নেছার আহমদ:
বিশে^র দ্বীর্ঘতম কক্সবাজার সমূদ্র সৈকত জনশূন্য হওয়ায় ফিরে আসছে জীব বৈচিত্রের প্রাণ চাঞ্চলতা। প্রকৃতি সাজিয়ে নিচ্ছে আপন মনে। বালিয়াড়িতে সাগর লতা বিনা বাধায় ডালপালা মেলে ছড়াচ্ছে সবুজের সমাহার। নির্ভয়ে লাল কাঁকড়ার ছোটাছুটি। তীরে জলরাশিতে জ¦লজ প্রাণী। সব মিলে আবারো নতুন প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে সমুদ্র সৈকতের প্রকৃতি। করোনা ভাইরাস বিস্তার রোধে সৈকতে মানুষের বিচরণ নিষিদ্ধ করার পরই সৈকত ও সমূদ্র তার নিজস্ব রূপ বৈচিত্রে ফিরতে শুরু করে। এখন নির্মল প্রকৃতি। প্রাকৃতিক এ বৈচিত্র রক্ষার দাবী পরিবেশবাদী ও পর্যটন উদ্যোক্তাদের।
করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রামন কমাতে গত ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো। পাশাপাশি লকডাউনে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় জনমানব শুন্য সমুদ্র সৈকত। জনশুন্য সমুদ্র সৈকতে নির্জনতায় জীব বৈচিত্রে ফিরে আসছে প্রাণ চাঞ্চলতা। প্রকৃতি তার আপন মনে সাজিয়ে নিচ্ছে। সৈকতের বালিয়াড়িতে সাগর লতা বিনা বাধায় ডালপালা মেলে ছড়াচ্ছে সবুজের সমাহার। মানুষের বিচরণ না থাকায় নির্ভয়ে ছুটাছোটি করছে ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাঁকড়া। সৈকতের বালিয়াড়ি ও কিনারায় দেখা মিলছে সামুদ্রিক কাছিমের। এক মাসের অধিক সময় ধরে মানুষের পদচারনা ও কোলাহল না থাকায় পরিচ্ছন্ন সমুদ্র সৈকতে বইছে নির্মল বাতাস। প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে তার নিজস্ব প্রাণ। সমুদ্র সৈকতে পুর্বে বিচরণ করা লাল কাকড়া, সাগর লতা সহ নানা প্রাণি আপন পরিবেশে ফিরতে শুরু করেছে।
সমুদ্র সৈকতে জীব বৈচিত্র রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে পরিবেশবাদী নেতা কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষন পরিষদ সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানান, কোলাহল মুক্ত সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন এলাকায় প্রকৃতি তার আপন পরিবেশ ফিরে পেয়েছে। এসব এলাকার প্রাণীরাও জীববৈচিত্র ফিরে পেয়েছে। এ থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে জীববৈচিত্র রক্ষার। জীববৈচিত্র রক্ষায় নির্দিষ্ট কিছু এলাকা সংরক্ষিত রাখতে হবে। যেখানে পর্যটক সহ কোন মানুষ যাতে বিচরণ করতে না পারে।
বিশিষ্ট পর্যটন উদ্যোক্তা মফিজুর রহমান মফিজ জানান, সৈকতে কোলাহল ও দুষণমুক্ত পরিবেশ ফিরিয়ে আনা গেলে সমূদ্র সৈকত তার নিজস্ব রূপ বৈচিত্রে যৌবন ফিরে পাবে। নানান জলজ প্রাণী আপন ঠিকানায় ফিরে কোলাহলে মূখরিত হবে সাগরপাড়। ফলে বহুমাত্রিক সম্ভবনায় বিকশিত হবে র্পযটন শিল্প।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদ জানান, গেল বছর করোনাকালিন লকডাউনে সমুদ্র সৈকতের জীব বৈচিত্রের প্রাণ চাঞ্চলতা লক্ষনিয়। তখন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের জীব বৈচিত্র রক্ষা ও সবুজায়ন করার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। এবছর আরো বড় পরিসরে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। সমুদ্র সৈকতে লাল কাকড়া, সাগর লতা, কাছিম সহ জীব বৈচিত্র রক্ষায় নির্দিষ্ট কিছু আলাদা জোনের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি সবুজায়নের ব্যবস্থা করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আমিন আল পারভেজ জানান, মানুষের বিচরণ না থাকায় সমুদ্র সৈকতর প্রকৃতি তার আপন মনে সাজিয়ে নিচ্ছে। সাগরলতা নিজের মত করে শাখা প্রশাখা বৃদ্ধি করছে। লাল কাকড়া সহ সামুদ্রিক নানা প্রাণি নির্ভয়ে বিচরণ করছে। প্রাকৃতিক জীব বৈচিত্র সংরক্ষন করা সম্মিলিত সকলের দ্বায়িত্ব। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য্য যতটুকু সম্ভব অক্ষুন্ন রাখতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান জেলা প্রশানের এ কর্মকর্তা।
এর পুর্বে গেল বছর জনশুন্য সমুদ্র সৈকতে নির্জনতায় সমূদ্র সৈকতে জীব বৈচিত্রের নতুন রুপ পরিলক্ষিত হয়। এর পর ফিরে আসে পুর্বে বিচরণ করা ঝাঁকে ঝাঁকে লাল কাকড়া ও গাঙ্গচিল, সাগর লতার সবুজায়ন, সাগর পাড়ের নীল জলরাশিতে এসে খেলা করে ডলফিন ও সামুদ্রিক কাছিম। কিন্তু মানুষের অবাধ বিচরণে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি, আবারো বিনষ্ট হয়ে পড়ে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.