ভয়েস প্রতিবেদক:
মাঝেমধ্যেই মিয়ানমারের ভেতর থেকে গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজ ভেসে আসছে। সীমান্ত ঘেঁষে দখল নেওয়া মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) চৌকিতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে আরাকান আর্মি ফাঁকা গুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণ করে। গতকাল ভোরে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ইনচিপ্রাং সীমান্তের লোকজন ৪-৫টি গুলির আওয়াজ শুনেছেন।
এ বিষয়ে সীমান্ত ঘেঁষে বসবাসকারী হোয়াইক্যংয়ের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, সকাল ৭-৮ টার দিকে তিন-চার রাউন্ড গুলির আওয়াজ শুনেছি। প্রায় প্রতিদিনই সকাল কিংবা রাতে আরাকান আর্মি এভাবে ফাঁকা গুলি ছুড়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেয়। তবে সীমান্তে সংঘাত না চললেও মিয়ানমারের ভেতরের গৃহযুদ্ধ চলমান রয়েছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ আনোয়ারী বলেন, গতকাল সকালে কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজ লোকজন শুনেছে বলে আমাকে জানিয়েছেন।
টেকনাফ ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্ত আগের চেয়ে শান্ত রয়েছে। কোনো ধরনের গোলাগুলির খবর আমরা শুনিনি। তবুও সীমান্তে আমাদের টহল জোরদার করা রয়েছে।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া এবং টেকনাফের সীমান্ত ঘেঁষে বসবাসকারী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্ত অনেকটা শান্ত রয়েছে। বেশ কয়েক দিন ধরেই সীমান্ত ঘেঁষে মিয়ানমারে সংঘাত চলছে না। তবে মাঝেমধ্যেই সীমান্ত চৌকি থেকে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে আরাকান আর্মির সদস্যরা। বিশেষ করে রাতে ও ভোরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতেই এই কাজ করছে তারা, এমনটাই ধারণা করছে নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু ও উখিয়ার পালংখালী এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তে বসবাসকারী লোকজন।
এ বিষয়ে তমব্রু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম এ জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে সীমান্ত শান্ত রয়েছে। আতঙ্ক কেটে লোকজন ঘরে ফিরেছেন। তিনি আরও বলেন, তমব্রু এলাকাটি থেকে মিয়ানমারের বেশ ভেতরটাও দেখা যায়। মাঝেমধ্যে সে দেশের বেশ ভেতরে চলমান সংঘাতের ধোঁয়ার কুন্ডলী এখানকার লোকজন দেখতে পান। অনেক সময় গুলির আওয়াজ কিংবা মর্টার শেলের শব্দও শোনা যায়।
উখিয়ার পালংখালীর ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন বলেন, পালংখালী সীমান্ত ঘেঁষে সংঘর্ষ থেমে গেছে।
ঘুমধুম সীমান্তের বন্ধ থাকা স্কুলগুলো খুলছে বুধবার : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকার বন্ধ থাকা পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হচ্ছে। সীমান্তের পরিস্থিতি বিবেচনায় ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর আগামীকাল বুধবার থেকে এসব স্কুল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
স্কুলগুলো হলো-বাইশপারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজা বনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিমকুল তমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
গতকাল সোমবার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘুমধুম সীমান্তের পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক। সাময়িকভাবে বন্ধ থাকা বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম তাই চালু করা হচ্ছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশানক (ডিসি) শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, সীমান্তের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় স্কুলগুলোর শ্রেণি কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ মাসের শুরুতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও বিদ্রোহীদের মধ্যে তীব্র সংঘাত হয়। এ কারণে এপারের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কের কারণে উপজেলার ঘুমধুম-তমব্রু সীমান্তের পাঁচটি স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে প্রশাসন।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.