মাওলানা রফিকুল ইসলাম:
বিয়ে সব নবী-রাসুলের অন্যতম সুন্নত। পৃথিবীর সব ধর্ম ও জাতির মধ্যে বিয়ের প্রথা প্রচলিত আছে। বিয়ের মাধ্যমে অপরিচিত দুজন মানব-মানবী নতুন সম্পর্কের সূচনা করেন। কোরআন ও হাদিসে বিয়ের অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাদিসে বিয়েকে ইমানের অর্ধেক আখ্যায়িত করা হয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি বিয়ে করল, সে অর্ধেক দ্বীন পেয়ে গেল। বাকি অর্ধেক লাভ করতে সে যেন মহান আল্লাহকে ভয় করে।’ -(মুসনাদে আহমদ)
এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘(আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্য থেকে) আরও একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও সম্প্রীতি সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’ -সুরা রুম, আয়াত ২১
কোনো কোনো সাহাবার মতে, শাওয়াল মাসে বিয়ে করা মুস্তাহাব। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে শাওয়াল মাসে বিয়ে করেছেন। নাসায়ি শরিফের হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাকে বিয়ে করেন শাওয়াল মাসে এবং শাওয়াল মাসেই আমাদের বাসর হয়। আর আয়েশা (রা.) শাওয়াল মাসে তার নিকট সম্পর্কীয় মেয়েদের বাসর হওয়া পছন্দ করতেন। হজরত আয়েশা (রা.) বলতেন, রাসুল (সা.)-এর কোন স্ত্রী তার কাছে আমার চেয়ে অধিক ভাগ্যবতী ছিল?
ইমাম নববি (রহ.) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, এর দ্বারা বোঝা যায় যে, শাওয়াল মাসে বিয়ে দেওয়া, বিয়ে করা ও বাসর করা মুস্তাহাব। আমাদের পূর্বসূরিরাও এই হাদিস দ্বারা শাওয়াল মাসে বিয়ে মুস্তাহাব হওয়ার দলিল দিতেন।
হজরত আয়েশা (রা.)-এর কাছে এই মাসে বিয়ে সম্পাদন পছন্দনীয় হওয়ার কারণ ছিল জাহেলি যুগে এই মাসে বিয়ে দেওয়া, বিয়ে করা এবং বাসর করাকে অপছন্দনীয় মনে করা হতো। শরিয়তে যার কোনো ভিত্তি ছিল না। সেটা ছিল একটা কুসংস্কার। মূলত সেই কুসংস্কার দূর করার জন্যই শাওয়াল মাসে বিয়ে-শাদি করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
এখন শাওয়াল মাস চলছে। যারা বিয়ের উপযুক্ত তাদের উচিত বরকতময় এই সময়ে বিয়ে সম্পন্ন করে ফেলা। একটি দুঃখের বিষয় হলো, অধিকাংশ পরিবারেই বিলম্বিত বিয়ে পরিলক্ষিত হয়। অথচ এটি কোনো ভাবেই কাম্য নয়। এখানে ব্যাখ্যার কোনো প্রয়োজন নেই। উপযুক্ত সন্তানসন্ততিকে যত তাড়াতাড়ি বিয়ে-শাদি দেওয়া যাবে সব দিক থেকেই তারা এবং জাতি তত বেশি উপকৃত হবে। ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত এটির ফলাফল ও প্রভাব বিস্তৃত হবে। উপযুক্ত বয়সে বিয়েশাদি সম্পন্ন করে না দেওয়াতে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা আমাদের সমাজের চিত্রে দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট।
উপযুক্ত হওয়ার পর দ্রুত বিয়ে সম্পন্ন করার বিষয়ে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে একটি প্রসিদ্ধ হাদিস রয়েছে। তিনি বলেন, রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে আমরা কতক যুবক ছিলাম। আমাদের কোনো কিছু ছিল না। এ অবস্থায় রাসুল (সা.) আমাদের বলেন, হে যুব সম্প্রদায়, তোমাদের মধ্যে যারা বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে, তারা যেন বিয়ে করে ফেলে। কারণ বিয়ে দৃষ্টিকে সংযত রাখে এবং লজ্জাস্থান সুরক্ষা করে। আর যার বিয়ে করার সামর্থ্য নেই, সে যেন রোজা রাখে। কেননা রোজা যৌনতাকে দমন করে। -সহিহ বুখারি
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.