কক্সবাজারে গ্রামীণ কয়েকটি রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার। যার কারণে এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। গত কয়েকদিন আগে কাল বৈশাখী ঝড়ের পানি এখনো রাস্তায় জমে রয়েছে। কাদা মাটি নিয়েই লোকজন চলাচল করছে। বিগত দুই বছর আগে রাবার ড্রাম টু ছনখোলা খেয়াঘাট এলাকার রাস্তার কাজ মেসার্স আছাদ এন্টারপ্রাইজ ও ৭ বছর আগে পিএমখালীর চেরাংঘর বাজার হইতে খুরুশকুল ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এক্স-মিলিট্যারি সড়কের কাজ ফেলে রেখে যায় মেসার্স উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এদিকে, মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা টেন্ডার বাতিল করতে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ করবেন এবং ঠিকাদারকে শোকজ করে কয়েকবার নোটিশ দিয়েছেন। তবে ঠিকাদার শোকজের কোন ধরনের উত্তর দেননি বলে জানা গেছে। অন্যদিকে গ্রামীণ রাস্তার কাজ শেষ না করে ঠিকাদার উধাও হয়ে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছেন।
চেয়ারম্যান ঠিকাদার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (বি,এ) বলেন, এক্স-মিলিট্যারি সড়কের কার্যাদেশ বাতিল হয়ে গেছে এবং ঠিকাদার আসাদ ফোন রিসিভ করে না।তাই এ রাস্তার ব্যাপারে অধিক জানেন না সে। তারপরও এলাকার মানুষের কষ্টের কথা মাথায় রেখেই রাস্তা নির্মাণের সাথে জড়িতদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে রাস্তার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে জানান।
একটি সূত্র জানায়, রাবার ড্রাম টু ছনখোলা খেয়াঘাট এলাকার রাস্তার কাজ খুঁড়ে ফেলে রেখেছে মেসার্স আছাদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আছাদ ও পিএমখালীর চেরাংঘর বাজার হইতে খুরুশকুল ইউনিয়নের সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এক্স-মিলিট্যারি সড়কের প্রায় কাজ করেও শেষ না করে চলে যায় মেসার্স উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারী সিআইপি আতিক।এ দু’টি সড়কই উক্ত এলাকার মানুষের খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখার কারণে সাধারণ মানুষের কায়িকশ্রম ও আর্থিক ব্যয় বেড়ে গেছে।আর কাঁদা মাটি নিয়েই শিশু, বয়স্ক লোকজন চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
পিএমখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি কেফায়ত উল্লাহ জানিয়েছেন, ঠিকাদারেরা তাদের এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দু’টি খুঁড়ে ফেলে রাখায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিষয়টি উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মৌখিকভাবে একাধিকভাবে জানানো হলেও কোন প্রতিকার পাননি। মানুষের কষ্টের কথা মাথায় রেখে অসম্পূর্ণ রাস্তার কাজ সামনে বর্ষার আগেই সম্পূর্ণ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের দায়িত্বরত কর্মকর্তা সার্ভেয়ার শহিদুল্লাহ জানিয়েছেন, ঠিকাদার রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখার কারণে নোটিশের মাধ্যমে তাকে শোকজ করেছেন। শোকজের কোন সদুত্তর মেলেনি। তাই টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় টেন্ডার দেওয়ার জন্য এলজিইডির উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিতভাবে সুপারিশ করবেন।
বিষয়ে জানতে মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ফোন রিসিভ না করায় ঠিকাদার আসাদের বক্তব্য জানা যায়নি। তবে মেসার্স উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল এর কর্ণধার সিআইপি আতিক বলেন, এক্স-মিলিট্যারি (ex-military) রোড প্রকল্পটি টার্মিনেট হয়ে গেছে। ৩/৪ বছর আগে চিঠি প্রেরণ করে ওই প্রকল্প টি টার্মিনেট করে নিয়েছিল সে। পরবর্তীতে যদি তাদের ফান্ড বরাদ্দ থাকে তবে এরা পুনঃ টেন্ডার করায়ে কাজ শেষ করে নিবেন। তিনি বলেন, দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে কক্সবাজার এলজিইডি অফিস। ১৪ লাখ টাকার বিল নিতে ৭ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয় তাদের। সাইটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে ছিল তারপরও ওই প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের ঘাটে ঘাটে হয়রানি, মোটা অংকের ঘুষ-দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে প্রকল্প থেকে (সেলেন্ডার) নিজকে সড়িয়ে নিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায়কে অবহিত করা হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
ভয়েস/আআ