ভয়েস প্রতিবেদক, টেকনাফ:
মিয়ানমার সংঘাতের কারণে বার বার সীমান্তে বিস্ফোরণ এবং নাফ নদীতে বাংলাদেশি নৌযানকে লক্ষ্য করে গুলির ঘটনায় গত ৫ জুন থেকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যান চলাচল বন্ধ ছিল। অবশেষে দীর্ঘ ৩৩ দিন পর এই নৌপথে, সার্ভিস ট্রলারসহ যাত্রীবাহী নৌ চলাচল শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, নৌ চলাচলের প্রথমদিনে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে অন্তত ৪০০ জন মানুষ এসেছে। নৌ চলাচল স্বাভাবিক হওয়ায় সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
রোববার (৭ জুলাই) সকাল থেকে এই নৌ পথে যাত্রীরা আসা-যাওয়া করতে পারছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী জানান, সকালে যাত্রী নিয়ে গোলারচর থেকে মালবাহী ২টি ট্রলার সেন্টমার্টিন গিয়েছে আর সেন্টমার্টিন থেকে যাত্রী নিয়ে ৩টি ট্রলার টেকনাফ এসেছে।
গত ৫ ও ৮ জুন ওই নৌরুটের নাইক্ষ্যংদিয়া নামক এলাকা থেকে ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারের গায়ে ৭টি গুলি লাগে। এরপর থেকে উপজেলা প্রশাসন ওই নৌরুট দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এরপর বিকল্প হিসেবে সাগর উপকূলীয় শাহপরীর দ্বীপের বদর মোকামের ‘গোলগরা’ নামক এলাকা দিয়ে নৌযান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ট্রলার মালিকরা ঝুঁকিপূর্ণ এই বিকল্প নৌরুট দিয়ে নৌযান চালাতে রাজি ছিলো না।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমেদ বলেন, এই ১ মাস দ্বীপবাসীর অনেক কষ্টে কেটেছে। জেলে বন্দির মতো অবস্থা। তবে জরুরি হলে সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে যাতায়াত করা যেতো। এখন নিয়মিত ট্রলার চলাচলের অনুমতি দেওয়ায় সবার জন্য সুবিধা হয়েছে।
জসিম উদ্দিন বলেন, অবশেষে ১ মাস পর সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচল সহজ হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন দ্বীপবাসী। জরুরি ও প্রয়োজনীয় কাজে নিয়মিত যাতায়াত করতে পারবো বলে ভালো লাগছে।
পর্যটন ব্যবসায়ী মো. তৈয়ব উল্লাহ ও আবদুল মালেক বলেন, সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল করতে না পারলে পর্যটনখাতে বিরাট ধস নামবে। দেশের পর্যটনখাতে বড় একটি উৎস হলো একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এখান থেকে সরকার ভালো রাজস্ব পায়। এতে অর্থনৈতিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেন্টমার্টিনের অর্থনীতির চাকা ঘুরে না। ফলে পর্যটনখাতে বিরাট ক্ষতি হয়। তাই সার্ভিস কিংবা পণ্যবাহী ট্রলারের পাশাপাশি পর্যটনবাহী জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হলে আলোর মুখ দেখতে পাবে দ্বীপবাসী। একই সাথে দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধন হবে।
চলতি বছরের জুন মাসের শুরুতে এক সপ্তাহ ধরে সেন্টমার্টিনে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপটিতে কাঁচা বাজারসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দেয়। এতে ওই দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছিল। পরে ১৪ জুন কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে একটি জাহাজ খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে সেন্টমার্টিন যায়। এ সময় জাহাজটিতে দেড় শতাধিক যাত্রী, সরকারি সহায়তার খাদ্যপণ্য এবং ৫ টি কোরবানির গরুও ছিল।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.