বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৬ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

লাগামহীন বাজার: এবার ইফতারসামগ্রী কম কিনছে মানুষ

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

আগের বছরের তুলনায় এ বছর ইফতারসামগ্রীর বেচাকেনা কম হচ্ছে। ইফতারে যে পণ্যগুলো না কিনলেই নয় সেগুলোও পরিমাণে কম কিনে চলার চেষ্টা করছে নগরবাসী। ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিরা বলছেন, সরকারকে এখনই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে হবে। তা না হলে সংকট আরো বাড়বে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্যমূল্য মনিটরিং সেলের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় গত রমজানের তুলনায় এবার ভোগ্য পণ্যের চাহিদা ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম থাকবে। তবে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের দাবি—বিক্রি প্রায় অর্ধেক কমে গেছে, যার প্রমাণও মিলেছে ক্রেতাদের মুখে। গত রোজার শুরুতে যারা চার-পাঁচ কেজি মুড়ি, খেজুর, ছোলা কিনেছিল, তারাই এবার দেড় থেকে দুই কেজি করে এসব পণ্য কিনছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হচ্ছে খেজুর, চিড়া ও মুড়ি। এ ছাড়া ছোলা, ডাল, বেসন, আটা ও ময়দা খুব বেশি বিক্রি হচ্ছে না।

কারওয়ান বাজারের বেশ কয়েকজন পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। শুধু চিড়া, মুড়ি ও খেজুর বিক্রয় নিয়ে বিক্রেতারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তবে ছোলা, আটা, ময়দা, বেসন ও ডাল বিক্রেতারা বলেছেন, গত বছরের রোজার দুই-তিন দিন আগে থেকেই যেভাবে পণ্য বিক্রি হতো এবার তা হচ্ছে না। ঢিমেতালে সময় যাচ্ছে।’

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কেজি প্রতি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেজুর ১২০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, চিড়া ৭০ টাকা, মুড়ি ৮০ থেকে ১২০ টাকা, ইসবগুলের ভুসি এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৩৫০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৬৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা ও বেসন ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে এলাকাভেদে দামে কিছুটা তারতম্য দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী সারোয়ার হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘রোজার আগের এই সময়ে কেনাবেচায় মাথা নষ্ট হয়ে যেত; কিন্তু দেখেন দোকানে কোনো লোকই নেই। মানুষের হাতের অবস্থা খুবই খারাপ। পাবলিকের কাছে টাকা আছে কি না সন্দেহ। সরকারের পক্ষ থেকে টিসিবির মাধ্যমে কম দামে পণ্য দিচ্ছে। বাজারে সে প্রভাবও আছে।’

একই বাজারের আরেক ব্যবসায়ী কামরুল হাসান পিন্টু বলেন, ‘গত রোজায় এই সময়ে আড়াই থেকে তিন হাজার কেজি চিড়া-মুড়ি বিক্রি করেছি; কিন্তু এবার এক হাজার কেজি বিক্রি করাই কঠিন হয়ে গেছে।’

স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ইফতারসামগ্রী কিনতে গ্রিন রোড থেকে এসেছেন অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আবুল বাসার তালুকদার। তিনি বলেন, ‘এক কেজি করে চিড়া ও মুড়ি নিলাম। গতবার চার কেজি করে কিনেছিলাম। জিনিসের দাম বেশি। আগে সপ্তাহে দুই-আড়াই কেজি মুরগি কিনতাম। এখন সেটা দিয়ে দুই সপ্তাহ চালাতে হবে। যা না কিনলেই নয় শুধু সেটাই কিনছি। ব্যয় কাটছাঁট করতে হবে।’

গোলাম মাহমুদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ‘আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারে আয়ের সঙ্গে ব্যয় কখনোই সামঞ্জস্য করতে পারি না। সব জায়গায় ব্যয় দেড় গুণ বেশি হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোনোটা কম কিনে চলতে হচ্ছে। কাপড় কিছুটা কম কিনছি।’

এ বিষয়ে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) প্রেসিডেন্ট গোলাম রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের ক্রয়ক্ষমতা সাংঘাতিকভাবে কমে গেছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। মানুষ সংকটে আছে। এটা থেকে আমরা কিভাবে বের হয়ে আসব, সেটা আল্লাহই জানেন। মানুষের জীবনে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সামনে এই সংকট মানুষের জীবনে আরো ঘনীভূত হবে বলে মনে করছি।’

সম্প্রতি বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানায়, জিনিসপত্রের দাম বা মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখীর কারণে মানুষ কম খাচ্ছে। অনেকেই খাদ্য ব্যয় কমাতে প্রতিদিনের তালিকা থেকে মাছ-মাংস বাদ দিচ্ছে। রাজধানীতে চার সদস্যের একটি পরিবারের এক মাসে খাবারের পেছনে গড়ে খরচ হয় ২৩ হাজার ৬৭৬ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে যে হারে পণ্যের দাম বাড়ছে, তার চেয়ে বেশি হারে বাংলাদেশে পণ্যের দাম বাড়ছে। সূত্র:কালেরকণ্ঠ।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION