খেলাধুলা ডেস্ক:
প্রশ্ন কমন ছিল না। ইংলিশরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু প্রস্তুতি ছিল বেশ। হাথুরুসিংহে-সাকিব জুটির ছক কাটা পরিকল্পনা। তাইতো পরীক্ষায় বসতেই ঝটপট উত্তরে মেলে স্বস্তি। ফলাফলটাও অসাধারণ। লেটার মার্কস নয়। পুরো একশোতে একশ’।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের কঠিন পরীক্ষা দিতে হতো তা সবারই জানা ছিল। ইংল্যান্ডও সেভাবে নিজেদের গুছিয়ে এনেছিল। কিন্তু নিজেদের মাঠে পরাশক্তি হয়ে উঠা বাংলাদেশের সামনে কোনো পরীক্ষাই যেন বাধা হতে পারে না। ইংলিশদের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে আরও একবার বাংলাদেশ প্রমাণ করলো ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সত্যিই টাইগার।
এক ম্যাচ হাতে রেখে রোববারই সিরিজ নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। ক্রিকেটে এই একটি দলের বিপক্ষেই বাংলাদেশের কোনো ফরম্যাটে কোনো সিরিজ জয়ের রেকর্ড ছিল না। দ্বিতীয় ম্যাচে সেই চক্র পূরণ হয়। শেষ ম্যাচ হয়ে উঠেছিল ইংল্যান্ডের মান বাঁচানোর, বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি। মিরপুর হোম অব ক্রিকেটে প্রায় ২০ হাজার দর্শকদের হতাশ করেনি সাকিব অ্যান্ড কোং। শেষ টি-টোয়েন্টিতে অতিথিদের ১৬ রানে হারিয়ে ইংলিশ পরীক্ষায় একশোতে একশ’ মার্ক তুলেছে বাংলাদেশ।
সিরিজ জয়ের প্রাপ্তির সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর সিরিজ সেরা নির্বাচিত হওয়া গোটা দলকে অন্যরকম এক আনন্দে ভাসিয়েছে। এই ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে কেবল টসটাই আসেনি। বাটলার প্রথমবারের মতো সফরে জেতেন টস। বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ১৫৮ রানে আটকে রাখে তারা। জবাবে জয়ের দিকে এগোতে থাকা ইংল্যান্ড হঠাৎ পথ ভুলে আটকে যায় ১৪২ রানে।
এই সিরিজে অংশগ্রহণের আগে গত নভেম্বরেই ইংল্যান্ড জিতেছিল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। অথচ সেই দলটাকে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে নাস্তানাবুদ করলো হোয়াইটওয়াশ করে। বাংলাদেশের জয়ের নায়ক লিটন দাশ। ওপেনিংয়ে এ ব্যাটসম্যান ৫৭ বলে ৭৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেন। ১০ চার ও ১ ছক্কায় সাজান তার ইনিংসটি। তাকে উদ্বোধনী জুটিতে সঙ্গ দেওয়া রনি তালুকদার ২২ বলে করে ২৪ রান।
৫৫ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর রান ফোয়ারায় থাকা শান্তকে নিয়ে বড় কিছুর পথে এগোতে থাকেন লিটন। কিন্তু ৫৮ বলে তাদের ৮৪ রানের জুটি শেষ দিকে এসে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে। তাতে ডেথ ওভারে ভুগতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে মাত্র ২৯ রান পায় স্বাগতিকরা। লিটনকে থামান ক্রিস জর্ডান। এরপর সাকিব এসে ৬ বলে করেন মাত্র ৪ রান। শান্ত ৩৬ বলে ৪৭ রান করলেও শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে ধার বাড়াতে পারেনি। বোলারা দারুণভাবে ফিরে এসে লক্ষ্য নাগালে রেখেছিল।
কিন্তু ব্যাটসম্যানরা শুরুতে ভালো করতে পারেননি। বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হওয়া তানভীর নিজের চতুর্থ বলে ফেরান ফিল সল্টকে। উদ্বোধনী জুটি প্রথম ওভারে ভাঙলেও বাংলাদেশের বোলারদের মুখের হাসি কেড়ে নেন বাটলার ও মালান। তাদের ৭৬ বলে ৯৫ রানের জুটিতে ১৩ ওভারে শতরানে পৌঁছে যায় তারা। কিন্তু এরপরই বাংলাদেশ ব্রেক থ্রু পায়। মালানকে ৫৩ রানে উইকেটের পেছনে তালুবন্দি করিয়ে মোস্তাফিজ টি-টোয়েন্টিতে শততম উইকেটের স্বাদ নেন। এরপর মিরাজের সরাসরি থ্রোতে রান আউট বাটলার। যা ম্যাচের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট। ৪০ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক। এরপর তাসকিন বেন ডাকেটকে বোল্ড করলে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে ব্রেক পড়ে।
সেখান থেকে মঈন আলী, স্যাম কারানরা আর ফিরে আসতে পারেননি। লক্ষ্য ক্রমাগত দূর থেকে দূরে চলে যায়। ২৬ রানে ২ উইকেট তাসকিন বাংলাদেশের সেরা বোলার। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন কোনো দলের বিপক্ষে সিরিজ জয় এমনিতেই আনন্দের। সেখানে হোয়াইটওয়াশ করার আনন্দ দ্বিগুণ। ইংলিশদের পরীক্ষায় একশোতে একশ’ পেয়ে উড়ছে বাংলাদেশ। ক্রিকেটের সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে এমন উৎসব সব সময় আসে না। সেই উৎসবেই মজেছে গোটা বাংলাদেশ।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.