শাহীন মাহমুদ রাসেল:
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঁকখালী নদীর পানি বেড়ে কক্সবাজার শহরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি বন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি। ফলে প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। বন্যায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
টানা বৃষ্টিতে সদরের পৌর শহর, ঝিলংজা, রামুর গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, মিঠাছড়ি, কাউয়ারখোপ, ফঁতেখারকুল, চাকমারকুলসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। এছাড়া কক্সবাজারের ৮ উপজেলার নিচু এলাকায় বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কিছু কিছু এলাকার মাছের ঘের পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
ভয়াবহ বন্যার পানিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রামু উপজেলার মানুষ। টানা বৃষ্টিতে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের মধ্যে প্রায় সবগুলোই প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, কাউয়ারখোপসহ চার-পাঁচটি ইউনিয়নের অবস্থা ভয়াবহ। এসব এলাকায় চার থেকে পাঁচ ফুট পানি উঠেছে। বাঁকখালী নদীর পানি বিপৎসীমার দেড় মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভারী বর্ষণে বাঁকখালী নদী দিয়ে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে গেছে ফসলি জমি ও সড়ক। পানিতে তলিয়ে গেছে আউশ ধানের বিস্তীর্ণ বীজতলা। পানিবন্দি মানুষ গবাদি পশু আর আসবাপত্র নিয়ে বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে ঝুপড়ি ঘর তুলে রাত যাপন করছেন তারা। এছাড়া পানি উঠে পড়ায় রামুর সাথে গর্জনিয়া-কচ্ছপিয়া ও নাইক্ষ্যংছড়ি সড়ক দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে, তলিয়ে গেছে অনেক ফসলি জমি।
এইসব এলাকায় স্থানীয়দের অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে শহরে ও আশাপাশের উপজেলার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় খাবার এবং পানীয় জলের অভাব দেখা দিয়েছে ওই এলাকায়। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় নৌকা দিয়ে পারাপার হচ্ছে মানুষ। ফসলের ক্ষেত, গোলার ধান, মৎস্য খামার, পশু ও বসতবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর।
ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার ভ্যানচালক খাইরুল আমিন বলেন, টানা বৃষ্টিতে লোকজন রাস্তায় একেবারেই কম বের হচ্ছে। তাই ভাড়াও নেই একদম। লিংকরোড এলাকার দোকানি শাহী কামরান বলেন, এত বৃষ্টিতে ক্রেতা নেই একেবারেই। তারপরও দোকান খুলে বসে আছি।
সদর উপজেলার দরগাহ গ্রামের আমিন জানান, তার মাছের ঘের পানিতে ঢুবে গেছে। সাথে ঘেরের ভেড়িতে থাকা সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। রোদ বের হলে এসব গাছ মরে যাবে বলে তিনি জানান।
ঝিলংজার ইউপি চেয়ারম্যান টিপু সুলতান বলেন, তার ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে এবং ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকেও সহায়তা করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার মাছের ঘেরও ভেসে গেছে। সবজি ক্ষেতও নষ্ট হয়ে গেছে বলে তিনি জানান।
রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা বলেন, বাঁকখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বেড়িবাঁধের উপর দিয়ে পানির স্রোতের তীব্রতায় রামুর বিভিন্ন রাস্তাঘাট বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। দুর্গত মানুষের মাঝে এ পর্যন্ত শুকনা খাবার ও বিভিন্ন সহায়তা দেয়া হয়েছে। আরও সহায়তা দেয়ার প্রস্তুতি প্রশাসনের রয়েছে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.