আবু বকর আরাফাত:
স্বভাবগতভাবে বিপদাপদে পরস্পরে আমরা একে অপরের সঙ্গী। আল্লাহ প্রদত্ত বিত্তবৈভবে বিত্তবানরা যদি অভাবগ্রস্তদের সহযোগিতা না করে, তাহলে আমরা তাদের কিছুটা নিচু দৃষ্টিতে দেখি। আর আল্লাহতায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন তার আনুগত্য করার জন্য। তার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করত পরিপূর্ণরূপে তার সন্তুষ্টি অর্জনে আমাদের জীবনযাপনকে আবদ্ধ করার জন্য। সুতরাং কারও বিপদ-আপদে কিংবা কোনো অভাবগ্রস্তকে সহযোগিতা করার নামই হলো দানশীলতা।
দানশীলতা সর্বপ্রকার সৎকর্মের শ্রেষ্ঠ বদান্যতা। মুমিনদের শ্রেষ্ঠ গুণাবলী। নশ্বর ও ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে ধনদৌলতের মূল্যই বা কতটুকু! হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দাতা ও সর্বাধিক সাহসী। ঘামের ফলশ্রুতিতে অর্জিত সম্পদ অন্যের সহযোগিতায় দিয়ে দেওয়া খুবই সাহসিকতা পূর্ণ একটি কাজ। দানশীল ব্যক্তিকে ভক্তির সঙ্গে সকলেই বরণ করে নেয়। মানুষ তাকে উঁচু দৃষ্টিতে দেখতে থাকে। তার সঙ্গে কথোপকথনকে নিজেদের জন্য সৌভাগ্য মনে করে। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যে সম্পদই তোমরা খরচ করো, তা তোমাদের নিজেদের কল্যাণেই। আর তোমরা তো আল্লাহর সন্তুষ্টির অন্বেষণ না করে কিছুই ব্যয় করো না। যা কিছুই তোমরা ব্যয় করো, তোমাদের এর প্রতিফল পূর্ণরূপে দেওয়া হবে এবং তোমাদের জুলুম করা হবে না।’ সুরা বাকারা : ২৭২
দানশীলতার একটি মোক্ষম সময় হলো যৌবনকাল। যৌবনকালকে দানশীলতার উপযুক্ত সময় মনে করতে হবে। কাউকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে তাকে কোনোরকম কষ্ট দেওয়া যাবে না। কারণ কোরআন মজিদের সতর্কবাণী হলো ‘হে মুমিনগণ, তোমরা খোঁটা ও কষ্ট দেওয়ার মাধ্যমে তোমাদের সদকা বাতিল করো না। ওই ব্যক্তির মতো, যে তার সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে এবং বিশ্বাস করে না আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি।’ সুরা আল বাকারা : ২৬৪
অর্থ-সম্পদ ও বিত্তবৈভব ছাড়াও আল্লাহ প্রদত্ত যে শক্তি-সামর্থ্য শ্রম ও যোগ্যতা আল্লাহর বান্দাদের কল্যাণার্থে ব্যয় করা হবে, সব কিছুই দানের অন্তর্ভুক্ত। দানশীলতার প্রতি উৎসাহ দিয়ে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদাররা! আমি যা কিছু তোমাদের দান করেছি, তা থেকে ব্যয় করো, সেদিন (কেয়ামতের দিন) আসার আগে, যাতে না থাকবে কোনো বেচাকেনা, না কোনো বন্ধুর বন্ধুত্ব, আর না কারও কোনো সুপারিশ কাজে লাগবে।’ সুরা বাকারা : ২৫৪
দান কিংবা কাউকে সহযোগিতার ক্ষেত্রে অবশ্যই একনিষ্ঠ নিয়ত থাকতে হবে। অন্যথায় পুরো দান ব্যর্থ হয়ে যাবে। দানশীলতায় যাদের ইখলাস থাকবে না, তাদের দৃষ্টান্ত আল্লাহতায়ালা এভাবে দিয়েছেন, ‘যেন একটি স্বচ্ছ মসৃণ পাথর, এর ওপর সামান্য কিছু মাটি ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর ভারী বৃষ্টিপাতে সেই পাথরটি একেবারে পরিষ্কার হয়ে যায়। অর্থাৎ যারা নিজেদের সম্পদ ব্যয় করে লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে, তাদের এই দান মসৃণ পাথরের গায়ে সামান্য মাটির মতো, বৃষ্টির ঝাপটায় যা উধাও হয়ে যায়। আর তারা যা উপার্জন করেছে এর কোনো কিছুই তাদের অধিকারে থাকবে না। সুরা বাকারা : ২৬৪
সকল প্রকার কার্পণ্যতা দূর করে নিজেদের সম্পদকে মানবকল্যাণের সহযোগিতায় ব্যয় করার প্রত্যাশায় নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই পরস্পরে শান্তি-শৃঙ্খলা তৈরি হবে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.