শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৫৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রমজানের প্রথম ১০দিনের গুরুত্ব

ধর্ম ডেস্ক:
আরবি বারো মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ মাসের নাম রমজান। এ মাসে মুমিনের ওপর ফরজ করা হয়েছে পূর্ণ একমাস সিয়াম পালন। সিয়াম পালনকারীকে আমরা রোজাদার বলে অভিহিত করে থাকি। একজন মুসলিমের জন্য অন্যান্য ফরজ ইবাদতের মতো রোজা রেখে মহান প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জন করা আবশ্যক। ইসলামের মূল পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম এটি। দ্বিতীয় হিজরিতে কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা উম্মতের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন—‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের প্রতি রোজা (রমজানের রোজা) ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের লোকদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পারো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)।

নামাজের সময়সূচি
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আবশ্যকীয় ইবাদত। সময়মতো নামাজ পড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। কিন্তু সারা বছর ব্যাপী নামাজের সময় এক থাকে না। নগদ ইসলামিক অ্যাপে ইবাদত প্রতিদিন ফিচারে রয়েছে নামাজের সময়সূচি। যেকোন সময় নামাজের সময়সূচি দেখে নিয়ে নামাজ আদায় করুন সময়মতো।

আরও বাধ্যবাধকতা বোঝাতে অন্য আয়াতে ইরশাদ করেন—‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৫) বরকতময় এ মাসে রোজা পালনকারীর মর্যাদাই আলাদা। অন্যান্য মাসব্যাপী রোজা রাখলেও রমজান মাসের একটি রোজার সমতুল্য হবে না।

আবশ্যিক এ ইবাদতের পূর্ণাঙ্গ গুরুত্ব বোঝাতে হাদিসে এসেছে—‘হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত রমজান মাসের একটি রোজাভঙ্গ করবে, সে আজীবন সে-ই রোজা (ক্ষতিপূরণ) আদায় করতে পারবে না। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৬ষ্ঠ খণ্ড ১৩১ পৃষ্ঠা, হাদিস : ১০০৪৭)।

রমজান মাসের এ রোজাগুলো মুমিন ব্যক্তিকে যাবতীয় ত্রুটি থেকে মুক্ত হয়ে রাখা বাঞ্ছনীয়। মহানবী (সা.) হাদিসে এ বিষয়ে ইরশাদ করেন। সুনানে নাসাঈ ও ইবনে খুযাইমা’র যৌথ বর্ণনায় এসেছে- ‘হজরত আবু উবায়দা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাওম (রোজা) ঢালস্বরূপ যতক্ষণ পর্যন্ত সে তা ভেঙ্গে না ফেলে, আর তা হলো- মিথ্যা ও গিবত (বলা দ্বারা)। (সুনানে নাসাঈ ২২৩৫, সহিহ ইবনে খুযাইমা ১৮৯২)।

আল্লাহর পূর্ণ আদেশ পালন, রাসুল (সা.)-এর দেখানো পথ অনুসরণের মাধ্যমে রমজান মাসের রোজাদারকে আল্লাহ তায়ালা যেভাবে সহযোগিতা করবেন, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ‘রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত লাভের এবং তৃতীয় ১০ দিন জাহান্নাম থেকে নাজাত প্রাপ্তির।’ (কানযুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড ৪৬৩ পৃষ্ঠা, হাদিস : ২৩৬৬৮)। হাদিস অনুযায়ী রমজান শুরু হওয়ার দিন থেকে অর্থাৎ প্রথম দশ দিনের প্রথম রোজা রাখার সাথে সাথে পেছনের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। হাদিসের ভাষায়- ‘হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুজুর (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন কেউ রমজানের প্রথম দিন রোজা রাখে তখন তার পূর্বেকার সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। এমনিভাবে রমজান মাসের সমস্ত দিন চলতে থাকে এবং প্রতি দিন তার জন্য সত্তর হাজার ফেরেশতা সকালের নামাজ থেকে শুরু করে তাদের পর্দার অন্তরালে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তার ক্ষমার জন্য দোয়া করতে থাকে।’ (কানযুল উম্মাল, ৮ম খণ্ড ৪৭১ পৃষ্ঠা, হাদিস : ২৩৭০৬)।

রোজাদার যেন একাগ্রচিত্তে মহান প্রভুর ইবাদত করতে পারেন সেজন্য রমজানের প্রথম রাতেই অর্থাৎ প্রথম দশকে শয়তানকে বন্দি করা হয়। জান্নাতের শীতল বাতাস প্রবাহের মাধ্যমে রহমত স্বরূপ রোজাদাররা প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে কোনও রোজাই তার জন্য কষ্টসাধ্য মনে হয় না। হাদিসের ভাষায়- ‘হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন যে, রমজানের প্রথম রাতে শয়তান ও অবাধ্য জিনগুলোকে বন্দি করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়। কোনও দরজা খোলা রাখা হয় না। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। কোনও দরজা বন্ধ রাখা হয় না।’ (জামে আত-তিরমিজি, হাদিস : ৬৮২)।

আল্লাহকে পাওয়ার সাধনা পুরোদমে শুরু করতে হবে প্রথম থেকেই। যথাযথ হক আদায় করে রোজা পালন করবো—রমজানে এই প্রতিজ্ঞা হোক আমাদের।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION