলেন, লবণ উৎপাদনে গুনগত মান বাড়াতে হবে। বিশেষ করে লবণে পানি কম দিয়ে লবণের দানা পরিপক্ষ করতে হবে।

মোল্লা সল্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: মিজানুর রহমান বলেন, লবণ সাদা করতে হবে। ভারত, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশে লবণ উৎপাদন ভাল হয়। এটি আবার প্রাকৃতিকভাবে মাটির গুণাগুণ ভাল।

তিনি আরও বলেন, মাঠ থেকে মিলে লবণের অনেক প্রক্রিয়াজাতকরণ করতে হয়। এজন্য দরকার সঠিক প্রশিক্ষণ। ভাল লবণ উৎপাদনে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত পারলে আমরা পারব না কেন? প্রশ্ন রাখেন তিনি।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোল্লা সল্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান মোল্লা, জেনারেল ম্যানেজার বিদ্যুৎ চন্দ্র গুপ্ত, আব্দুল মান্নান, এসেসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম, সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার হেলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ লবণচাষী সমিতির সভাপতি মোস্তফা কামাল চৌধুরী, এসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার মামুনুর রশীদ প্রমুখ।

বিসিকের দেয়া তথ্য মতে,গত মৌসুমে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ লাখ ৫৭  হাজার টন বিপরীতে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ১৮ লাখ ৩২ হাজার টন। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টন। গত মৌসুমে ৬৩ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ চাষ হয়, যা এবার প্রায় সাড়ে ৬৬ হাজার একর।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION