ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
চালের বাজার এখনও শান্ত হয়নি। এরইমধ্যে অশান্ত ভোজ্য তেলের দাম। অনেকেই বলছেন, শীত চলে যাচ্ছে, গরম আসতে শুরু করছে। নিত্যপণ্যের বাজারও ধীরে ধীরে গরম হচ্ছে। যদিও করোনায় আয় কমে যাওয়ার কারণে মানুষ অতি প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যয় কমিয়ে এনেছে।
শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম এখন (এক লিটার) ১৪০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে। কয়েক মাস আগে এই তেলের দাম ছিল ১০৫ টাকা। গত সপ্তাহে ৬০০ টাকায় বিক্রি হওয়া ৫ লিটারের বোতলের দাম রাখা হচ্ছে ৬২০ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ লিটার বোতলের দাম বেড়েছে ২০ টাকা। তবে ৫ লিটার রূপচাঁদা বিক্রি হচ্ছে ৬৮৫ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ ও ব্রয়লার মুরগি। দীর্ঘদিন ধরে দাম না বাড়ার তালিকায় থাকা আটা-ময়দার দামও এবার বেড়েছে। মসুর ডাল ও অ্যাংকর ডালের দামও কিছুটা বেড়েছে। শুধু তা-ই নয়, সবজির বাজারও ধীরে ধীরে গরম হচ্ছে। সব মিলিয়ে নিত্যপণ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
রাজধানীর গোপীবাগ এলাকার বাসিন্দা আবু হানিফ বলেন, ‘শীত চলে যাচ্ছে, যেন তার সঙ্গে পণ্যের বাজারও গরম হতে শুরু করেছে। চালের বাজার গরম অবস্থায় রয়েছে দুই মাস ধরে। এর সঙ্গে ধীরে ধীরে অন্যান্য পণ্যের দামও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তার মতে, চাল ও সয়াবিন তেলের দাম অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। সবজির দামও ধীরে ধীরে বাড়ছে। এছাড়া আটা, ময়দা, পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও ডাল কিনতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।’
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত দুই সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সয়াবিনের দাম। এক লিটার রূপচাঁদা বোতলজাত সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) এখন ১৪০ টাকা। যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে ফ্রেশ ও তীর ব্র্যান্ডের এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের এমআরপি এখন ১৩৫ টাকা এবং পুষ্টি ও বসুন্ধরা ব্র্যান্ডের দাম এখন ১৩০ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলের গায়ে লেখা রয়েছে রূপচাঁদার তেলের দাম ৬৮৫, ফ্রেশ, তীর ও পুষ্টির দাম ৬৫৫ এবং বসুন্ধরার দাম ৬৫০ টাকা। তবে ক্রেতারা এর চেয়ে একটু কম দামে কেনেন। ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুধু বোতলজাত সয়াবিন তেলই নয়, খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও ব্যাপক চড়া। কাওরান বাজারে ১১২-১১৫ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে। আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ১০২-১০৫ টাকা দরে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, গত বছরের এ সময়ের তুলনায় সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৯-২৬ শতাংশ বেশি।
আর দুই মাস পরেই রমজান। বিষয়টি মাথায় রেখে বাজারে ভোজ্য তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান পুরান ঢাকার মৌলভীবাজারের ব্যবসায়ী হাজী গোলাম মাওলা।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশের বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়লেও সরবরাহও আগের চেয়ে কমেছে। আগে দেশে ছয়টি মিল ভোজ্য তেল সরবরাহ করতো। এখন তিনটি দিতে পারছে না। তাই সরকারের উচিত হবে এখনই বড় উদ্যোগ নেওয়া।
এদিকে দাম বাড়ার তালিকায় এরপরই রয়েছে দেশি পেঁয়াজ। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এই পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৯ শতাংশ। অর্থাৎ আগের সপ্তাহে ২৮ টাকা কেজি পেঁয়াজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৪০ টাকা দরে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজ আসা কমে যাচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে।
গত সপ্তাহে যে খোলা আটা ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, সেই খোলা আটা এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২ টাকা দরে। টিসিবির হিসেবে, গত এক সপ্তাহে খোলা আটার দাম বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ। প্যাকেট আটার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৬ শতাংশের মতো। রসুনের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশের মতো। হলুদের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ এবং আদার দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ।
বাজারে চিকন চালের কেজি এখন ৫৮ টাকা। মাঝারি মানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা। আর গরিবের মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজিতে।
গত সপ্তাহে ১০ টাকা কেজিতে নেমে আসা পাকা টমেটো আবার বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা। শিমের দামও কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ৩০ টাকায়। তবে প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকার মধ্যে। এছাড়া মুলা ১০-১৫ টাকা, গাজর ১৫-৩০ টাকা, বেগুন ১০-২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মানিকনগর এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আকবর আলী বলেন, শীতের সবজির সরবরাহ ভালো। তবে দাম একটু চড়া। পেঁয়াজ ও আলুর দাম আবারও বেড়েছে।
দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ব্রয়লার মুরগি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। ১৩০-১৪০ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে।সুত্র: বাংলা ট্রিবিউন।
ভয়েস / জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.