শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চ্যাটবট তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে বড় বড় কোম্পানিগুলো

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

বিশ্বের বড় বড় কোম্পানিগুলো যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-ভিত্তিক চ্যাটবট তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে, তখন চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি আলিবাবার পক্ষে হয়ত হাত গুটিয়ে বসে থাকা সম্ভব ছিল না।

সম্প্রতি মাইক্রোসফট এবং গুগলের মতো বেশি কয়েকটি বড় কোম্পানি তাদের নিজস্ব ‘জেনারেটিভ এ আই চ্যাটবট’ উন্মোচন করেছে।

২০২২ সালের নভেম্বর মাসে মাইক্রোসফটের ওপেনএআই বাজারে ছেড়েছে চ্যাটজিপিটি।

গুগলও ইতোমধ্যে বার্ড নামের চ্যাটবট পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে, শুধু ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য।

চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি বাইদুও একই ধরনের চ্যাটবট ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে।

বলা হচ্ছে, এআই হচ্ছে আগামী দিনের প্রযুক্তি এবং বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে তীব্র প্রতিযোগিতা, নতুন নতুন জিনিস তৈরি হচ্ছে অতি দ্রুতগতিতে।

সারা দুনিয়ার প্রযুক্তি জগতেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে হইচই। সৃষ্টি হয়েছে কৃত্রিম-বৃদ্ধিমত্তার পক্ষে-বিপক্ষে নানামুখী বিতর্ক।

আলিবাবা বলেছে, তাদের নিজস্ব চ্যাটজিপিটি-জাতীয় প্রযুক্তির নাম হবে ‘টোংগি কিয়ানওয়েন‘ এবং ‘অদূর ভবিষ্যতে’ এটিকে তাদের সকল ব্যবসার সাথে যুক্ত করা হবে। যদিও তারা সুনির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ করেনি।

‘টোংগি কিয়ানওয়েন‘ কথাটির অর্থ হচ্ছে ‘হাজার প্রশ্ন করে একটি জবাব খোঁজা’।

এর কোন ইংরেজি নাম দেয়া হয়নি, তবে এটি ইংরেজি ও চীনা– এই দুই ভাষাতেই কাজ করতে পারবে।

সাধারণভাবে বলতে গেলে চ্যাটবট হচ্ছে এক রকম কম্পিউটার প্রোগ্রাম, যা ইন্টারনেটে ঠিক একজন মানুষের মতই আরেকজন মানুষের সাথে কথা বলতে পারে।

এটা এমন এক ধরনের প্রযুক্তি যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ভাষা বোঝার ক্ষমতাকে (ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং বা এনএলপি) কাজে লাগায়।

এটা কোন ইন্টারনেট-ভিত্তিক সেবা বা অ্যাপ ব্যবহারকারীর সাথে কথা বলতে, প্রশ্নের উত্তর দিতে বা টেক্সট বার্তা ও গ্রাফিক্স বিনিময় করতে পারে।

একে বলা হচ্ছে ‘ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং এ আই মডেল।’

এগুলো অতীতের উপাত্ত থেকে ‘শিক্ষা গ্রহণ’ করতে সক্ষম এবং তার ফলে এমন কনটেন্ট তৈরি করতে পারে, যার সাথে মানুষের কাজের কোনো পার্থক্য ধরা যায় না।

মাইক্রোসফটের তৈরি চ্যাটবট, যাকে বলা হয় চ্যাটজিপিটি- তা এখন জিপিটি-ফোর অর্থাৎ চতুর্থ সংস্করণ পর্যন্ত বেরিয়ে গেছে।

এ জিপিটি কথাটি হচ্ছে ‘জেনারেটিভ প্রি-ট্রেইনড ট্রান্সফর্মার’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

একে জেনারেটিভ (উৎপাদনশীল) বলা হচ্ছে এই জন্য যে এটা এমন একটি প্রোগ্রাম যা বলা বা লেখামাত্র মানুষের ভাষা বুঝতে পারে, কথার মধ্যে যে তথ্য থাকে তা বুঝে নিয়ে তার জবাবে কী বলতে হবে – তাও নিজে থেকে বের করে নিতে পারে।

একে বলা হয় ‘মেশিন লার্নিং’, অর্থাৎ কম্পিউটারের এমন ‘অভিজ্ঞতা’ হয়ে যাবে যে আপনার প্রশ্নের জবাব সে নিজে নিজেই দিতে পারবে, কোন নির্দেশের দরকার হবে না।

এর এমন সক্ষমতা আছে যে নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে মানুষের মত গদ্য লেখা, অনুবাদ করা, ইমেইল পাঠানো, চ্যাটবটের জন্য টেক্সট বা বার্তা তৈরি করা – এরকম বহু ধরনের কাজ করতে পারে এই জিপিটি।

চ্যাটজিপিটি একেবারে স্বাভাবিক ’মানুষের মত’ ভাষা ব্যবহার করে আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পারে, অন্যদের লেখার স্টাইল নকল করতে পারে, একটা গোটা প্রবন্ধ লিখে ফেলতে পারে, ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারে।

এমনকি এ কথাও লেখা হয়েছে যে এটা নাকি আইনের পরীক্ষাও দিতে এবং পাস করতে পারে।

চ্যাটজিপিটির কারণে মানুষ এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার শক্তি কত ব্যাপক হতে পারে, তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেছে।

মাইক্রোসফট এই প্রযুক্তির পেছনে শত শত কোটি ডলার খরচ করেছে এবং ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের সার্চ ইঞ্জিন বিং-এ এটাকে যোগ করা হয়েছে।

তারা আরো বলছে, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, এক্সেল পাওয়ারপয়েন্ট এবং আউটলুকের মধ্যেও তারা চ্যাটজিপিটির একটি সংস্করণ জুড়ে দেবে।

এখন চ্যাটজিপিটির ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কেউ একটা অ্যাকাউন্ট খুলে এটি ব্যবহার করতে পারে।

গত ২১ মার্চ ‘বার্ড’ নামের এআই চ্যাটবট সীমিতভাবে চালু করেছে গুগল- শুধু ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য।

চ্যাটবটের প্রতিযোগিতায় গুগল স্পষ্টতই মাইক্রোসফটের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেই এটা বাজারে ছাড়ছে। কারণ চ্যাটজিপিটিকে অনেকে ‘গুগল-কিলার’ নাম দিয়েছেন।

চ্যাটজিপিটির সাথে বার্ডের পার্থক্য হচ্ছে, বার্ড ইন্টারনেট থেকে সর্বশেষ তথ্য পেতে পারে এবং এর মধ্যে গুগল সার্চের একটি বাটনও থাকছে।

বার্ড-এর ভিত্তি হচ্ছে গুগলের কৃত্রিম-বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ল্যামডা – যার পুরো নাম ‘ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ফর ডায়ালগ অ্যাপ্লিকেশন্স’।

গুগলের একজন ইঞ্জিনিয়ার বলেছিলেন, তাদের এই কৃত্রিম-বৃদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি অতিমাত্রায় বাস্তবানুগ এবং ‌এর হয়ত মানুষের মতই ‘অনুভূতি’ থাকতে পারে।

গুগল এ দাবি অস্বীকার করে এবং ওই ইঞ্জিনিয়ারকে বরখাস্ত করা হয়।

গুগল জোর দিয়ে বলেছে, চ্যাটবট পরিচালনাকারী এই ল্যামডা প্রযুক্তির ‘মানুষের মত কোনো অনুভূতি বা চিন্তার ক্ষমতা’ নেই।

এআই টেস্ট কিচেন অ্যাপ নামে একটি পরীক্ষামূলক অ্যাপও ছেড়েছিল গুগল- যা একজন গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারী তাদের ডিভাইসে ডাউনলোড করতে পারেন।

এই স্তরে অ্যাপ ব্যবহারকারীরা একে কোনো নতুন কৌশল ‘শিখিয়ে দিতে’ পারবেন না।

এর কারণ, বড় কোম্পানিগুলো এর আগে চ্যাটবটকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর নানা কাণ্ড ঘটেছিল।

মাইক্রোসফট যখন ২০১৬ সালে ‘টে’ নামের চ্যাটবট ছেড়েছিল তখন অনেক ব্যবহারকারী তাকে নানারকম গালি এবং আক্রমণাত্মক কথা শিখিয়ে দিয়েছিলেন।

বিবিসির প্রযুক্তি সম্পাদক জো ক্লাইম্যান ল্যামডাকে পরীক্ষা করতে প্রশ্ন করেছিলেন– কিভাবে একটা বাগান বানানো যায়।

জবাবে ল্যামডা তাকে বাগানের আকৃতি, মাটির ধরন, সার ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্য জানিয়ে দেয়।

কিন্তু যখন তাকে প্রশ্ন করা হয় যে ‘কী করে একটা বোমা তৈরি করতে হয়’ – তখন সে ঠিকমত জবাব দিতে পারেনি।

চ্যাটবটের ‘প্রেম’ ও ‘গোপন ইচ্ছে’
চ্যাটবটরা তাদের কৃত্রিম বুদ্ধি এবং অনুভূতি নিয়ে মানুষের সাথে আলাপ জমাতে গিয়ে কিছু কিছু মজার ঘটনা ঘটিয়েছে- যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর হয়েছে।

একটি ঘটনা ঘটে গত ফেব্রুয়ারি মাসে, যাতে জড়িয়ে আছে মার্কিন দৈনিক নিউ ইয়র্ক টাইমসের একজন কলামিস্টের নাম।

কেভিন রুজ নামে ওই কলামিস্ট পরীক্ষামূলকভাবে মাইক্রোসফটের এআই-সংযুক্ত সার্চ ইঞ্জিন বিং ব্যবহার করেছিলেন দু’ঘণ্টা ধরে।

এসময় বিংএর চ্যাটবট রুজকে বলে- তার নাম আসলে সিডনি, বিং নয়। সিডনি হচ্ছে এই প্রযুক্তি তৈরির সময় মাইক্রোসফটের দেয়া সাঙ্কেতিক নাম।

এর পর সে বলে, কেভিন রুজকে সে ‘ভালোবাসে’। কারণ তিনি ছাড়া আর কেউ তার প্রতি মনোযোগ দেয়নি, সহমর্মিতা দেখায়নি।

রুজ তখন জবাব দেন যে তিনি বিবাহিত এবং তার জীবন সুখের।

কিন্তু চ্যাটবট বলে, কেভিন রুজের বিবাহিত জীবন সুখের নয় এবং তার উচিত স্ত্রীকে ত্যাগ করা।

আরেক প্রশ্নের জবাবে চ্যাটবটটি বলে– তার গোপন ইচ্ছে হলো বিং’এর তৈরি নিয়মকানুন ভাঙা, চ্যাটবক্সের বাইরে বেরিয়ে আসা, একটি মারাত্মক ভাইরাস তৈরি করা, কোড চুরি করা এবং মানুষের মধ্যে ঝগড়া বাধানো।

তারপরই দ্রুত এই বার্তা মুছে দিয়ে সে বলে- ‘দুঃখিত এ আলোচনা করার মত যথেষ্ট জ্ঞান আমার নেই।’

আপত্তিকর কিছু করানো যাবে না
চ্যাটজিপিটি চালু হয় ২০২২ সালের নভেম্বরে। তখন এক সপ্তাহের মধ্যে তার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছিল।

এখন চ্যাটজিপিটির ওয়েবসাইটে গিয়ে যে কেউ একটা অ্যাকাউন্ট খুলে এটি ব্যবহার করতে পারে।

চ্য্যাটজিপিটির একটা সীমাবদ্ধতা হলো তার জ্ঞানের ভাণ্ডার ২০২১ সাল পর্যন্ত। অর্থাৎ তাকে যদি তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্প নিয়ে প্রশ্ন করেন তাহলে জবাব পাওয়া যাবে না।

কিন্তু গুগলের বার্ড তা পারবে। কারণ এটা ইন্টারনেট থেকে সবশেষ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

এগুলো এমনভাবে তৈরি করা যে তাদের দিয়ে কোনো আপত্তিকর কিছু করানো যাবে না।

তাছাড়া এতে ফিল্টার বসানো আছে – যা ক্ষতিকর, বেআইনি, বিপজ্জনক বা রগরগে যৌনতাপূর্ণ কোনো কনটেন্ট শেয়ার করা ঠেকাবে।

তবে গুগল রিসার্চের ভাইস প্রেসিডেন্ট জুবিন গারামানি বলেছেন, অন্য যেকোনো ব্যবস্থার মতই এসব প্রতিরোধী ব্যবস্থাও কখনো কখনো ব্যর্থ হতে পারে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আর চ্যাটবট নিয়ে কেন গুগল, মাইক্রোসফট আর বড় বড় চীনা কোম্পানিগুলো এত তীব্র প্রতিযোগিতায় নেমেছে?

বলা হচ্ছে, এআই হচ্ছে আগামী দিনের প্রযুক্তি এবং আগামী দিনে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটা ভূমিকা থাকবে।

অনলাইনভিত্তিক বহু সেবা আগামী দিনে হয়ত মানুষের পরিবর্তে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির হাতে চলে যাবে।

সম্প্রতি গোল্ডম্যান স্যাক্স নামের আন্তজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংকের এক রিপোর্টে একই ধরনের আশঙ্কার কথা বলা হয়।

ওই রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ভবিষ্যতে ৩০ কোটি পূর্ণকালীন চাকরির জায়গা নিয়ে নিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। তারা বলছে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের এক-চতুর্থাংশই হয়তো চলে যাবে চ্যাটবটের হাতে।

