আহমদ গিয়াস:
বাংলাদেশের স্থলভাগের চেয়েও বড় ভূ-খন্ড হল বঙ্গোপসাগর। দেশের প্রায় অর্ধেক মানুষ এ সাগরের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু প্লাস্টিকসহ নানা দূষণের কারণে আগামী ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে সাগর ব্যবহার অযোগ্য হয়ে ওঠতে পারে। জনগণের মাঝে সমুদ্র সংক্রান্ত জ্ঞান ছড়িয়ে দিয়ে একটি সমুদ্রসাক্ষর জাতি গঠনের মাধ্যমে আমরা সমুদ্রকে রক্ষা করতে পারি। এই জন্য পাঠ্যপুস্তকে সমুদ্র সংক্রান্ত বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট (বুরি) মিলনায়তনে ‘সমুদ্র রক্ষা, পূনর্গঠন ও টেকসই ব্যবহারের জন্য সমুদ্রসাক্ষর জাতি গঠনের গুরুত্ব বিষয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা এমন মন্তব্য করেন।
সেমিনারে বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা বলেন, বর্তমানে প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কোন পাঠ্য পুস্তকে সমুদ্র সংক্রান্ত কোন বিষয় পড়ানো হয় না। অনেকে সাগর দূষণ কথাটাও মানতে নারাজ। অথচ আমাদের অজ্ঞতার কারণে সৃষ্টিকর্তার এমন অমূল্য দানের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারছি না।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ও মৎস্য অনুষদের ডিন ড. বাশেদউন্নবী রাফি ও নৌ-বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত চিফ হাইড্রোগ্রাফার শেখ মাহমুদুল হাসান। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউট ও সমুদ্র সংক্রান্ত জ্ঞান প্রচারকারী সংগঠন অক্টোফিনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে অতিথি হিসাবে আরো বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ওয়াহিদুল আলম, সহকারী অধ্যাপক ড. মো. সাইদুল ইসলাম সরকার ও ড. এনামুল হক। আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের কেমিক্যাল ওশানোগ্রাফি বিভাগের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সাইদ মোহাম্মদ শরিফ ও ভূ-তাত্ত্বিক ওশানোগ্রাফি বিভাগের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া, অক্টোফিনের মোসাম্মত ইসরাত জাহান, সানজিলা শারমীন, হৃষিকা বড়ুয়া, ইমরান ও জাহিন প্রমূখ।
সেমিনারে বিজ্ঞানীরা সাম্প্রতিক সমুদ্র দূষণের কারণে বঙ্গোপসাগরের পানিতে নানা ধরনের ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সমুদ্র রক্ষায় একটি সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। সমুদ্র দূষণ বন্ধে পর্যটন এলাকায় ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধেরও পরামর্শ দেন বিজ্ঞানীরা।
সেমিনারে পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণে গত ২ বছর ধরে কক্সবাজার উপকুলে কাছিম আসছে না জানান নেকমের ব্যবস্থাপক সমুদ্র বিজ্ঞানী আবদুল কাইয়ুম। ড. ওয়াহিদুল আলম সাগরের পানিতে মাইক্রোবায়াল পলিউশন বা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া দূষণ বেড়ে যাওয়ার কারণে পর্যটন শিল্পও হুমকীর মুখে পড়তে পারে বলে আশংকা করেন।
দিনব্যাপী এই সেমিনারে অক্টোফিনের সদস্য এবং সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.