ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি মানানোর পাশাপাশি সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একইসঙ্গে অপরাধ দমনের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডও চলমান। একদিকে জনগণের মধ্যে সচেতনতাবোধ জাগিয়ে তোলা অন্যদিকে ল অর্ডার সিচুয়েশন ঠিক রাখতে গিয়ে প্রতিনিয়ত কর্মঘণ্টার বাইরে অতিরিক্ত ডিউটি করতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের।
আগে যেখানে ১২ ঘণ্টা এক শিফটে কাজ করে, ২৪ ঘণ্টার বিরতি পেতো এখন সেখানে ১২ ঘণ্টা কর্মঘণ্টার পর ১২ ঘণ্টা বিরতি দিয়ে আবার করতে হচ্ছে ডিউটি। ডিউটির শেষ সময়ে কোনও ধরনের ঘটনা ঘটলো তাহলে তো আরও রফাদফা শেষ। আবার অনেক সময় দিনে ডিউটি করে রাতেও মাঠে থাকতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। আর ট্রাফিক বিভাগেও বেড়েছে কর্মঘণ্টা। এতে অনেক সময় বিচ্যুতি ঘটছে ধৈর্যের, ঘটছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এছাড়া অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন করোনাভাইরাসসহ নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায়।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান লকডাউনকে কেন্দ্র করে বেড়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা। মাঠ পর্যায়ে যারা রয়েছেন তাদের প্রতিনিয়ত পেট্রোলিং, চেকপোস্ট পরিচালনা, অপরাধী সম্পর্কে সজাগ থাকা, অপরাধীদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করতে হয়। এতে একদিকে বেড়েছে কর্মঘণ্টা, কমেছে রেস্ট নেয়ার সময়, এছাড়া ছুটি না পাওয়ার আক্ষেপ তো রয়েছেই।
পুলিশ সূত্র বলছে, বাড়তি কর্মঘণ্টার কারণে এবং রেস্ট নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় না পাওয়ায় অনেক সময় পুলিশ সদস্যরা নিজেদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ঘটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। জনগণের চাপ এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চাপ এসব নিয়েই প্রতিনিয়ত মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যেতে হয় পুলিশ সদস্যদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ২৩ বছর চাকরি জীবনে হাতেগোনা তিন থেকে চারটি ঈদ গ্রামের বাড়ি পরিবারের সঙ্গে করতে পেরেছি। আর বাকিগুলো কেটেছে জনসেবায় জনগণের নিরাপত্তায় কাজ করে। পরিবারের সঙ্গে ঈদ না করার আক্ষেপ তো রয়েছেই তারপরও জনগণের সেবায় কাজ করতে পারা অন্যরকম একটি অনুভূতি জাগায়। এধরনের আক্ষেপ বাহিনীতে অনেক পুলিশ সদস্যর মধ্যে রয়েছে। তবে নিজেদের এসব বিষয়গুলো কেউ সেভাবে শেয়ার করতে চান না।
২০২০ সালের মার্চের পর থেকে সাধারণ ছুটি কিংবা লকডাউন শুরু হয়। মাঝে কিছুদিন শিথিল থাকলেও এখন রয়েছে সরকার নির্দেশিত লকডাউন। থানা পুলিশ থেকে ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও মাঠে রয়েছে র্যাব সদস্যরাও। লকডাউনকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পরিচালিত হচ্ছে চেকপোস্ট। সকাল থেকে রাত অবধি রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে পুলিশ সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন শতাধিক পুলিশ সদস্য। এ তালিকায় কনস্টেবল থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
পুলিশ সদর দফতরের গণমাধ্যম শাখার এআইজি সোহেল রানা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, পেশাগত বৈচিত্র্যের কারণে পুলিশের চাকরিতে দায়িত্ব পালনে নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক চাপ নিতে হয়। করোনাকালে সার্বিকভাবে এই চাপ অনেকাংশেই বৃদ্ধি পেয়েছে। তারপরও পুলিশ সদস্যরা জনকল্যাণে তাদের সেরাটি দিয়ে যাচ্ছেন। করোনায় আক্রান্ত হওয়া ছাড়াও দায়িত্ব পালনকালে আহত ও অসুস্থ হচ্ছেন যারা, তাদের সকলের উপযুক্ত চিকিৎসা সেবার বিষয়টি মাথায় রেখে আইজিপি’র ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে সেবার মানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
ভয়েস/ জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.