এম.এ আজিজ রাসেল:
কক্সবাজার জেলায় সৃষ্ট বন্যার পানির নেমে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার বৃষ্টির গতি কমে আসায় জেলার অনেক প্লাবিত থেকে পানি নেমে গেছে। এতে ভেসে উঠেছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। গত তিনদিন ধরে ভারি বর্ষণে এসব এলাকা পাহাড়ি ঢলে পানির নিচে ছিল। এতে কক্সবাজারের ৫১টি ইউনিয়ন পানির নিচে পড়ে। এতে পানিবন্দি হয়ে আছে ৫৫ হাজার মানুষ। এখনো জেলার চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ এবং উখিয়ার বহু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। বৃষ্টি না হলেও এখনো জমে আছে পানি। পানিতে ডুবে আছে কক্সবাজার—টেকনাফ সড়কের কয়েকটি স্থান। এতে আজ বিকাল পর্যন্ত এই সড়কে অধিকাংশ যানবাহন চলাচল আটকে পড়ে। এদিকে তীব্র খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষেরা। চলছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্র সংকট। এতে সর্বত্র হাহাকার চলছে। এই দুর্যোগে মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ চলছে। সর্বত্র ফুটে উঠছে ক্ষত চিহ্ন। এদিকে বন্যার্ত মানুষদের সহযোগিতার জন্য ছুটে চলছে প্রশাসনের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তারা রান্না করা খাবার এবং শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ঘরে ঘরে। একই সাথে ত্রাণ সামগ্রীও দেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বন্যা কবলিত এসব মানুষের জন্য ১৫০ মে. টন চাল ও নগদ ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। সরকারের পাশাপাশি যার যার অবস্থান থেকে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আরও বলেন, পানিবন্দি মানুষকে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। দেওয়া হচ্ছে খাবার। পাহাড় ধসে ও বানের পানিতে নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত দুর্যোগ কবলিত মানুষের জন্য কাজ করা হবে। এছাড়া বন্যা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে স্বাস্থ্য সেবা, রাস্তা—ঘাট, কৃষি, মৎস্য, লবণ, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে। ইতোমধ্যে গত দুইদিন কক্সবাজার সদরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, সদর, ঈদগাঁও ও রামুতে সাংসদ সাইমুন সরওয়ার কমল এবং চকরিয়া ও পেকুয়ায় সাংসদ জাফর আলমসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও নেতারা সহায়তা নিয়ে মানুষের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। প্রবল বৃষ্টিতে কক্সবাজারে পাহাড় ধসে ও বানের পানিতে ভেসে এই পর্যন্ত ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
চকরিয়া পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ডের হালকাকারা তিনবটগাছ তলা এলাকায় বানের পানিতে ডুবে আবরারুল ইসলাম মারুফ নামের দুইবছর বয়সী এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শিশু মারুফ ওই গ্রামের মো. নাজেম উদ্দিনের ছেলে। শিশুর মৃত্যুর বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেন পৌরসভা ২নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল করিম। তিনি বলেন, টানা ভারীবর্ষণে ও মাতামুহুরী নদীতে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে চকরিয়া পৌরসভার দুইনম্বর ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল সম্পূর্ণ প্লাবিত হয়েছে। এইসময়ে বৃহস্পতিবার সকাল দশটার টার দিকে শিশুটির মা ঘরের মধ্যে কাজ করেছিল। তার অগোচরে বাড়ির উঠানে বন্যার পানিতে কোন একসময় পড়ে যায় শিশু মারুফ।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.