শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৮:৩৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রোজার ফজিলত বর্ণনায় অতিরঞ্জন নয়

মুফতি আমিনুর রহমান হাসান:
বছর ঘুরে আবারও আমাদের মাঝে আসছে পবিত্র মাহে রমজান। এটা আমাদের জন্য অনেক সৌভাগ্যের। তবে রমজানের হক আদায় না করলে এটা হবে কঠিন দুর্ভাগ্যের কারণ। এ প্রসঙ্গে হাদিসে এসেছে, ‘যে তিন ব্যক্তির ওপর নবীজির অভিশাপ রয়েছে, তাদের একজন হলো যে রমজান মাস পেয়েও তার গোনাহ মাফ করাতে পারল না।’ মিশকাতুল মাসাবিহ

রমজানের শুরু অর্থাৎ প্রথম রমজান থেকে একশ্রেণির লোককে প্রচার করতে দেখা যায়, প্রথম রমজানে রোজাদারকে নবজাতকের মতো মাফ করে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় রমজানে রোজাদারের মা-বাবাকে মাফ করা হয়। এভাবে রোজা শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকদিন আলাদা বিভিন্ন ফজিলত বর্ণনা করা হচ্ছে। অথচ এসব ফজিলতের কথা কোরআন-হাদিসের কোথাও বলা হয়নি, এসবের কোনো ভিত্তিও নেই। তার পরও আমরা এগুলো অনেকেই বিশ্বাস করি, সওয়াবের বিষয় মনে করে প্রচার করি, বর্ণনা করি অন্যদের কাছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোরআন-হাদিসে যাচাই-বাছাইহীন কোনো সংবাদ গ্রহণ করতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ ঘোষণা করেন, ‘হে মুমিনরা! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ আনে, তবে তোমরা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিতে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হও।’ সুরা হুজুরাত : ৬

এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কারও মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে যাচাই-বাছাই ছাড়াই অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে।’ মুসলিম

অন্য হাদিসে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর স্বীয় পিতা যুবাইর ইবনুল আওয়াম থেকে বর্ণনা করেন, ‘আমি হজরত রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে আমার ওপর মিথ্যারোপ করে সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নাম বানিয়ে নেয়। সুনানে আবু দাউদ

শুধু রমজানের ফজিলতের ক্ষেত্রে নয়, ধর্মের নানা বিষয় নিয়ে অনেককেই দেখা যায়, যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিভিন্ন বিষয় যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন, প্রচার করছেন। কেউ একটা কিছু বলার পর সেটা সঠিক কি না কিংবা কথাটার কোনো ভিত্তি আছে কি না তা জানার আগেই প্রচার করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রয়োজনে আলেম-উলামার শরণাপন্ন হয়ে, তাদের কাছে জেনে প্রচার করা।

সাহাবিরা হজরত রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে সরাসরি অনেক হাদিস শুনেছেন। কিন্তু তারা হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করবেন। বিশেষ করে হজরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) তো ‘কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার ওপর মিথ্যারোপ করে, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে বানিয়ে নেয়’ এই হাদিসের ভয়ে অনেক জানা হাদিস বর্ণনা করতে ভয় পেতেন। আর আমরা কোনো জায়গায় কোনো একটা কথা পেলেই কার আগে কে শেয়ার করবে এটা নিয়ে উঠেপড়ে লেগে যাই, যা ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহতায়ালা আমাদের ভিত্তিহীন বিষয় বর্ণনা করা থেকে হেফাজত করুন এবং রমজানের হক সঠিকভাবে আদায়ের মাধ্যমে তার সন্তুষ্টি অর্জনের তওফিক দান করুন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION