ভয়েস নিউজ ডেস্ক;
ছুটির দিনে ঘুরতে বেরিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন ১১ জন। তারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী। স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারের উদ্যোগে চাঁদা তুলে খৈয়াছড়া ঝরনায় পিকনিক করতে গিয়েছিলেন তারা।
শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুর পৌনে ২টার দিকে মীরসরাইয়ের বারতাকিয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস। এতে ১১ জন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও পাঁচ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ১৬ জন শুক্রবার সকাল ৮টায় হাটহাজারীর আমান বাজার থেকে মাইক্রোবাসযোগে খৈয়াছড়া ঝরনায় ঘুরতে যান। ঘোরাঘুরি শেষে ফেরার পথে দুপুর পৌনে ২টার দিকে বারতাকিয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় তাদের বহনকারী মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয় চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেন। এতে ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন। আহত হন আরও পাঁচ জন। তাদের চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী কাজী এম সাজিদ বলেন, ‘আমান বাজার এলাকার যুগিরহাটে আমাদের কোচিং সেন্টারটি অবস্থিত। কোচিং সেন্টারের ১৬ শিক্ষক-শিক্ষার্থী খৈয়াছড়া ঝরনাসহ মীরসরাইয়ের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র দেখতে ৫০০ টাকা করে চাঁদা তুলেছিলেন। এর মধ্যে চার জন শিক্ষক ছিলেন। তারা হলেন জিসান, রিদুয়ান, সজিব ও রাকিব। বাকিরা শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছয় জন এসএসসি পরীক্ষার্থী বাকি চার জন একাদশ শ্রেণির ছাত্র। একজন মাইক্রোবাসের চালক অপরজনের পরিচয় আমার জানা নেই। ১৬ জনের মধ্যে ১১ জন নিহত হয়েছেন। পাঁচ জন আহত হয়েছেন।’
মীরসরাইয়ের বারতাকিয়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাদের বহনকারী মাইক্রোবাস
কাজী এম সাজিদ আরও বলেন, ‘পিকনিকে আমারও যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ আমার ফুটবল ম্যাচ থাকায় যাওয়া হয়নি।’
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিক্যাল কর্মকর্তা নিবেদিতা ঘোষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘মীরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত পাঁচ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চার জন এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে এক জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’
এদিকে, নিহতদের মধ্যে চার জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন হাটহাজারী উপজেলার জিয়াউর রহমান কলেজের শিক্ষার্থী আমান বাজার এলাকার শিকারপুর মোশাররফ আলী বাড়ির মো. মহিউদ্দিন মনসুরের ছেলে মো. মাহিন (১৮), একই এলাকার আবদুর রহিমের ছেলে তানভীর হাসান (১৮), একই এলাকার জুনায়েদ হোসেন (১৮) ও মাইক্রোবাসচালক গোলাম মোস্তফা নিরু (২৮)। তিনি হাটহাজারীর চিকনদন্ডী ইউনিয়নের সাব রেজিস্ট্রার বাড়ির হাজী মো. ইউসুফ আলীর ছেলে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে পুলিশ সুপার মো. হাসান চৌধুরী বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আরও পাঁচ যাত্রী আহত হয়েছেন। উদ্ধার তৎপরতা শেষ করেছে ফায়ার সার্ভিস। ধাক্কা দিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার মাইক্রোবাসটি নিয়ে গেছে ট্রেনটি। সেটি উদ্ধার করা হয়েছে।’
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। পাঁচ জনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়েছে। এতে ১৬ জন যাত্রী ছিলেন। এর মধ্যে ১১ জন নিহত হয়েছেন।’
ভয়েস/জেইউ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.