এন.এ সাগর:
বসন্তের ছোঁয়া লেগেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নগরী কক্সবাজারে। প্রিয়জনের সঙ্গে প্রিয় কিছু মুহূর্ত কাটাতে সৈকতে ভিড় করেছেন অনেকে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে কক্সবাজার সৈকতে ঢল নেমেছে পর্যটকদের। বিশেষ দিবসগুলোতে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ায় খুশি পর্যটন সংশ্লিষ্ট
বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে সেরা পর্যটন নগরী কক্সবাজারে মানুষের ঢল নেমেছে। গত শুক্রবার থেকে কক্সবাজারে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ভ্রমণ পিপাসুদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো কক্সবাজার শহর। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে উত্তেজনায় যারা এতদিন আতঙ্কে ছিলেন তারাও একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে সব কিছু ভুলে পরিবার ও আপনজনদের নিয়ে বেড়াতে এসেছেন কক্সবাজারে। শান্তিপূর্ণভাবে আনন্দ উপভোগ করতে প্রশাসন কর্তৃক প্রচার চালানো হলেও পর্যটকেরা তা মানার ক্ষেতে ছিলেন উদাসীন।
গত বুধবার সকালে কক্সবাজারে দেখা যায়, পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের দর্শনীয় স্পটগুলো। সমুদ্রে নামতেই সাগরের ঢেউয়ের পানি এসে পরম আতিথেয়তায় পা ধুয়ে দিল। তারপর আস্তে আস্তে পানি আবার সমুদ্রের দিকে চলে গেল। আবার আসলো আবার চলে গেল। সমুদ্রের এই বিশালতায় মুগ্ধ হয়ে ভালোবাসার মানুষকে হাত ধরে সময় কাটানোর এমন দৃশ্য দেখা যায়।
ঢাকা থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটক তাহিননা আক্তার বলেন, আজকের বিশেষ দিনে সময় কাটাতে সাগর পাড়ে চলে আসলাম। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে। আর আমাদের সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গেও যেন চলছে ভালোবাসার মিতালি।
সিলেট থেকে আগত পর্যটক তানিম চৌধুরী বলেন, আজ এই ভালোবাসা দিবসে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। তাই এই দিনে সময় কাটাতে কক্সবাজারে আসা। এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।
চট্টগ্রাম থেকেম আসা পর্যটক বলেন, ‘আমার বান্ধবীর পছন্দের কক্সবাজার শহর। আমরা আগের বছরও এখানে বেড়াতে এসেছিলাম। এবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে দু’দিন আগে থেকেই কক্সবাজারে এসছি। আজ ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদের ভালোবাসার পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে। এই দিনে রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের পরিচয়। আমার বান্ধবী সালমাকে নিয়ে তাই ঘুরতে এসেছি।’
ভোর থেকে সৈকতের সর্বত্র জড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাজারো পর্যটক। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টে দেখা যায়, পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। ভালোবাসা দিবসকে স্মরণীয় করার জন্য প্রিয় মানুষকে সাধ্যমতো উপহার কিনে দিতে ভিড় দেখা গেছে রাখাইন বার্মিজ মার্কেটগুলোতে। তাছাড়া সমুদ্রের ঝিনুক মার্কেটেও উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। ফুলের দোকানেও লম্বা লাইন। কেউ আবার মুঠোফুনে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলে দিবসটিকে স্মৃতিময় করে রাখছেন। সমুদ্র সৈকতে যুগল পর্যটকদের ভোর থেকেই আড্ডা দিতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা থেকে আসা শাহিন মোহাম্মদ বলেন,আমরা গভীর রাত পর্যন্ত আজ আড্ডা দিব। কক্সবাজার সমুদ্রে রাত যত গভীর হয় তত আড্ডা ভালো জমে। এখানকার পরিবেশ খুব সুন্দর। গতকাল রাত বারোটা পর্যন্ত সমুদ্রে আড্ডা হয়েছে। এখানে যে যার মতন করে ঘুরে বেড়ায়।’
ঢাকা থেকে আসা সোহেল দম্পতি বলেন, ‘এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এসেছি। চার বছর আগে একবার এসেছিলাম। এখানে অনেক দর্শনীয় স্পটের মধ্যে মিনি বান্দরবান খ্যাত উখিয়ার রেজু খালের পাশে গোয়ালিয়া, উখিয়ার পাথুরে গাথা ইনানী সমুদ্র সৈকত, ও হিমছড়িতে গিয়ে ভালো লেগেছে।’
ফুলের দোকানে দেখা যায়, ক্রেতাদের ভিড় লেগে আছে। বিভিন্নভাবে সেজেগুজে ঘুরতে বের হওয়া নানা বয়সীরা ফুল কিনছেন। কেউ প্রিয়জনকে নিয়ে ভালোবাসা দিবস, কেউ পরিবার নিয়ে বসন্ত উৎসব পালন করছেন।’
হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ‘এবার বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে হোটেল-মোটেল আগে থেকেই বুকিং হয়ে আছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের ইন্সপেক্টর গাজী মিজান বলেন, ভালোবাসা দিবসে পর্যটকের আনাগোনা বেড়েছে। পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে । প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সব সময় তৎপর।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.