এম.এ সাত্তার:
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি গ্রামের মৃত হাবিবুল্লাহর পুত্র বখতিয়ার উদ্দিনের একটি জমি তার সহোদর ভাইদের সহযোগিতায় একটি প্রভাবশালী চক্র দখল নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে দু'পক্ষের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে পারে বলে এলাকাবাসী আশঙ্কা করছে।
জানা যায়, পিএমখালী ইউনিয়নের জুমছড়ি গ্রামের মৃত হাবিব উল্লাহর ছেলে বখতিয়ার উদ্দিনের ক্রয়, হেবা ও ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া নিজ ভোগদখলীয় জমিতে লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ড জুমছড়ি গ্রামের মৃত হাবিব উল্লাহর ছেলে নাছির উদ্দিন, এহেছানুল হক, আক্তার মিয়ার। তারা ওয়ারিশানের ওজুহাতে বখতিয়ারের ওই জমি জবরদখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। এই জমি জবরদখল কারিদের দ্বারা প্রায় সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে বলে জানান জমির মালিক বখতিয়ার উদ্দিন।
এ বিষয়ে ন্যায় বিচারের প্রত্যাশায় বখতিয়ার উদ্দিন তার জান মালের সুরক্ষা চেয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসির বরাবর
বিগত ২৮-২-২০২৩ ইং তারিখ একটি জিডি (নং- ৪৭৫ ) করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সহযোগিতা পাননি। এই ধারাবাহিকতায় গত কয়েকদিন ধরে আবারো হুমকি-ধমকি অব্যাহত রেখে জমি জবরদখলের পাঁয়তারা করছিল অভিযুক্তরা। গোপন সূত্রে এ সংবাদ পেয়ে খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বখতিয়ার। তাই জান মালের নিরাপত্তা চেয়ে পুনবার ২৮-২-২৪ ইং তারিখে একটি সাধারণ ডায়েরী ( নং-১৯৭১) করেন। তা সদর থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা তদন্ত করছে বলে জানায় ভুক্তভোগী বখতিয়ার উদ্দিন।
বখতিয়ার উদ্দিনের বিল্ডিংয়ের সিসি ক্যামেরায় কারণকৃত ফুটেছে দেখা গেছে,
২ মার্চ শনিবার ভোরে অভিযুক্তরা বখতিয়ার উদ্দিনের রেজিস্ট্রি দলিল মূলে ক্রয় করা নামজারি খতিয়ানভূক্ত, নিজ দখলীয় সিমেন্টের পিলারের সাহায্য জমির চৌহদ্দি দিয়ে ঘেরা চাষ করা নিষ্কন্টক জমি দখল পাকাপোক্ত করতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ একটি টিনের বেড়া নিয়ে আসেন ৪ ব্যক্তি । পিএখালীর প্রধান সড়ক লাগোয়া ধানের চারা রোপণ করা একটি জমির মাঝখানে একটি লম্বালম্বি টিনের ভেড়া দেয় এবং ঘটনাস্থলে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাহারা বসায়, কেহ হাতে দা নিয়ে পায়চারি করছে।
এ ব্যাপারে বখতিয়ারের স্ত্রী জানান, জমি দখলের খবর পেয়ে সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে জমিতে বেড়া না দিতে নিষেধ করেন এবং স্বামী বখতিয়ারের সাথে কথা বলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সাথে বসে বৈধভাবে যা করার করতে অনুরোধ করেন। এরপরও জবর দখলকারীরা কোন কথা না শুনে তাদের জমিতে জোর করে টিনের বেড়া দিতে থাকেন। এসময় বাঁধা দিতে গেলে তারা তাকে নাজাহাল করে প্রাণনাশের হুমকি দেয় এবং অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে দা নিয়ে তাড়া করেন। এ ঘটনার দিন বখতিয়ার বাড়িতে অনুপস্থিত থাকার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্তরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের জমি দখল করেছে বলে জানান তিনি। এঘটনা বখতিয়ারকে মোবাইলের মাধ্যমে জানালে সে তাৎক্ষণিক বিষয়টি ত্রিফল নাইনে (৯৯৯) ফোন করে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। বিষয়টি তার জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। (এ ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে সংরক্ষিত রয়েছে)।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন (মুঠোফোনে) ঘটনা সম্পর্কে তথ্য দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে বলেন, এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে কথা বলে দেখেন। নিউজ এর স্বার্থে তাকে বিস্তারিত জানানোর অনুরোধ করলে সে এক পর্যায়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনি কি আমার সম্পর্কে জানেন ? আমি বিসিএস শিক্ষা কর্মকর্তা এবং দুদকের সাবেক উপসহকারী পরিচালক। তিনি জানান, সে কাউকে মারতেও যাননি, কাটতেও যাননি। সে তার জায়গায় সকালে কাজ করতে গেছেন। তার স্ত্রী মিম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, হেবা কৃত জায়গা ওর নামে খতিয়ান আছে। তাই তার স্ত্রীর জমিতে কাজ করতে গেছেন। অন্যের জমিতে কাজ করতে যাই নাই। জমিটি তার স্ত্রীর নামে হেবাকৃত, সে সুবাদে কাজ করতে গেছে। বরঞ্চ সে যে কাজ করেছে তা জোরপূর্বক তুলে ফেলেছে। তারা তার বাড়ি ভিটা ঘিরা বেড়া (প্রাচীর) দিয়ে রাখছে। দোকানে তালা দিয়েছে। সাংবাদিকেরা জাতির বিবেক, একটু বস্তুনিষ্ঠভাবে যাচাই-বাছাই করে নিউজ করেন। অন্য অভিযুক্ত এহেছানুল হক, আক্তার মিয়ার বক্তব্যে জানা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার মোহাম্মদ আলম বলেন, এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে বলে কয়েকজনের কাছ থেকে শুনেছেন কিন্তু সে নিজের চোখে দেখেননি। এ সময় তিনি একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উভয় পক্ষ সমাধান চাইলে যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে জিডি তদন্তকারী কর্মকর্তা সাজেদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আইনশৃঙ্খলার যাতে কোন অবনতি না হয়, আমরা তা কঠোর নজরদারিতে রেখেছি। চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ সাহেব সার্বিক সহযোগিতা করবে বলেও তাকে আশ্বস্ত করেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সাথে কথা হয়েছে। আগামীকাল দুপুরের পর ঘটনাস্থল গিয়ে বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করবেন। নতুবা আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.