শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
১০ কৃষক অপহরণ মামলার আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলু গ্রেফতার নৌকা তল্লাশি করে ৩০ হাজার ইয়াবাসহ নৌকা জব্দ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে যা জানালেন প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামের জব্বারের বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন বাঘা শরীফ দুর্নীতি: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে চুক্তি ১৪ লাখ টাকায়, ঢাবি শিক্ষার্থীসহ গ্রেপ্তার ৫ দুই মেধাবী শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে ঘিরে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ , অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা চুয়েট যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ হওয়া উচিত : প্রধানমন্ত্রী দৌলতদিয়ায় শুটিং করাটা জীবনের বিচিত্র অভিজ্ঞতা আরও ৩ দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি কক্সবাজার থেকে বিজিপির ২৮৮ সদস্যকে মিয়ানমারে ফেরত

লাল কাঁকড়া বিচ: পর্যটকদের নজর কাড়ছে

আবদুল আজিজ:
কক্সবাজারের নতুন পর্যটন স্পট বাইল্যাখালী কাঁকড়া বিচ। ইতিমধ্যে কাঁকড়া বিচটি পর্যটকদের নজর কেড়েছে। সৈকতে ভাটার পর চিকচিক বালিয়ালিতে নিজের তৈরি করা বাসা থেকে বেরিয়ে ছোটাছুটি এবং পা দিয়ে নানান আকৃতির আলপনা তৈরী। যা নিমিষেই পযটকদের নতুন করে আকর্ষণ বাড়িয়েছে এই কাঁকড়া বিচ। এ কারণে ওই এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করে কাঁকড়া বিচ নাম দিয়েছে উখিয়া উপজেলা প্রশাসন

কক্সবাজার শহরে থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে কাঁকড়া বিচ। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের বাইল্যাখালী এলাকায় অবস্থিত। সৈকতের অন্যান্য এলাকা চেয়ে ওই এলাকায় লাল কাঁকড়া বিচরণ দেখে তা সংরক্ষণে এগিয়ে আসেন উখিয়া উপজেলা প্রশাসন। প্রায় ১ কিলোমিটার সৈকত এলাকাকে সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে নাম দেয়া হয় ‘কাঁকড়া বিচ’। বাঁশ ও কাঠের অস্থায়ী সীমানা প্রাচীর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে উক্ত সৈকতকে। ফলে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে লাল কাঁকড়ার সংখ্যা। প্রতিদিন জোয়ারের পর ভাটায় বালুচর থেকে পানি নেমে গেলে পুরো সৈকত লাল বর্ণ ধারণ করে। এতে মেরিন ড্রাইভ সড়ক থেকেই লাল কাঁকড়ার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়।

স্থানীয়রা বলছেন, উখিয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উক্ত এলাকাকে সংরক্ষিত ঘোষনা করে কাঁকড়া বিচ ঘোষনার পর থেকে লাল কাঁকড়ার বিচরণ বেশী দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন চরের বুকে সকাল-বিকাল দলবেঁধে ঘুরে বেড়াচ্ছে লাল কাঁকড়া। মানুষের স্পর্শ পেলে নিরাপদ আশ্রয়ে গর্তে উকি দিচ্ছে, আবার গর্ত থেকে বেরিয়ে তীক্ষ্ণ নখের ওপর ভর করে উঁচিয়ে থাকে দু’টি শিং। টকটকে লাল কাঁকড়াগুলো দেখে ভ্রমনের আলাদা তৃপ্তি পাচ্ছে পর্যটকরা। এ যেন অন্যরকম এক অনুভূতি। এতে করে পর্যটকদের জন্য নতুন করে সৌন্দর্য্য বর্ধিত স্থান ছাড়াও পর্যটন শিল্পে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।

উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা ও উখিয়া উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়ছার কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের বাইল্যাখালী এলাকায় লাল কাকড়া সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। এটি পর্যটন শিল্পে নতুনমাত্রা যোগ হওয়ার পাশাপাশি পর্যটনশিল্পে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এজন্য বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক রাজনৈতিক ও পেশাজীবি সংগঠন এগিয়ে আসা দরকার। সম্পুর্ন ইকো সিস্টেমে বাঁশ ও কাট দিয়ে সীমানা প্রাচীরের মাধ্যমে জন চলাচল সীমিত করে জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্যেগটি বাস্তবায়ন হলে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে।

উখিয়ার বাইল্যাখালী গ্রামের ষাটোর্ধ আবু সৈয়দ কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘বাইল্যাখালী এই সৈকতে প্রতিনিয়ত মোটর বাইক ও বিভিন্ন যানবাহনের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে লাল কাঁকড়া। প্রতিদিন গাড়ীর চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা পড়ছে অসংখ্য লাল কাঁকড়া। একারণে প্রশাসন সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়ায় পর্যটকদের জন্য একটি নতুন জায়গা তৈরী হলো।’

কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ.ন.ম. হেলাল উদ্দিন কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘সৈকতের পরিবেশ-প্রতিবেশ ঠিক রেখে এধরণের লাল কাঁকড়া সংরক্ষণের উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। বাইল্যাখালী কাঁকড়া বিচ নি:সন্দেহে পর্যটকদের বাড়তি আনন্দ দিবে। প্রধানমন্ত্রীও লাল কাঁকড়া সংরক্ষণের ঘোষনা দিয়েছেন। এছাড়াও উক্ত এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করেছেন। তার এই ব্যাতিক্রমি উদ্যোগটা ইকো ট্যুরিজম সিস্টেমে সম্পুর্ন পরিবেশ সম্মত ভাবে করা হয়েছে। যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি হয়নি বরং পর্যটক আকর্ষণে একটা ভিন্ন মাত্র যোগ হয়েছে।’

কক্সবাজার সৈকতে লাল কাঁকড়ার এই সৌন্দর্য্য অন্য কোথাও নেই উল্লেখ করে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজিব কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘লাল কাঁকড়া বিচটি পর্যটকদের জন্য খুবই স্পেশাল। প্রতিদিন বাইক থেকে শুরু করে নানা কারণে হুমকির মুখে থাকা লাল কাঁকড়াকে সংরক্ষণ করা জরুরী। একারণে বাঁশের বেড়া দিয়ে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়।’

ইমরান হোসাইন সজিব কক্সবাজার ভয়েসকে আরও বলেন, ‘এখানে বানিজ্যিক কোন উদ্দেশ্য নেই। সম্পুর্ন ইকো সিস্টেমে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে সীমানা প্রাচীর দিয়ে জীব বৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি। তাতে কিছু অসাধু ব্যক্তি আমার এ উদ্যোগটাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে পরিবেশ ধংসের ধোঁয়া তুলেছে।এটি গুগল চার্চের মাধ্যমে দেখে লাল কাঁকড়া সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছি, যা পর্যটকদের আরও বেশি আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করেছি।’

শুধু বাইল্যাখালী সৈকত নয়, কক্সবাজারের ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে সামুদ্রিক প্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণে এগিয়ে আসার দাবি স্থানীয়দের।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION