ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পর সৃষ্ট সংকটে অতিরিক্ত মুনাফার আশায় পেঁয়াজ আমদানিতে ঝুঁকেছিলেন অন্য খাতের ব্যবসায়ীরাও। সরকারও লাগামহীনভাবে আমদানিতে অনুমতি দেওয়ায় চাহিদার অতিরিক্ত পণ্যে বাজার এখন সয়লাব। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের গুদামগুলো পেঁয়াজে ভরপুর। আর এখন ট্রাকভর্তি পেঁয়াজ নিয়ে দিনভর বসে থাকার পরও বিক্রি করতে পারছেন না টিসিবির ডিলাররা। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের কাছে ‘গলার কাঁটা’য় পরিণত হয়েছে পেঁয়াজ।
গতকাল শনিবার খাতুনগঞ্জের আড়তগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে পেঁয়াজের বস্তায় পূর্ণ। কোনো কোনো আড়ত থেকে বের হচ্ছে পচা পেঁয়াজের দুর্গন্ধ। আড়তদাররা জানান, আমদানি পর্যায়ে দীর্ঘ সময় পাইপলাইনে ও বন্দরে কন্টেইনারে বদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকায় প্রচুর পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। আগে আড়ত খালি থাকলেও এখন একসঙ্গে অনেক পেঁয়াজ চলে এসেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি হওয়ায় ক্রেতারা প্রয়োজনের বেশি পেঁয়াজ কিনছেন না। পচনশীল হওয়ার কারণে তা বেশিদিন রাখাও যাচ্ছে না। তাই ক্ষতি কমাতে আমদানি মূল্যের চেয়েও কম দামে অনেকে পেঁয়াজ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।
পাইকারিতে গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আমদানির মধ্যে চীনা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১৮, মিসরীয় ২২, তুরস্কের ২৫-৩০, মিয়ানমার ও পাকিস্তানের ৩২-৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের তথ্যমতে, গত এক মাসে বন্দর দিয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪৫ হাজার টন পেঁয়াজ এসেছে। আরও চালান পাইপলাইনে রয়েছে। পচনশীল হওয়া এবং সরবরাহ ঘাটতি পূরণে পেঁয়াজবাহী জাহাজ বন্দরে আসার পর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা ছাড় করা হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও চিটাগাং চেম্বারের পরিচালক সৈয়দ সগীর আহমদ বলেন, রপ্তানিকারক দেশ থেকে পেঁয়াজ জাহাজে লোড হওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। জাহাজ থেকে নামানোর পর বন্দরের ভেতরেও পেঁয়াজবাহী কন্টেইনার পড়ে থাকে অনেক দিন। দীর্ঘ সময় কন্টেইনার বন্ধ থাকায় অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়া দেশে সৃষ্ট সংকটে বাড়তি মুনাফার আশায় যারা কখনো পেঁয়াজের ব্যবসা করেননি, তারাও আমদানি করেছেন। ফলে চাহিদার অতিরিক্ত পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এখন খাতুনগঞ্জের কোনো আড়তেই পেঁয়াজ রাখার জায়গা নেই। এ অবস্থায় আমদানি মূল্যের চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে অনেক ব্যবসায়ী পুঁজিহারা হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিভিন্ন আমদানিকারকের পক্ষে চট্টগ্রাম বন্দরে পেঁয়াজের চালান খালাসের দায়িত্বে থাকা সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান মারকো ইন্টারন্যাশনাল সিঅ্যান্ডএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকরামুল হক ভূঁইয়া বলেন, গত এক মাসে ১০-১২ দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রচুর পেঁয়াজ এসেছে। এর বেশির ভাগই দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে গেছে। আগামী সপ্তাহের দিকে পেঁয়াজ নিয়ে আরও কয়েকটি জাহাজ আসার কথা রয়েছে।
গত শুক্রবার পেঁয়াজের পরিস্থিতি দেখতে খাতুনগঞ্জ গিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামানও বলেছেন, চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য না থাকায় আমদানি করা পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি কাটাতে আমদানি করা পেঁয়াজ প্রকৃত মূল্যে কেনা যায় কি না, তা টিসিবির পর্ষদ সভায় আলোচনা করা হবে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.