ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে এক দফা দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে একটি হেলিকপ্টারে গণভবন ছাড়েন শেখ হাসিনা। সঙ্গে তার ছোট বোন শেখ রেহানাও ছিলেন।
বর্তমানে ভারতের দিল্লিতে রয়েছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। জানা গেছে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন তিনি। তবে এখনও যুক্তরাজ্য থেকে মেলেনি সবুজ সংকেত। আর তাই শেখ হাসিনাকে আপাতত কিছু দিন সময় দিয়েছে ভারত।
তবে শেখ হাসিনাকে বেশিদিন রাখতে চাচ্ছে না ভারত। দেশটি চাচ্ছে, শেখ হাসিনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অন্য দেশে চলে যান। যদিও এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ভারত কোনো মন্তব্য করেনি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও মুখ খোলেনি।
সূত্রের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে জার্মানি ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।
কেন ভারত শেখ হাসিনাকে রাখতে চায় না?
ভারত শেখ হাসিনাকে কেন রাখতে চাচ্ছে না সে বিষয়ে জানিয়েছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, 'মূলত দুইটি কারণে ভারত শেখ হাসিনাকে রাখতে চায় না। প্রথম বিষয়টি শেখ হাসিনার নিজের নিরাপত্তা সংক্রান্ত।
দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক, ভারত তার সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। আর বাংলাদেশে হাসিনা-বিরোধী মনোভাব তুঙ্গে। ভারত চায় না, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেয়ার ঘটনা ছায়াপাত করুক।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, ‘অতীতে যখন বাংলাদেশে সেনা সরকার যখন ছিল, তখন ভারতের অসুবিধা ছিল। কিন্তু এবার সেনা প্রধান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণার পাশাপাশি দ্রুত দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার আশ্বাস দিয়েছেন। ফলে তাদের সঙ্গে ভারতের আলোচনা করতে কোনো অসুবিধা হবে না।'
ভারতের চ্যালেঞ্জ
প্রবীণ সাংবাদিক এবং কূটনীতি বিশেষজ্ঞ প্রণয় শর্মা বলেছেন, 'বাংলাদেশের ঘটনা ভারতকে একটা বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ভারত চায় না, বাংলাদেশের ঘটনার অভিঘাত দেশের মধ্যে পড়ুক।''
তিনি জানিয়েছেন, 'বাংলাদেশে ভারতের যে সম্পদ ও বিনিয়োগ আছে, ভারত সেগুলিকে নিরাপদ রাখতে চায়। সেদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা চায়।'
বৈঠকের পর বৈঠক
শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও ভারতের আশ্রয় নেয়ার পর সোমবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠক বসেছিল। বৈঠকে আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর সকলেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সোমবার সকাল থেকে একের পর এক বৈঠক হয়েছে দেশটিতে।
এক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের বরাতে ডয়চে ভেলে বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতে বর্তমানে ভারতের একটাই বড় চিন্তা রয়েছে, তা হলো, চীন ও পাকিস্তানকে নিয়ে। ভারতের প্রতিবেশী এই দুই দেশ এই পরিস্থিতিতে কী ভূমিকা নেবে, সেটা ভারতের একটা প্রধান বিচার্য বিষয়।''
বাংলাদেশ নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে পর্যন্ত কথা বলেছেন। মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থাকবেন। অন্তত এই ক্ষেত্রে বিরোধীদের সঙ্গে নিয়েই চলতে চায় সরকার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্র যা বলবে, রাজ্য সরকার সেটাই করবে।
তিনি বলেছেন, 'এমন কোনও মন্তব্য করবেন না যাতে সহিংসতা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
তিনি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা ইতিমধ্যেই কিছু পোস্ট করছেন। যে পোস্টগুলো করা উচিত নয় বলেই আমার মনে হয়। আমি আমাদের নেতাদেরও জানিয়েছি, কেউ কোনও পোস্ট করবেন না।'
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.