ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
পরিস্থিতি অতীতের মতো সহজ মনে হচ্ছে না। দমন-পীড়ন আর ইন্টারনেট বন্ধ করেও বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে পারছে না ক্ষমতা দখলকারী সামরিক বাহিনী। জান্তার বিরুদ্ধে ফুঁসছে গোটা মিয়ানমার। আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোর সরেজমিন প্রতিবেদনের ভাষ্যে মিয়ানমারের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে।
বিভিন্ন শহরে, বিশেষত প্রধান শহর ইয়াঙ্গনের উত্তরে মেকিনা এলাকায় সামরিক জান্তা বিরোধী গণবিক্ষোভকারীদের হটাতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। পরে গুলিও চলে। এমন চিত্র দেশের বিভিন্ন জায়গাতেই দেখতে পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে পথে নামার জন্য ৪০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। তবুও থামানো যাচ্ছে না গণআন্দোলন। সেনাদের নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রতিদিনই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা।
রাজনীতিবিদ-আইনজ্ঞ-জনতার পাশাপাশি ধরপাকড় চলছে সাংবাদিকদের উপরও। মিয়ানমারের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার যাতে কেড়ে না নেওয়া হয়, তার জন্য সেনাকে আরও এক বার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। সেনা যাতে কোনওভাবেই হিংসার রাস্তা না নেয়, একযোগে সেই আর্জি জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, আমেরিকার মতো দেশগুলোর প্রতিনিধিরাও। মিয়ানমারে জাতিসংঘের প্রতিনিধি টম অ্যানড্রুজ সেনা কর্তাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে টুইটারে লিখেছেন, ‘সব কিছুর জন্য আপনাদেরই দায়ী করা হবে।’
এদিকে, সোমবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) শেষ হচ্ছে এনএলডি নেত্রী আউং সাং সুচি-র গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ। তাঁকে মুক্তি দেওয়া হবে কি না নিশ্চয়তা নেই। অন্যান্য রাজবন্দীদের ভাগ্যও এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত।
চলতি মাসের গোড়ায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দেশ শাসনের ভার নিজের হাতে তুলে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। শুরুতে মূলত সমাজমাধ্যমে গণবিক্ষোভ ঠেকাতে দেশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল সেনা। প্রবল সমালোচনার জেরে পরে তা চালু করা হয়। সোমবার ফের সকাল থেকেই বিভিন্ন শহরে বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সেনার প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আরও বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল ইয়াঙ্গন ও তার আশপাশের শহরগুলো। নেট পরিষেবা বন্ধ করার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত সমাজমাধ্যমের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে দেখা গিয়েছে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এখানে। রাস্তায় চলছে সেনার সাঁজোয়া গাড়ি। তারপরও থেমে থেমে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ চলছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অতীতে দীর্ঘ বছর সামরিক শাসনের অভিজ্ঞতা থাকলেও বর্তমানে ফৌজিদের মেনে নিতে নারাজ জনতা। বিশেষত শহুরে মধ্যবিত্ত, শিক্ষার্থী ও পেশাজীবী সমাজ সামরিক আগ্রাসনকে অস্বীকার করে বাইরে বের হয়ে এসেছেন। যতই দিন যাচ্ছে জান্তা বিরোধী আন্দোলন ততই চাঙ্গা ও বিস্তৃত হচ্ছে। জনতা ও সামরিক বাহিনীর এমন মুখোমুখি অবস্থা দীর্ঘায়িত হলে মিয়ানমারে সামগ্রিক শান্তি, মানবাধিকার ও স্থিতিশীলতা সামনের দিনগুলো আরো নাজুক হবে বলে মন্তব্য করেছে মিয়ানমারের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সদস্যরা। সূত্র:বার্তা২৪।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.