রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:০৭ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, প্রধানমন্ত্রী সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং বলেছেন, বাংলাদেশে সাময়িকভাবে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নিতে তার সরকারের আন্তরিক রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে। তিনি শিগগিরই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়েও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদোতে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে তিনি একথা জানিয়েছেন। এদিন মিয়ানমারে নিযুক্ত ঢাকার নতুন রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরিচয়পত্র গ্রহণ করে চেয়ারম্যান বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানান। আলোচনার শুরুতেই জান্তা সরকারপ্রধান মিন অং হ্লাং ড. মো. মনোয়ার হোসেনকে অভিনন্দন জানান এবং উপস্থিত মিয়ানমার সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সঙ্গে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
ড. মনোয়ারের মতো একজন দক্ষ ও পেশাদার কূটনীতিককে মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠানোর জন্য জান্তা সরকারপ্রধান বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে আরও বলা হয়, এর মাধ্যমে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আলোচনাকালে মিয়ানমার-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সববিষয়ে, যেমন— বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রত্যাবাসন, বাণিজ্য সম্পর্ক, আকাশ, স্থল ও নৌপথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, মানব-পাচার, মাদক-পাচার ও অস্ত্র চোরাচালান সহ প্রথাগত ও অপ্রথাগত নিরাপত্তা-সহযোগিতা, সামরিক সহযোগিতা এবং জনযোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে মতবিনিময় হয়।
বাংলাদেশে সাময়িক আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত যথাসম্ভব দ্রুত, নিরাপদ, টেকসই ও স্বেচ্ছাধীন প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের আগ্রহের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং দুই প্রতিবেশী দেশের অধিকতর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে জোরালো বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং আন্তঃদেশীয় সংযোগ বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি জনস্বাস্থ্য কূটনীতিতে রাষ্ট্রদূতের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে, এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে— তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ড. হোসেন।
রাষ্ট্রদূত ড. মো. মনোয়ার হোসেন তার পরিচয়পত্র গ্রহণ করার জন্য স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান। তিনি দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারের লক্ষ্যে এবং একে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে তার সহযোগিতা কামনা করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অত্যন্ত আন্তরিক ও উষ্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত প্রায় ৪৫ মিনিট স্থায়ী এ আলোচনার শেষে রাষ্ট্রদূত স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যানের শান্তি, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করেন। তিনি মিয়ানমারে রাষ্ট্রদূতের কর্ম-মেয়াদের সাফল্য কামনা করেন এবং তার মাধ্যমে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময়ে অন্যান্যের মধ্যে মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান শোয়ে, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের যুগ্ম-সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল ই এন উ, দূতাবাসের কাউন্সিলর (রাজনৈতিক) এবং ডিফেন্স এটাশে উপস্থিত ছিলেন।
ভয়েস/আআ