ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
আপনি কি জানেন? আপনি বাইরে যে নিশ্বাস নেন, তার থেকে আপনার ঘরের ভেতরের বাতাস অনেক ক্ষেত্রে দুই থেকে পাঁচগুণ বেশি দূষিত এবং বিষাক্ত! হ্যাঁ, এটি সত্যি এবং ভয়াবহ!
আমরা নিজেদের শরীর নিয়মিত চেক আপ করাই, ওষুধ সেবন করি। অথচ দৈনন্দিন জীবনে সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ নিশ্বাস নেওয়ার বিষয়ে চরম অসচেতন। ঘরে যে ফোম বা গদির ওপর ঘুমায় এবং শিশুদের যেসব নরম পাজামা পরিয়ে রাখি সেগুলো থেকেও ক্ষতিকর বিষাক্ত রাসায়নিক বায়ু নির্গত হতে পারে।
ভারতের হিলিং টাচ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মনোজ কে হুজার মতে, বিষাক্ত নিশ্বাস নেওয়ার ফলে ফুসকুড়ি, কাশি, চোখে জ্বালা ছাড়াও হাঁপানির মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়।
যেহেতু আমরা বেশিরভাগ সময় ঘরে এবং কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করি, তাই সেখানকার বাতাস বিশুদ্ধ রাখার প্রাকৃতিক কিছু উপায় জেনে নিতে পারি।
১. বায়ু চলাচল বৃদ্ধি:
বদ্ধ কক্ষের সবচেয়ে বড় সমস্যা আর্দ্রতা। ভেন্টিলেটর বা বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করতে পারলে কক্ষের ভেতরের আর্দ্রতার মাত্রা কমিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করার মানে এই নয় যে, ঘরের জানালাগুলো খুলে আপনি বাইরের দূষিত বাতাস কক্ষে প্রবেশ করান। বরং ঘরের ভেতরে যে শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়েছেন সেগুলো চক্রাকারে বাইরে বের করুন। এক্ষেত্রে আউটার পাখাগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে।
কক্ষের ভেতরে বায়ু দূষণের অন্যতম কারণ হয়ে থাকে রান্নাঘরের ধোঁয়া। বিশেষ করে রান্না ঘরে গ্যাসের চুলা থাকলে তা বায়ু দূষণে অন্যতম নেতিবাচক ভূমিকা পালন করে। এমন কি গোসলের পর বাথরুমেও অতিরিক্ত আর্দ্রতার সৃষ্টি হয়। যা ঘরের ভেতরের বায়ু দূষণ করতে পারে। এজন্য বাথরুমেও আউটার পাখা ব্যবহার কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
২. হাউসপ্ল্যান্ট:
ঘরের মধ্যে জমে থাকা ভ্যাপসা ভাব, দুর্গন্ধ, আসবাবপত্র ও বিষাক্ত বায়বীয় পদার্থ শোষণ করার ক্ষমতা রাখে কিছু গাছ। যার মধ্যে অন্যতম পিস লিলি। এই গাছটি মাঝারি সূর্যের আলো পছন্দ করে। আরেকটি হলো- লেডি পাম বা ব্রডলিফ। লেডি পাম অভিযোজ্য তবে উজ্জ্বল ও অপ্রত্যক্ষ আলো পছন্দ করে। এছাড়া গোল্ডেন পোথোস, বাটারফ্লাই পাম, গোল্ডেন পাম, ব্যাম্বো পাম ইত্যাদি গাছ লাগানো যেতে পারে। যেগুলো আপনার ঘরের বায়ু বিশুদ্ধ রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
অপরিহার্য কিছু তেল
৩. অপরিহার্য কিছু তেল:
কিছু অপরিহার্য তেল রয়েছে, যেগুলো ঘরে রাখলে ভাইরাস, ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া সেখানে বাঁচতে পারে না। যেমন- দারুচিনি, ওরেগানো, রোজমেরি, থাইম, বাতাবি লেবু, লবঙ্গ, টি-ট্রি ইত্যাদি। এসব তেলের একটি অ্যান্টিসেপটিক মিশ্রণ ঘরে রাখলে তা ঘরকে জীবাণু থেকে মুক্ত রাখতে এবং বায়ু বিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে। এই তেলগুলো সাবান ও ডিটারজেন্টেও ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনার ঘরের বাতাসকে পরিশুদ্ধ ও সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।
৪. কাঠকয়লা:
বদ্ধ ঘরের অভ্যন্তরীণ বায়ু বিশুদ্ধ করার একটি দুর্দান্ত উপায় হলো অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা। কারণ এটি গন্ধহীন ও শোষণকারী। বাতাস থেকে টক্সিন নির্মূল করার জন্য বিস্ময়কর কাজ করে থাকে। বাড়িতে প্রাকৃতিকভাবে বাতাসকে বিশুদ্ধ করার আরও একটি উপায় হলো বাঁশের কাঠকয়লা।
৫. সল্ট ল্যাম্প:
হিলিং টাচ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. মনোজ কে হুজার মতে, সল্ট ল্যাম্প জলীয় বাষ্পকে বাইরে টেনে নেয়। ফলে বদ্ধ ঘরে শ্বাসকষ্ট, ত্বক জ্বালাপোড়া, অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ও জীবাণু হ্রাস করে। সল্ট ল্যাম্প আপনি আপনার টেবিলেও রাখতে পারেন। এটি ঘরের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। চালু থাকা অবস্থায় সল্ট ল্যাম্প বায়ু পরিশোধনের কাজ করে। তবে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো— এটি বন্ধ হয়ে গেলেও অনেক সময় ধরে বায়ু পরিশোধনের কাজ করে থাকে।
৬. বিসওয়াক্স ক্যানডেল:
আপনি যদি ঘরে সুগন্ধযুক্ত মোমবাতি জ্বালাতে চান, তবে প্যারাফিন মোমবাতিগুলো এড়িয়ে চলুন। বরং যেসব মোমবাতি বাতাস দূষণ পরিশোধন করে সেগুলো বেছে নিন। যেমন— বিসওয়াক্স ক্যানডেল। এটি ঘরে বিশুদ্ধ বাতাস আনার পাশাপাশি ধীরে ধীরে জ্বলে। এগুলো জ্বললেও ঘরে পোড়া গন্ধ বা ধোঁয়ার সৃষ্টি হয় না। বরং বিসওয়াক্স ক্যানডেল ধূলিকণা থেকে সৃষ্ট অ্যাজমা সারাতে সহায়তা করে।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.