আবদুল আজিজ:
আগামী ১৯ আগস্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র গুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু, এর আগেই সৈকতে ভিড় করছে স্থানীয় হাজারো পর্যটক। সৈকতে আগত এসব পর্যটকরা কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। স্থানীয় প্রশাসন পর্যটকদের সৈকত থেকে সরিয়ে দিলেও নানা অজুহাতে সৈকতে নেমে পড়ছে তারা। অবশ্য, সৈকত ভ্রমনে আসা পর্যটকরা বলছেন, অনেকদিন ধরে করোনায় ঘরবন্দি থেকে মুক্তি পেতে সৈকত ভ্রমনে এসেছেন। সরকারের বেধে দেয়া সব ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে নামছেন।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর থেকে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও সব বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ করে সরকার। চলতি বছরের ১লা এপ্রিলের পর থেকে সংক্রামণরোধে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কোন ধরণের পর্যটক নামতে দেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। একইভাবে সকল বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ করে দেয় জেলা প্রশাসন। এরপর থেকে কোন ধরণের পর্যটক সৈকত ও বিনোদনকেন্দ্র গুলো ভ্রমন থেকে বিরত ছিল। কিন্তু, আগামী ১৯ আগস্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র গুলো খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। কিন্তু, সরকার ঘোষিত নির্ধারিত তারিখের আগেই সৈকতে ভিড় করছে স্থানীয় হাজারো পর্যটক। এসব পর্যটকদের সৈকত থেকে সরিয়ে দিতে স্থানীয় প্রশাসন নানাভাবে নিষেধ করলেও বেশিরভাগ পর্যটক বিধি-নিষেধ মানছেন না। কেউ ঘোড়ায় চড়ে আবার কেউ সৈকতে গোসল করে উপভোগ করছেন সৈকত ভ্রমন। সৈকত ভ্রমনে আসা এসব পর্যটকরা বলছেন, অনেকদিন ধরে করোনায় ঘরবন্দি থেকে মুক্তি পেতে সৈকত ভ্রমনে এসেছেন তারা। কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কথাও বলেছেন এসব পর্যটক।
ঢাকার নারায়নগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি নীলিমা আকতার ও মো: সাহেদুল ইসলাম কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘করোনার বিষয়টি আল্লাহর হাতে ছেড়ে দিলাম। মনে হয় না কোন সমস্যা হবে। আমরা তো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সাগরে এসেছি। আর কতদিন বাসায় একা একা সময় কাটাবো?
মিনহাজ আলম নামের আরেক পর্যটক কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘সৈকতে আসা পর্যটকদের কারও মুখে মাস্ক নেই। সরকারের বিধি-নিষেধ না মানলে কক্সবাজারের অবস্থা ভয়াবহ হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের শক্ত হাতে মোকাবেলা করতে হবে।’
সৈকত ভ্রমনে আসা মিনারুল রাবেয়া কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘পর্যটন না খোলার কারণে এখানে লোকজন কম। আগামী ১৯ তারিখের পর থেকে পর্যটক বেড়ে যাওয়ার আগেই কক্সবাজার ভ্রমনে এসেছি। আশা করি কোন সমস্যা হবে না।’
কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রেইভ সড়ক হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘পর্যটন খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের আগেই কিছু কিছু পর্যটক কক্সবাজারে আসছেন। আমরা এসব পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে হোটেলে অবস্থান করার সুযোগ দিচ্ছি।’
সী-ওয়েলকাম রিসোর্টের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর বদরুল হাসান মিলকী কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘ করোনাকালিন সময়ে অসল হয়ে পড়েছে কক্সবাজার পর্যটন শিল্প। তবে এই দু:সময়েও কিছু পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমনে এসেছে। বিশেষ করে ১১ আগস্ট লকডাউন উঠিয়ে নেয়ার পর থেকে পর্যটকরা সৈকতে আসতে শুরু করেছে। আশা করছি, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমন করবে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো: আবু সুফিয়ান কক্সবাজার ভয়েসকে বলেছেন, ‘জীবন জীবিকার প্রয়োজনে এবং পর্যটন শিল্পকে অগ্রসর করতে পর্যটন ও সকল বিনোদনকেন্দ্র খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। একারণে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত সকলকে সরকারের বেধে দেয়া সিদ্ধান্ত গুলো মানতে হবে। তা নাহলে সরকার পুনরায় পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র গুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’
জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো: মামুনুর রশীদ কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘করোনার এই দু:সময়ে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আমরা সকল আবাসিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট মালিকদের স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি স্বাস্থ্যবিধি না মাললে আমরা বিকল্প চিন্তা করতে বাধ্য হবো। পর্যটন সংশ্লিষ্ট সবার সাথে সমন্বয় করে করোনার এই সংক্রামনরোধে সকল কর্মপরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের জীবন জীবিকার যে বাস্তবতা শক্ত হাতে করোনা সংক্রামন রোধ করা সম্ভব।’
উল্লেখ্য, আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরকার। এনিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদন কেন্দ্র আসন সংখ্যা শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। এর আগে সর্বাত্মক লকডাউন তুলে নিয়ে ১১ আগস্ট থেকে আসনের সমান যাত্রী নিয়ে অর্ধেক গণপরিবহণ চালুর সিদ্ধান্ত জানায় সরকার। খুলে দেওয়া হয় অফিস-আদালত, দোকানপাট ও বিপণি বিতান।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.