বিনোদন ডেস্ক:
কয়েক দিন আগে মারা গেছেন ভারতীয় টিভি অভিনেত্রী পল্লবী দে। সাগ্নিক চক্রবর্তী নামে এক যুবকের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে ছিলেন তিনি। কলকাতার যে বাসা থেকে পল্লবীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেই বাসায় বসবাস করতেন তারা। ধারণা করা হচ্ছে, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করেছেন পল্লবী। তবে হত্যা মামলায় সাগ্নিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারপর থেকে পল্লবী-সাগ্নিকের নানা তথ্য সামনে উঠে আসছে।
কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশেও বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। এর আগে অবসাদ থেকে দেশেও বেশ ক’জন উঠতি মডেল-অভিনেত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। কিন্তু এমনটা কেন ঘটছে? এ বিষয়ে কলকাতার কয়েকজন সিনিয়র নির্মাতা, অভিনয়শিল্পী তাদের ভাবনার কথা জানিয়েছেন।
কলকাতার বাংলা টিভি জগতের অন্যতম নামি পরিচালক লীনা গাঙ্গুলির একাধিক সিরিয়ালে অভিনয় করেন অনেক নতুন মুখ। তাদের মধ্যে অনেকেই মফস্বল থেকে এসেছেন। পরিচালক জানান, মফস্বল থেকে শহরে অনেকেই আসেন। কিন্তু বিপদ বাড়ে যখন একা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকার অভ্যাস শুরু করেন।
মফস্বল থেকে আসা ছেলে-মেয়েরা কিছু বাহানা দিয়ে বাবা-মায়ের কাছ থেকে আলাদা হয়ে যান। তা উল্লেখ করে লীনা গাঙ্গুলি বলেন—‘‘আমার কিছু একান্ত সময় প্রয়োজন’—এমন ভাবনার কথা বলে বাবা মায়ের কাছ থেকে আলাদা থাকতে শুরু করেন। আর সেটাই হয়ে যায় মারাত্মক। তারপর প্রেম হয়, এক থেকে একাধিক। তৈরি হয় সম্পর্কের জটিলতা। যা কেউ সামলাতে পারেন, কেউ পারেন না। এখানেই মা-বাবাকে প্রয়োজন। তারা হচ্ছেন দেওয়ালের মতো। অনেক সমস্যার মাঝে দাঁড়িয়ে পড়েন। আঁচ লাগে না সন্তানের গায়ে।’’
মফস্বল থেকে আসা নবাগতদের পরামর্শ দিয়ে এই নির্মাতা বলেন, ‘পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকো, যেখানে আরও পাঁচজন বন্ধু পাবে। কিন্তু একা ফ্ল্যাটে থাকতে যেও না।’
এই পরিচালকের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। তার ভাষায়—‘নতুন প্রজন্ম ভাবছে প্রচুর অর্থ আয় করছি মানেই যা খুশি তাই করতে পারি। এটা ভুল। মা-বাবাই পারে সেই ভুল চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে। যে কারণে কলকাতায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকলেও সঙ্গে অভিভাবক স্থানীয় কাউকে রাখা উচিত। একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুসারী বাড়ানোর নেশাও মারাত্মক ভয়ংকর।’
অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদার মনে করেন, টেলিভিশনে যারা অভিনয় করেন তাদের জীবন বেপরোয়া হয় না। তাতে বেপরোয়া জীবনের সুযোগ থাকে না। এ অভিনেত্রী বলেন—‘এই ধরনের ঘটনা তাদের জীবনে ঘটে, যারা জীবনের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, অবসাদ গ্রাস করে নেয়। সেটা শুধু অভিনয়ের জগতে নয়, প্রত্যেক পেশায়ই। পল্লবী যেহেতু পরিচিত মুখ তাই তাকে নিয়ে খবর হচ্ছে। প্রত্যেক মানুষের জীবনে উত্থান-পতন থাকে, সেটা মেনে নেওয়ার ক্ষমতা থাকা দরকার। এখনকার তরুণরা হঠাৎ করে নাম-যশ-অর্থ পেয়ে যান। তাতেই ভবিষ্যতের স্বপ্ন সাজিয়ে ফেলেন। সেই স্বপ্ন ভেঙে গেলে কেউ মেনে নিতে পারেন, কেউ পারেন না। কিন্তু অবসাদে চরম সিদ্ধান্ত নেওয়া অত্যন্ত ভুল। সবকিছুকে মেনে নেওয়াটাই জীবন। তবে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে।’
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.