ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
মসজিদ মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত পবিত্র স্থান, বলা যায় ধর্মচর্চার প্রাণকেন্দ্র। প্রতিদিন পাঁচবেলা ইবাদতের জন্য যে মসজিদে যান মুসলমানরা, সেই মসজিদকে কেন্দ্র করেই সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে হচ্ছে বিরোধ। এই বিরোধ কখনও কখনও গড়ায় প্রাণহানি পর্যন্ত। এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় বিরোধ-সংঘাত রোধে মসজিদ নিবন্ধনসহ নীতিমালা করার কথা ভাবছে সরকার।
জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া হয় মসজিদে। দলবদ্ধভাবে এই ইবাদত ছাড়াও কোরআন শিক্ষা, ধর্মচর্চা, ধর্ম প্রচারে ভূমিকা রাখে মসজিদ। এমনকি স্থানীয় সামাজিক নানা উদ্যোগেও মসজিদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জুমার খুতবায় সমাজের নানা সংকট-অসঙ্গতি নিয়ে সমাধানের পথনির্দেশনাও দেওয়া হয়। তবে মুসলমানদের ধর্মীয় চর্চার প্রাণকেন্দ্র মসজিদ নিয়ে বাংলাদেশে বিরোধের ঘটনা ঘটে চলেছে। কখনও মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে, কখনও মসজিদ কমিটি কিংবা মসজিদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ দেখা দিয়েছে। রক্তারক্তি বা প্রাণহানিও ঘটছে।
জানা গেছে, কোথাও কোথাও মসজিদ নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়। কোন এলাকায় কত বড় মসজিদ, কোন মসজিদে এসি আছে, কোন মসজিদ কত বড় মাহফিল করে এসব নিয়ে বেশি প্রতিযোগিতা হয়। এছাড়া, সমাজে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে অনেকেই এলাকায় মসজিদ থাকলেও নতুন করে মসজিদ নির্মাণ করেন। কেউ কেউ মসজিদ কমিটির নেতৃত্বে আসতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেন।
২০২২ সালের এপ্রিলে রাজশাহীর চারঘাটে মসজিদ কমিটির বর্তমান ও সাবেক সভাপতির বিরোধের জেরে সংঘর্ঘে ১৫ জন আহত এবং একজন নিহত হন। এক পক্ষ মসজিদে নামাজ আদায় না করে এলাকার একটি আম বাগানে অস্থায়ী ভিত্তিতে মসজিদ নির্মাণ করে নামাজ আদায় শুরু করেন। ৮ এপ্রিল ইফতারির খাবার নিয়ে দু’পক্ষে সংঘর্ষ বাধলে এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের আলমদারপাড়া গ্রামে ১৯৯৬ সালে বায়তুশ শরফ জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এই এলাকার কিছু লোক এই মসজিদের ২০ গজের ব্যবধানে আরেকটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিলে বিরোধ সৃষ্টি হয়। ২০২১ সালের জুলাই মাসে মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ হয়।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় ২০২২ সালের ১৯ আগস্ট মসজিদের অজুখানা নির্মাণের স্থান নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি হয়। সেদিন জুমার নামাজের পর ওই সংঘর্ষে আকবর আলী নামের একজন বৃদ্ধ মারা যান। মিঠাপুর ইউনিয়নের মিঠাপুর পুকুরপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
২০২১ সালের ২২ এপ্রিলে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় মসজিদ নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষে আহত হন আট জন।
জাতীয় ইমাম সমাজের এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট বেলায়েত হোসাইন আল-ফিরোজী বলেন, মসজিদ নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা দুঃখজনক। এগুলো প্রতিরোধে সরকারকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।
এ বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, দেখা যায় একই বাড়িতে পাঁচ ভাই। তিন ভাই একদিকে, দুই ভাই আরেক দিকে। আল্লাহ তাদের সামর্থ্য দিয়েছে, আগের যে মসজিদ আছে তার ২০০ গজের মধ্যে আরেকটি মসজিদ করে ফেলেছে। এমন চিত্র বাংলাদেশে রয়ে গিয়েছে। আবার বংশভিত্তিক (চৌধুরী, খান, শেখ) মসজিদের প্রবণতা আছে। প্রতিনিয়ত এভাবে মসজিদ হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এগুলোকে একটা নিয়ম-শৃঙ্খলায় আনার চিন্তা-ভাবনা আমাদের আছে। এগুলো নিয়ে আমরা আলোচনাও করেছি। তবে এটি বাস্তবায়ন করতে সময় প্রয়োজন।
প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, সরকারি উদ্যোগে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ হয়ে গেলে তাদের ওপর বিরাট দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। কোথায় মসজিদ আছে, কারা পরিচালনা করছে এগুলো রেজিস্ট্রেশন করা হবে। এরপর কোথায় মসজিদ করা যাবে, এক মসজিদ থেকে আরেক মসজিদ কত দূরত্বে থাকবে, কারা পরিচালনা করবেন এসব বিষয় নিয়মনীতির আওতায় আনা প্রয়োজন। ইতোমধ্যে ডাটা বেজের কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.