শনিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ্যাড: ফরিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মো: মুজিবুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আগামী ১৩ ডিসেম্বর সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুল আলম হানিফ, আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন,দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুবীর নন্দী রায় সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকে।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ ডিসেম্বর বুধবার শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। দীর্ঘ প্রস্তুতির পর প্রধানমন্ত্রী জনসভাকে অত্যন্ত সফল এবং স্মরণকালে সর্ববৃহৎ হয়েছে বলে মনে করছেন আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীরা।
টানা সাড়ে ৫ বছরের বেশি সময় পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ ডিসেম্বর বিকালে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দিয়েছেন। যেখানে ৪ লাখের কাছাকাছি মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে মনে করে সংশ্লিষ্টরা। স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে ছাড়াও আশে-পাশে ছিল জনারণ্য।
যেখানে ১৩ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা ছিল স্বাভাবিক।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আয়াছুর রহমান জানিয়েছেন, এটি কেবল মাত্র আওয়ামীলীগের জনসভা ছিল না। ছিল কক্সবাজারবাসির জনসভা। কক্সবাজারের সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার উন্নয়নযজ্ঞে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ছিল আরও উন্নয়নের কথা। কক্সবাজারের উন্নয়ন এখন আন্তর্জাতিক একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এসব উন্নয়ন বাংলাদেশ হচ্ছে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার ব্যাণিজিক নগর। এখানে সব চেয়ে বেশি উন্নয়ন হচ্ছে মহেশখালী উপজেলায়। মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিকের সাথে। হয়তো দ্বীপ কেন্দ্রিক উন্নয়নের কোন খবরা খবর বা বার্তা দিয়েছেন।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম জানান, কক্সবাজার জেলা ভৌগলিকভাবে যে অবস্থায় আছে এতে যে জন সমাবেশ হয়েছে তা অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে গেছে। এটা বর্তমান কমিটির জন্য পজেটিভ হয়ে উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে ১৩ ডিসেম্বর সম্মেলনে এর প্রভাব থাকবে।
জনসভাকে শতভাগ সফল দাবি করেছেন আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, আওয়ামীলীগে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা চির দিনের। তবে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় আওয়ামীলীগ শৃঙ্খলা ও ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রমাণ দিয়েছে। সম্মেলন নিয়ম মত হবেন। অপেক্ষা করতে হবে প্রধানমন্ত্রী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে কি চমক দেন তা দেখার।
দলীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি। সম্মেলনের ৬ বছর ১০ মাসের বেশি সময়ের মধ্যে সভাপতির পথটিতে রদবদল হয়ে ভারপ্রাপ্ত হলেও আর হয়নি সম্মেলন ও নতুন কমিটি। এখন ১৩ ডিসেম্বর সম্মেলন করার কথা রয়েছে।
ইতিমধ্যে নানাভাবে ও প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে আওয়ামীলীগের পদ প্রত্যাশীরা নিজের অবস্থান জানান দিয়েছেন। দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী নিজেকে ভারমুক্ত সভাপতি হওয়ার চেষ্টায় আছেন। সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানও সভাপতি হতে আগ্রহী, তবে তিনি সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রেখে দিলেও নারাজ নন। সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমদ, চকরিয়া পেকুয়া আসনের সংসদ সদস্য জাফর আলমও সভাপতি প্রার্থী হতে চান। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে বর্তমান যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রণজিত দাশ জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য জেলার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আশেক উল্লাহ রফিক, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম, সাংগঠণিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, সদস্য রাশেদুল ইসলামের নামও শুনা যাচ্ছে। তবে
জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, ১৩ ডিসেম্বর জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলনে অনেকেই সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। এখানে প্রধানমন্ত্রী যে নিদের্শনা দেবেন তাই মেনে নেবেন।
জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রণজিত দাশ জানান, জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে ২ বছর ধরে কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী আগমনে এই তৎপরতা ছিল বেশি। এখন প্রধানমন্ত্রী যেভাবে জেলা আওয়ামীলীগ সাজাবেন ওইটাই চ‚ড়ান্ত হবেন।
আওয়ামীলীগ নেতা রাশেদুল ইসলাম জানান, বর্তমান কমিটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যে তথ্য আছেন এতে কিছুটা পরিবর্তনের আবাস পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজার ঘুরে গেলেন। ১৩ ডিসেম্বর সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা দেবেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত সকলেই মেনে নেবেন।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ৭ ডিসেম্বরের জনসভা সফল করায় সকলের প্রতি কতৃজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন ১৩ ডিসেম্বর সম্মেলন প্রধানমন্ত্রী যাকে দায়িত্ব দেবেন তিনি সভাপতি সাধারণ সম্পাদক হবেন। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত বলে জানান তিনি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কক্সবাজার জেলা শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি। সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সাড়ে আট মাস পর ১৩ অক্টোবর ৭১ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি অনুমোদন দেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ওই সম্মেলনের মধ্যদিয়ে মনোনীত সভাপতি সিরাজুল মোস্তফা ও সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন কমিটি প্রায় ৫ বছর দায়িত্ব পালনের পর দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশে ওই কমিটিতে আসে নাটকীয় পরিবর্তন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর জেলা কমিটির সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাকে কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক করেন।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.