বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:৫৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বিয়ে-শাদি হোক নির্মল আয়োজনে

মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম:
বিয়ে-শাদি আল্লাহপ্রদত্ত একটি বিধান এবং নবী কারিম (সা.)-এর সুন্নত। একজন মুমিন হিসেবে বিয়ে-শাদিসহ সবকিছুতে মহান রবের দেওয়া হুকুমগুলো পালন করতে হবে। রবের কোনো বিধান মনমর্জি মতো আদায় করতে পারবে না- চাই সেটা নামাজ হোক, বিয়ে-শাদি হোক কিংবা অন্য কোনো কিছু। মহান আল্লাহ মানুষকে বিয়ে করার আদেশ দিয়েছেন এবং নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন- ‘কাকে বিয়ে করতে পারবে, কাকে বিয়ে করতে পারবে না।’ নবী কারিম (সা.) ওই বিধান বাস্তবায়ন করে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন বিয়ের পদ্ধতি। যা কিছু নবী কারিম (সা.) বলেছেন এবং করেছেন, সেই সঙ্গে সাহাবিদের আদেশ-নিষেধ করেছেন সবই সুন্নত। ক্ষেত্রবিশেষে এগুলোর কোনোটা ওয়াজিব, কোনোটা ফরজ এবং কোনোটা সুন্নতে জায়েদা!

বিয়ে-শাদিও নবী কারিম (সা.)-এর সুন্নতসমূহ থেকে একটি সুন্নত। বর্তমানে এই সুন্নত পালন করতে গিয়ে অনেক মুসলিম ভাই-বোন বেশ বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন। মুখে তো বলছে না, কিন্তু কাজে-কর্মে বুঝায় নবীজীর এই পদ্ধতিতে তারা খুশি না (নাউজুবিল্লাহ)। তারা চায় এই বিধানকে ভিন্ন এক পদ্ধতিতে পালন করতে। সেখানে যার যেমন খুশি করতে পারবে- কেউ বাধা দিতে পারবে না।

শহরাঞ্চলে এখন আর কেউ তোয়াক্কা করে না। বিয়েতে নর্তকি এনে নাচাবে, নিজেরাও নাচবে। গানের তালে মাতাল হয়ে ছেলে-মেয়ে একসঙ্গে লাফালাফি করবে। মা-বাবারা এতেই মজা পায়। তারা বলেন, ‘এখনো যুবক, একটু-আধটু এরকম করতেই পারে। এখনি তো সময়। বুড়ো হয়ে গেলে কি আর করবে?’

কিন্তু গ্রামাঞ্চলে মুষ্টিমেয় কয়েকটি গ্রাম আছে, যেখানে গান-বাজনা হয় না। তবে সেই গ্রামের যুবক-যুবতীরা নিয়মিত যুদ্ধ করে যাচ্ছে এই রীতি চালু করার জন্য (নাউজুবিল্লাহ)। তাদের যুক্তি, ‘বিয়ে-শাদি জীবনে একবার করে, এতে একটু আনন্দ-ফুর্তি করতেই পারে। সমস্যা কী?’

হারামকে তারা হারামই মনে করে না। তুচ্ছ ভেবে উড়িয়ে দেয়। রাসুল (সা.) চৌদ্দশত বছর আগে তার ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই অবশ্যই আমার পরে এমন কিছু লোক আসবে যারা জিনা, রেশম, নেশাদার দ্রব্য ও গান-বাজনা বাদ্যযন্ত্রকে হালাল মনে করবে।’ -সহিহ বোখারি : ৫৫৯০

বর্তমানে ঠিক তাই হচ্ছে। উল্টো কেউ বাদ্যযন্ত্রের বিরোধিতা করলে সবাই তাকে দেখলে নাক সিটকায়, ঠাট্টা করে। যেন সে এই পথ থেকে সরে যায়, গান-বাজনার বিরোধিতা না করে। বিয়ে-শাদিতে বাদ্য-বাজনার ফলে যে সমস্যাগুলো হয়-

বরকত উঠে যায় : যে বিয়েতে গান-বাজনা বাজানো হয়, সে বিয়ে থেকে বরকত উঠে যায়। বিয়ে একটি পবিত্র বিধান। এই বিধান যদি পালন করা হয় গোনাহের মাধ্যমে, তা করা না করা এক বরাবর। কারণ আল্লাহর হুকুম পালন করা হয় তার রেজামন্দি হাসিলের জন্য, এখন যদি তা নারাজের কারণ হয়- এরচেয়ে ভালো তা না করা।

কোরআনবিমুখ করে দেয় : বাদ্য-বাজনা মানুষকে পবিত্র কোরআনের মাধুর্য থেকে বিমুখ করে দেয়। ফলে মানুষ কোরআন তেলাওয়াত করা, কোরআন মাজিদের ওপর আমল করা, কোরআন শ্রবণ করা থেকে দূরে সরে যায়। তৎকালীন যুগেও মক্কার মুশরিকরা সাহাবিদের কোরআন মাজিদ তেলাওয়াত করা, কোরআন তেলাওয়াত শ্রবণ করা থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল।

ভয়াবহ আজাব নেমে আসে : হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ভূমিধস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণস্বরূপ আজাব এ উম্মতের মধ্যে ঘনিয়ে আসবে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল সা.! কখন এসব আজাব সংঘটিত হবে? তিনি বললেন, যখন গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্র বিস্তৃতি লাভ করবে এবং মদ্যপানের সয়লাব হবে।’ -জামে তিরমিজি : ২২১২

হারাম কাজ : উচ্চ আওয়াজে গান-বাজনার ফলে উক্ত এলাকা এবং আশপাশের এলাকার মানুষের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। রোগীরা ব্যাপকভাবে কষ্ট করে। সাধারণ মানুষ ঘুম থেকে শুরু করে স্বাভাবিক কাজ-কর্ম করতে পারে না, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। আর এসব কাজ হারাম।

এছাড়া আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গান-বাজনাকে কেন্দ্র করে মারামারি ও মানুষ খুনের ঘটনাও ঘটে। তাই আসুন, নিজে সতর্ক হই, অপরকে সতর্ক করি। গান-বাজনার বিরুদ্ধে নিজেদের স্থান থেকে প্রতিবাদ করি। একজন মুমিন হিসেবে এটা সবার কর্তব্য।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION