টাকার গরমঃ-
মানুষের টাকার গরম, ক্ষমতার গরম, রূপের গরম, এমনকি প্রকৃতির গরম-কোনটাই চিরস্থায়ী নয়। রোহিঙ্গা আসার পর অনেকের টাকা হয়েছে, তাই মান বেড়েছে। উঠতি ছোট লোকের যখন হঠাৎ পয়সা হয় তখন এদের মান বাড়ে এভাবে। এরা মনে করে আমরা জাতে উঠেছি, তাই এদের চোখে তখন ভদ্রলোকও অজাত। এদের পয়সায় বদলায় এদের পোশাক, খাবার আর বাসস্থানের মান। কিন্তু স্বভাবের মান আর বাড়ে না।
সুখের স্বপ্নে বিভোরঃ-
যে ছেলে-মেয়ে ছোট থাকতে কখনো তার বাবার কাছ থেকে চকলেট পাই নি, একটি খেলনার গাড়ি পাই নি, খেলনার জন্য পুতুল পাই নি, পড়ার জন্য ভাল কাপড় পায় নি, খাওয়ার জন্য ভাল খাবার পায় নি, দুই ঈদ এ জামা পেতো না, তার মা কে বছরের পর বছর একই শাড়িতে দেখেছে… এই ছেলে-মেয়ের কাছে টাকা অনেক কিছু। অনেক অনেক অনেক কিছু। সে তার বাবা-মা কে সুন্দর জীবন দিতে চায়। ভাই-বোন কে অনেক সুখী রাখতে চায়। রোজ অফিস থেকে এসে ভাই-বোনদের কে চকলেট কিনে দিতে চায়, নতুন নতুন কত কিছু কিনে দিতে চায়। দুনিয়ার যত্ত সুখ আছে সব কিনে এনে তার পরিবার কে সুখে রাখতে চায়। কারণ সে জানে টাকাই সব। সুখ কিনতে টাকা লাগে।
অর্থের কাছে সম্পর্কঃ-
সম্পর্ক… খুব নাজুক একটি ব্যাপার। খুব যত্নে রাখতে হয়। একটু এদিক সেদিক হলে মা-মেয়ের, বাবা-ছেলের, ভাই-বোনের সম্পর্কও নষ্ট হয়ে যায়। এই একটি জায়গায় টাকা টা সমান ভাবে প্রয়োজন। আপনার সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি মানুষের চাহিদা পূরনের জন্য, তাদের ভালো রাখার জন্য টাকা আপনার লাগবেই। জানেন… অর্থ বা টাকা না থাকলে বাবা-মা'র সম্মান থাকেনা, স্ত্রীর কাছে স্বামীর সম্মান থাকে না, ভাইয়ের প্রতি বোনের সম্মান থাকে না, সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের আদর থাকে না। এমনটা কিন্তু হওয়ার কথা ছিলো না অথচ হচ্ছে। আমরা এখন এগিয়ে যাওয়া নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত আর কিছুই আমাদের চোখে পড়ে না। ছেলে বা মেয়ে ভাবে, আমার বন্ধু বান্ধুবীর কতো টাকা। আমার কি হবে? বাবা-মা ভাবেন, ছেলেদের চেয়ে মেয়ে ভালো। কতো খেয়াল রাখে। টাকা খরচ করে দু'হাতে। ছেলেগুলো অপদার্থ হয়েছে। এই-যে অপদার্থ ছেলেগুলো, এরাই আপনার। আপনার ছেলেদের যদি একটা কুঁড়েঘর থাকে, ওই কুঁড়েঘর টাই আপনার নিজের। আপনি যদি ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা জন্মানোর পরেই ভেবে নিতেন তাহলে অবস্থা হয়তো আরেকটু বেশি ভালো হতো। তাহলে আর অন্যের কি আছে আমার কি নেই তা নিয়ে আফসোস করে হায় হায় করতে হয় না।
অর্থের কাছে বিশ্বাস-অবিশ্বাসঃ-
অর্থ সম্পর্কের মধ্যেও একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষ যিনি উপার্জন করেন না তার মধ্যে সবসময় একটা নিরাপত্তাহীনতা, ভয় এবং উৎকন্ঠা কাজ করে। এটা তার আত্মবিশ্বাস, আত্মসম্মানবোধ আঘাত করে। যারা বেকার থাকে তাদের অনেকে বিশ্বাস করে না। আসলে বিশ্বাস থাকা উচিত। বিশ্বাস করে কেউ কোনোদিন ঠকে না। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় ঠকে যাচ্ছি। কিন্তু একটা সময় সবার উপলদ্ধি হবেই। যাচাই না করে কারো প্রতি অবিশ্বাস আনা উচিত নয়। সন্দেহ যেখানে আসবে সম্পর্কে ফাটল ধরবেই। তাই সন্দেহকে যে কোনো ভাবেই দুর করা উচিত। তাই সবসময় ইতিবাচক চিন্তা করা। ইতিবাচক চিন্তাভাবনা জীবনকে সহজ করে দেয়। জীবনে জটিলতা সৃষ্টি হয় না। আস্থা রাখা প্রিয়জনের প্রতি। সন্দেহ আর অবিশ্বাসের কারণেই পরস্পরের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য ভুলে যাই আমরা যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রেই হোক সেটা বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী, ভাই-বোন বা অন্য যে কোনো। নিজের দোষ আগে দেখা একটা বিশেষ গুন। পাশের মানুষটির গুন খোঁজা, এটা উত্তম বৈশিষ্ট্য। অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করা, অল্প ভালোবাসাকে বিরাট করে দেখা, অল্পে সন্তুষ্ট থাকা, কৃতজ্ঞ থাকা, শোকর করা, ধৈর্য ধরা এবং ক্ষমা করতে পারা।
""দুঃখ সবার মাঝেই থাকে!!
কিন্তু সবাই কি তা সইতে পারে??
কেউ সয় নিরবে,
কেউ বা বুকে জমা রাখে হাসির সুরে,
কেউ কঠিন অসুখে, লম্বা সময় হাসপাতালে,
কেউ বা সইতে না পেরে হারিয়ে যায় চিরতরে ,,,,।
লেখক পরিচিতি
ইউসুফ আরমান
কলামিস্ট, সাহিত্যিক
দক্ষিণ সাহিত্যিকাপল্লী
পৌরসভা, কক্সবাজার।
০১৮১৫-৮০৪৩৮৮
০১৬১৫-৮০৪৩৮৮
yousufarmancox@gmail.com
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.