বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম:
২০১০ সালে নিয়োগ পাওয়ার পর ১১ বছর ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে বহাল আছেন প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ। দীর্ঘ সময় এ পদে থেকে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নানা অব্যবস্থাপনায় জড়িয়ে পড়েছেন। এমনকি বিদেশে অর্থ পাচার,একাধিক প্রকল্পের অর্থ ভাগাভাগী ঠিকাদার হাত বদল, নিজ কন্যা যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন সেই প্রতিষ্ঠানকে কাজ পাইয়ে দেয়া, আউট সোর্সিং নিয়োগের নামে বাণিজ্যসহ নানান গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
এ সব কারণে বিভিন্ন সময়ে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় একেএম ফজলুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে হাসান আলী নামে চট্টগ্রামের এক বাসিন্দা প্রতিকার চেয়ে জনস্বার্থে গত ১১ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু দুদকের কাছ থেকে আশানুরূপ ফল না পেয়ে তিনি ২০ সেপ্টেম্বর মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে এক রীট পিটিশন (রীটপিটিশন নং ৬০১৮/ ২০২০) দায়ের করেন। ওই রীট পিটিশনের শুনানী হয় গত ২৩ সেপ্টেম্বর। চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে করা ওই রিটের শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পদক্ষেপ জানাতে বলেন এবং অভিযোগের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কী পদক্ষেপ নিয়েছে- তা আগামী এক মাসের মধ্যে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এসময় দুদকের আইনজীবীকে এ বিষয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী মো. ইকরাম উদ্দিন খান চৌধুরী। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন, আইনজীবী মো. নওশের আলী মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন। বাদীর আইনজীবী ইকরাম উদ্দিন খান চৌধুরী বলেন, রিট আবেদনকারীর করা অভিযোগের বিষয়ে দুদক কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তা দুদকের আইনজীবীকে জানাতে বলেছেন আদালত। রিটের শুনানি এক মাসের জন্য মুলতবি রাখা হয়েছে। আদালতের মৌখিক আদেশ জানিয়ে ইতিমধ্যে একটি চিঠি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রাম ওয়াসার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ যুক্ত করা রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে, এলজিআরডি সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, চট্টগ্রাম ওয়াসা, চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড, চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী এ কে এম ফজলুল্লাহ, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং দুর্নীতিদমন কমিশনের বিভাগীয় পরিচালককে।
প্রসঙ্গত প্রায় ১০ বছর ধরে চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি পদে কর্মরত আছেন প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ। তিনি তিন দফা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাগিয়ে নিয়েছেন। ছাত্রজীবনে জাসদের সক্রিয় কর্মী থাকলেও বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি সুদৃষ্টিতে আসেন। ১৯৬৮ সালে ওয়াসার চাকরিতে যোগদান করেন। পরে ১৯৯৮ সালে পূর্ণ মেয়াদ শেষ করে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যান। ওয়াসায় চাকরিকালে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এ প্রকৌশলী শীর্ষ পদে বসে আত্মীয়স্বজনকে সুযোগ-সুবিধা দেওয়া এবং বোর্ডকে উপেক্ষা করে প্রকল্প নিয়েছেন। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাউকে নিয়োগ দেননি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড কর্তৃক বিতর্কিত এ.কে.এম ফয়েজলুল্লাহকে পুনরায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন।
এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমদের মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.