বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা জ্যামাইকা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিল ফিলিস্তিনকে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা:ওবায়দুল কাদের গরম সহ্য করতে না পেরে হিটস্ট্রোকে চার মৃত্যু ২৪ ঘণ্টা ব্যবধানে আবারও কমলো সোনার দাম চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি বিনিয়োগ আসলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে-বন্দর চেয়ারম্যান  দেশে ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশী: কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন স্বজনরা কক্সবাজার – চট্টগ্রাম রেলপথে স্পেশাল ট্রেন  লাইনচ্যুত আজ মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরছেন দেড় শতাধিক বাংলাদেশি তীব্র গরমেও কক্সবাজারে বেড়েছে পর্যটক

সাহরিতে সতর্কতা

মাওলানা আবদুল জাব্বার:
সাহরি রোজার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সাহরির মাধ্যমে রোজার সূচনা হয়। তাই সাহরি সুন্নত পদ্ধতিতে করা আবশ্যক। কিন্তু মানবিক প্রবৃত্তি, ভুল ধারণা ও স্থানীয় প্রচলনের কারণে মানুষ কিছু ভুল করে থাকে, যা পরিহার করতে পারলে রোজাগুলো অনেক বেশি সুন্দর হবে।

সাহরি না করা : ঘরে খাবার থাকার পরও পানি বা অন্য কিছু দিয়ে নামমাত্র সাহরি করা। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহরি করার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের ও অন্যান্য কিতাবের অধিকারী জাতির (ইহুদি ও খ্রিস্টান) রোজার পার্থক্য সাহরি খাওয়া।’ সহ্হি মুসলিম : ২৪৪০

শেষ মুহূর্তে সাহরি খাওয়া : অর্ধ রাতের আগে বা আজানের আগমুহূর্তে সাহরি খাওয়া উভয়টিই সুন্নতের পরিপন্থী। কেননা হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সাহরি বিলম্বে গ্রহণ করো।’তিবরানি

বোখারিতে আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সাহরি ও নামাজের মধ্যে পঞ্চাশ আয়াত তেলাওয়াত পরিমাণ সময় অবশিষ্ট থাকত। আধুনিক যুগের ফকিহদের মতে, পঞ্চাশ আয়াত তারতিল তথা যথানিয়মে ধীরস্থিরভাবে তেলাওয়াত করতে বিশ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।

আজান শোনার পরও খেতে থাকা : রোজা একটি ফরজ ইবাদত, তাই তাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা কাম্য। সুতরাং আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে খাবার পরিহার করতে হবে।

সাহরিতে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ : সাহরিতে অধিক খাবার গ্রহণ বান্দাকে রোজার কল্যাণ থেকে বঞ্চিত করে দেয়। যেমন শরীরে আলস্য তৈরি করে। ফলে ইবাদতমুখী হতে পারে না, জৈবিক চাহিদা বৃদ্ধি পায়, অনাহারী মানুষের কষ্ট অনুভব করা যায় না।

আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেছেন, মানুষ স্বাভাবিক ক্ষুধায় যতটুকু খাবার গ্রহণ করে, সাহরিতে সেই পরিমাণ খাওয়া মোস্তাহাব। অর্থাৎ খুব বেশি বা কম নয়; বরং মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা। মাজমাউল উলুমি ওয়াল হিকাম খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে শুয়ে পড়া : এটা সুন্নতের পরিপন্থী এবং স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। অন্তত মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায় করা উচিত। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসে ফজরের নামাজ আদায় করে মসজিদে ইবাদত করতেন, সাহাবিদের দ্বীন শেখাতেন। সূর্যোদয়ের পর ইশরাকের নামাজ আদায় করে ঘরে ফিরতেন।

সাহরির সময় নিয়ে সতর্কতা

রোজার জন্য সাহরি খাওয়া মুস্তাহাব। তবে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত সাহরি খায় না সে গোনাহগার নয়। আর এ কারণেই যদি কেউ ফজরের পর জাগে এবং সাহরি খাওয়ার সময় না পায়, তাহলে তার জন্য রোজা রাখা জরুরি। এতে তার রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহরি খাওয়ার জন্য তার উম্মতকে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করেছেন। তিনি সাহরিকে বরকতময় খাদ্য বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘তোমরা সাহরি খাও। কেননা সাহরিতে বরকত আছে।’ সহ্হি বোখারি : ১৮২৩

অন্য হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরি খাওয়া।’ সহ্হি মুসলিম : ১০৯৬

সাহরি খাওয়ার সময় হলো অর্ধরাত্রির পর থেকে সুবহে সাদিক বা ফজরের আগ পর্যন্ত। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘… আর তোমরা পানাহার করো যতক্ষণ রাতের কৃষ্ণরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয় …।’ সুরা বাকারা : ১৮৭

আর মুস্তাহাব হলো, শেষ সময়ে সাহরি খাওয়া। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত জায়দ বিন সাবেত (রা.) তাকে জানিয়েছেন, তারা নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে সাহরি খেয়ে (ফজরের) নামাজ পড়তে উঠে গেছেন। হজরত আনাস (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘সাহরি খাওয়া ও আজান হওয়ার মধ্যে কতটুকু সময় ছিল?’ হজরত জবাবে জায়দ (রা.) বলেন, ‘৫০ অথবা ৬০ আয়াত পড়তে যতটুকু লাগে।’ সহ্হি বোখারি : ৫৭৫, ১৯২১

এখানে আয়াত বলতে মধ্যম ধরনের আয়াত গণ্য হবে। আর এই শ্রেণির ৫০/৬০টি আয়াত পড়তে মোটামুটি ১৫/২০ মিনিট সময় লাগে। অতএব সুন্নত হলো, আজানের ১৫/২০ মিনিট আগে সাহরি খাওয়া।

রোজার নিয়ত কী ও কীভাবে

রোজা পালনে সাহরি ও ইফতার গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি রোজার নিয়তও জরুরি। তবে এই ক্ষেত্রে রোজা রাখার উদ্দেশে ঘুম থেকে ওঠা ও সাহরি খাওয়াটাই রোজার নিয়তের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুত মনের ইচ্ছাই হলো নিয়ত। নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। তাই কেউ মুখে নিয়ত না করলেও তার রোজাগুলো আদায় হয়ে যাবে। আল বাহরুর রায়েক : ২/৪৫২

রোজার প্রচলিত নিয়ত

বাংলাদেশে রোজার একটি আরবি নিয়ত প্রসিদ্ধ- যেটা মানুষ মুখে পড়ে থাকেন। তবে এটি হাদিস ও ফিকাহের কোনো কিতাবে বর্ণিত হয়নি। তবে কেউ চাইলে পড়তে পারেন। (তবে জেনে রাখা উচিত যে, নিয়ত পড়ার চেয়ে নিয়ত করা গুরুত্বপূর্ণ।)

উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমজানাল মুবারাকি; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোজা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION