শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মাতারবাড়ী বেড়িবাঁধে আবারও ভাঙন, শঙ্কিত মানুষ

কাইমুল ইসলাম ছোটন:
কক্সবাজার শহর থেকে ৩৩ কিলোমিটার দূরে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের সুবাধে সারা দেশে মাতারবাড়ী পরিচিত হলেও বছরের পর বছর শঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন এই অঞ্চলের মানুষ। প্রতি বছরই বেড়িবাঁধের ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাতে হয় তীরবর্তী মানুষের। পূর্ণিমার জোয়ারে পানি বাড়লে অনেকে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার। কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় কেউ চোখের জল ফেলছেন। অনেকে ঘরবাড়ি ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বারবার সংস্কার হলেও কোন সুরাহা মিলছে না বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। ইতোমধ্যে চারটি বসতবাড়ি ভেঙে গেছে বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী জানান।

স্থানীয়রা জানান, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের কারণে বিগত ১০ বছরে শতাধিক পরিবার নিঃস্ব হয়ে বাধ্য হয়েছেন অন্যত্র চলে যেতে। অনেকে ঝুঁকি জেনেও মাথা গোঁজানোর ঠাঁই গড়ছেন বেড়িবাঁধ ঘেঁষে। তবে বেড়িবাঁধ নির্মাণে ব্যাপক গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে এমন ভাঙন। বারবার প্রতিবাদ করেও কোন সুরাহা মিলেনি বলে তাদের দাবি।

স্থানীয়রা আরও জানান, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্পে টেকসই বাঁধ দেওয়ার কারণে জোয়ারের ধাক্কা সরাসরি বেড়িবাঁধে আঘাত করে। এতে বেড়িবাঁধ দূর্বল হয়ে পড়েন। ফলে সহজে এটি ধসে পড়ে। মাতারবাড়ী রক্ষার্থে তারা টেকসই বেড়িবাঁধের দাবি জানান।

গতকাল সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধের নয়টি স্থানে পুনরায় বড় বড় ভাঙন। পূর্ণিমার কারণে জোয়ারের পানি দুই থেকে ৩ ফুট বৃদ্ধির ফলে অনেক জায়গায় বেড়িবাঁধ উপছে বসতভিটায় পানি প্রবেশ করছে। সর্বশেষ চার কোটি টাকা বাজেটে ৮০০ মিটার সংস্কারে দেওয়া জিওব্যাগসহ মাটি ধসে পড়ে গেছে। অনেকগুলো জিওব্যাগ সাগরে তলিয়ে গেছে। কয়েকটি বসতবাড়ি জোয়ারের পানি প্রবেশের পাশাপাশি ভেঙে গেছে। দ্রুত সংস্কার না হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিলীন হতে পারে গ্রামের পর গ্রাম। পূর্ণিমার চলতি জোয়ার আরও ২ দিন থাকবে বলে জানা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা জবর নুর বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণে বালি দেওয়ার কারণে ধসে পড়ে। বারবার টেন্ডার হলেও টাকা হরিলুট করা হয়। রাতে পানি বাড়লে কি হবে জানিনা। চোখের ঘুম হারাম হয়ে যাবে সবার।

বেড়িবাঁধের তীরবর্তী বাসিন্দা আলী হোসাইন, লেদু ও পারভীন বলেন, বেড়িবাঁধ নিয়ে আমরা কষ্টে আছি। প্রতিবারই ভাঙনে আমাদের আতঙ্কে থাকতে হয়। বেড়িবাঁধ এদিকে সংস্কার করলেও বারবার ধসে পড়ে। পাথর ছাড়া বালি ও জিওব্যাগ দিয়ে বেড়িবাঁধ রক্ষা করা যাবে না। বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে মাতারবাড়ী অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে ৪ টি বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাড়িতে পানি ডুকছে। তাদের আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াছিন শিমুল বলেন, বসতবাড়ি ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে জানা নেই। এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিষয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে খোঁজ নিবেন বলে তিনি জানান।

জানতে চাইলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, বেড়িবাঁধ রক্ষার জন্য অস্থায়ী বাঁধের কাজ করতেছি। স্থায়ী কাজ না হলে এরকম জোয়ার ঠেকানো সম্ভব না। টাকা গচ্ছা যাওয়ার বিষয়ে বলেন, পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা ভাঙা অংশে কাজ করতেছি। এটার জন্য সুপারডাইকের প্রকল্প দিয়ে রাখছি, তা অনুমোদনের অপেক্ষায়।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION