ভয়েস প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালীতে সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধের জেরে স্থানীয় যুবক মোর্শেদ আলীকে (৩৮) হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।শনিবার (০৯ এপ্রিল) বিকেলে নিহত মোর্শেদের ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে কক্সবাজার মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
এ দিকে এ মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামি স্থানীয় চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম, মামলার অন্যতম অভিযুক্ত মাহমুদুল হকের দুই ভাগনে জাহেদুল ইসলাম ও মো. ইয়াছিনকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে পিএমখালীর চেরাংঘর বাজার এলাকায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রকাশ্যে মোর্শেদ আলীকে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে, লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেন।
এ সময় মোর্শেদ বাঁচার জন্য নানা আকুতি জানালেও শোনেননি হত্যাকারীরা। এমনকি শতাধিক মানুষ এ ঘটনা দেখলেও কেউ মোর্শেদ আলীকে রক্ষায় এগিয়ে আসেননি। মোর্শেদ আলী পিএমখালী ইউনিয়নের মাইজপাড়া এলাকার মৃত ওমর আলীর ছেলে।
কক্সবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গিয়াস মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে রাতে বলেন, নিহত ব্যক্তির ভাই জাহেদ আলী বাদী হয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। এর মধ্যে তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মামলায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেককে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ২ নম্বর আসামি মাহমুদুল হক, ৩ নম্বর চেরাংঘর বাজার কমিটির সভাপতি দিদারুল ইসলাম, ৬ নম্বর পিএমখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা। ২৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও মামলায় ৮-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুল মোস্তফা, আবদুল মালেক, মাহমুদুল হকসহ অন্য আসামিরা আত্মগোপন করেছেন।
মামলার বাদী জাহেদ আলী বলেন, সেচ প্রকল্প নিয়ন্ত্রণে নিতে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে প্রকাশ্যে লাঠি ও হাতুড়ি দিয়ে মোর্শেদকে পেটানোর পর কুপিয়ে হত্যা করেছে। হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল মালেক, মাহমুদুল হক, জয়নাল আবেদীন, কলিম উল্লাহসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন সরাসরি অংশ নিলেও মূল নির্দেশদাতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা।
জাহেদ আলী আরও বলেন, ইফতার কিনতে মোর্শেদ আলী চেরাংঘর বাজারে যান। সেখানে আবদুল মালেক ও মাহমুদুল হকের নেতৃত্বে আসামিরা লোহার রড, হাতুড়ি, ছুরি ও লাঠি নিয়ে মোর্শেদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। রোজায় ক্লান্ত মোর্শেদ তখন মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হামলাকারীদের উদ্দেশে মোর্শেদ বারবার বলছিলেন, সারাদিন রোজায় তিনি খুব ক্লান্ত, মারলে যেন ইফতারের পরে মারেন। কিন্তু তাতেও তাদের মন গলেনি। ইফতারের আগ মুহূর্তে বর্বরভাবে পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
অভিযুক্ত সিরাজুল মোস্তাফা ও আবদুল মালেকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.