খেলাধুলা ডেস্ক:
রোমাঞ্চ ছড়ানোর সুযোগ ছিল। সমীকরণটাও হয়ে উঠেছিল কঠিন। কিন্তু ভুল শুধরে যিনি সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন সেই খেলোয়াড়ই আবার ডুবালেন দলকে। তাতে অতি সহজেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবম আসরের শিরোপা জিতলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে কুমিল্লার ঘরে গেল বিপিএলের চতুর্থ শিরোপা।
মিরপুরে সিলেট স্ট্রাইকার্সের দেওয়া ১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রুবেল হোসেনের বোলিংয়ে শুরুতে সুনীল নারিনের উইকেট হারায় কুমিল্লা। তিনে নামা ইমরুলকে টিকতে দেননি বাঁহাতি স্পিনার লিন্ডে। চাপে থাকা কুমিল্লাকে আরও চেপে ধরার সুযোগ পেয়েছিল সিলেট। লিন্ডের বল উড়াতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দেন জনসন চার্লস। কিন্তু সীমানায় সহজ ক্যাচ কয়েকবার জাগলিং করেও ধরতে পারেননি। ৮ রানে জীবন পেয়ে চার্লস থিতু হয়ে যান ২২ গজে।
রুবেল নিজের ভুল শুধরেছিলেন নিজের তৃতীয় ওভারে। ইনফর্ম লিটনকে (৫৫) ফিরিয়ে চার্লসের সঙ্গে করা ৭০ রানের জুটি ভাঙেন। মনে হচ্ছিল রুবেল সিলেটের ত্রাণকর্তা হবেন। ৩ ওভারে ১৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু ‘পুরোনো রোগে আক্রান্ত’ রুবেল শেষ ওভারেই দলকে ডুবিয়ে দিলেন। মাথা খাটিয়ে বোলিংয়ের নুন্যতম কাজটাও যেন করতে পারেন না! ২৪ বলে ৫২ রানের কঠিন সমীকরণ কুমিল্লা সহজ করে এক ওভারে। ৮ রানে জীবন পাওয়া চার্লসই রুবেলের এক ওভারে দুই ছক্কা, এক চার হাঁকান। সঙ্গে মঈন আলীর ব্যাট থেকে আসে একটি ছক্কা ও ১ রান। ২৩ রানের বিশাল ওই ওভারেই ম্যাচ শেষ!
১২ বলে কুমিল্লার ২১ রান লাগত। ইংলিশ পেসার লুক উডের ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে সমীকরণ আরও সহজ করে নেন চার্লস। মাশরাফির শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্যারিবীয় ক্রিকেটার ১ রান নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। শুরুতে সময় নিলেও নিজের ফ্লোতে আসার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি চার্লসকে। ৫২ বলে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া এ ব্যাটসম্যান। তার সঙ্গে ১৭ বলে ২৫ রান করে দারুণ অবদান রাখেন মঈন আলী।
এর আগে টস জিতে সিলেটকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে কুমিল্লা চেয়েছিল লক্ষ্য নাগালে রাখতে। নিজেদের পরিকল্পনায় সফল কুমিল্লা। সিলেটকে ১৭৫ রানের বেশি করতে দেয়নি তারা। ব্যাটসম্যানরাও নিজেদের দায়িত্ব ঠিকঠাক পালন করে দলকে জিতিয়েছেন শিরোপা।
সিলেটের এদিন ব্যাট করলেন কেবল দুজন। শুরুতে নাজমুল হোসেন শান্ত। মাঝে ও শেষে মুশফিকুর রহিম। রান ফোয়ারায় থাকা শান্ত তুলে নিয়েছেন আরেকটি ফিফটি। ৪৫ বলে তার ব্যাট থেকে আসে ৬৪ রান। ৯ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো ইনিংস খেলে শান্ত প্রথম বাংলাদেশি খেলোয়াড় হিসেবে বিপিএলে পাঁচ’শ রানের মাইলফলক পেরিয়ে যান। ৫১৬ রান নিয়ে বিপিএলের শীর্ষ রান সংগ্রাহকও সিলেটের ওপেনার। হয়েছেন টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড়ও।
মুশফিক রান পাচ্ছিলেন কিন্তু বড় ইনিংস আসছিল না। তবে বিগ ম্যাচে দলের সেরা ক্রিকেটার জ্বলে উঠলেন। দলকে বিপদমুক্ত করে নিয়ে গেলেন ভালো অবস্থানে। ৪৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৪ রানের ইনিংসটি দলের সেরা। এ ইনিংস খেলার আগে মুশফিকের বিপিএল রান ছিল ২৮৩। আজকের ইনিংসে ৩৫৭ রান নিয়ে সপ্তম স্থানে চলে এসেছেন।
দুই দলেরই ফিল্ডিং ছিল ভুলে ভরা। ফিল্ডিংয়ে কুমিল্লা ক্যাচই ছেড়েছে পাঁচটি। মঈন আলী, মোস্তাফিজুর রহমান, ইমরুল কায়েস হাত ফঁসকে ক্যাচ মিস করেছেন। সঙ্গে মিস ফিল্ডিংয়ের পসরা সাজিয়ে বসেছিল। আর রুবেল চার্লসের ক্যাচ মিস করে শিরোপাই যেন খুইয়ে দিয়েছেন।
প্রথমবার বিপিএল ফাইনালে উঠে শিরোপা পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল সিলেট। মাশরাফিও অপেক্ষায় ছিলেন নিজের পঞ্চম শিরোপার। কিন্তু চার্লসের ঝড়, রুবেলের মাথা না খাটানো বোলিংয়ে সব হিসেব-নিকেশই পাল্টে দিলো।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.