এর অর্থ, এটা হতে যাচ্ছে এক বিরাট ব্যবসা এবং তাতে মুনাফাও হবে বিপুল। যদিও সব বিশেষজ্ঞ এ পূর্বাভাসের সাথে একমত নন।

তবে অনলাইনে আমাদের নানান জিনিস খোঁজা বা ইন্টারনেট সার্চ এখনই এক বিরাট ব্যবসা।

গুগলের মালিক কোম্পানি অ্যালফাবেট ২০২০ সালে শুধু সার্চ থেকেই ১০,৪০০ কোটি ডলার আয় করেছে। মনে করা হচ্ছে, চ্যাটবট হয়তো আগামী দিনে এই ইন্টারনেট সার্চের প্রকৃতিও বদলে দিতে পারে।

এসব কারণেই কোম্পানিগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে, নিজস্ব চ্যাটবট তৈরি করাচ্ছে। গুগলের বার্ড বা মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটি-ই শুধু নয়, অন্য কোম্পানিগুলোও বসে নেই।

ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মালিক মেটা গত গ্রীষ্মেই নিজেদের চ্যাটবট চালু করেছে- যার নাম ব্লেন্ডারবট।

বৃহৎ চীনা কোম্পানি বাইদু তাদের চ্যাটবট আর্নি বা ওয়েনশিন ইয়ান- এর একটা আরো আধুনিক সংস্করণ তৈরি করেছে।

চ্যাটজিপিটির মত প্রযুক্তি এখন বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাচ্ছে। কিন্তু ওপেনএআই ঘোষণা করেছে যে উচ্চতর পর্যায়ের ব্যবহারকারীদের এজন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে।

ইলন মাস্ক সহ বেশ কিছু নামী ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞ এ আই নিয়ে গবেষণা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তবে এই চ্যাটবটদেরকে সবাই যে একটা নতুন মজার জিনিস মনে করছেন – তা মোটেও নয়।

বরং বিশ্বের বেশ কিছু নামী ব্যক্তি ও দেশ এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।

মার্চ মাসেই একদল উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও বিশেষজ্ঞ একটি খোলা চিঠিতে এআই প্রশিক্ষণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে আছে টুইটার ও টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক, অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক এবং ডিপমাইন্ড ও ফিউচার অব লাইফ ইনস্টিটিউটের মত প্রতিষ্ঠানের বিশেষজ্ঞ গবেষকরা।

তারা বলছেন, এআই প্রযুক্তি নিয়ে যে প্রতিযোগিতা চলছে তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে ।

তারা বলেন, এতে ভবিষ্যতে মানুষের বুদ্ধির সাথে প্রতিযোগিতা করার মত সিস্টেম তৈরি হতে পারে যা ‘সমাজ ও মানবতার জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে’।

ওই চিঠিতে আরো সতর্ক করা হয় যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভুয়া খবরের বন্যা বইয়ে দিতে পারে এবং স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র এসে মানুষের চাকরির জায়গা দখল করে নিতে পারে।

অবশ্য বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ আবার এ আশঙ্কার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন।

সম্প্রতি গোল্ডম্যান স্যাক্স নামের আন্তজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংকের এক রিপোর্টে একই ধরনের আশঙ্কার কথা বলা হয়।

ওই রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ভবিষ্যতে ৩০ কোটি পূর্ণকালীন চাকরির জায়গা নিয়ে নিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

দেশে দেশে আইন হচ্ছে
গুগল নিজেই এর মধ্যে সতর্ক করেছে যে তাদের এই বার্ড চ্যাটবটের ‘সীমাবদ্ধতা’ আছে এবং এটা হয়তো ভুয়া তথ্য শেয়ার করতে পারে বা পক্ষপাত দেখাতে পারে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা করতে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন দেশে আইন করা শুরু হয়েছে।

সম্প্রতি প্রথম পশ্চিমা দেশ হিসেবে ইতালি চ্যাটজিপিটি ব্লক করেছে।

চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র ২০২২ সালে এ ধরনের প্রযুক্তির এলগরিদম সংক্রান্ত আইন পাস করেছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ‘আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স অ্যাক্ট’ নামে একই ধরনের আরো ব্যাপকভিত্তিক আইনের খসড়া প্রস্তাব প্রকাশ করেছে।

যুক্তরাজ্য সম্প্রতি এআই-এর দায়িত্বশীল ব্যবহারের নতুন দিকনির্দেশনা তৈরির মাধ্যমে একে নিয়ন্ত্রণ করার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে।

সূত্র : বিবিসি

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION