অযত্ন ,অবহেলা আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কক্সবাজার সদরস্থ পিএমখালী ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড ছনখোলা এলাকার দরগাহ মুরা নামক কবরস্থানটি অরক্ষিত হয়ে পড়ছে।দীর্ঘকাল অবধি এ কবরস্থান সংস্কারে এগিয়ে আসেনি কেউ।কয়েকবার সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েও টাকার অভাবে সামনে এগোতেই পারেনি স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দেড়,দুই বছরের পুরনো কবরস্থানে কোন আয়ের উৎস্য না থাকায় উল্লেখযোগ্য কোন উদ্যোগ নেওয়ার সুযোগ হয়নি। ধর্মপ্রাণ আপামর জনসাধারণের উৎসাহ,ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাস,এ কবরস্থানে সমাহিত পূর্ব পুরুষদের কবর সংরক্ষণ, পবিত্রতা রক্ষার্থে এলাকার মানুষ এগিয়ে আসার কারণে তারা পুরো কবরস্থান সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
জনগুরুত্বপূর্ণ এ কবর স্থানটি সংস্কার পূর্বক রক্ষণাবেক্ষণে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবানদের আশু হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এলাকাবাসী।

সূত্রে প্রকাশ, সদর উপজেলার পিএমখালী ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত ছনখোলা ইউনুছঘোনা ও ১নং ও‌য়ার্ড পশ্চিমপাড়া গ্রামের একাংশে বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষের কবরস্থান দরগাহ মুরা নামক পাহাড়টি কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কিন্তু সরকারী বা বেসরকারীভাবে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের উদ্যোগ না নেয়ায় কবরস্থানটির প্রায় একতৃতীয়াংশ বেদখল হয়ে গেছে। ভূমিদস্যু প্রকৃতির মানুষ চারপাশ থেকে দখল করে কবরস্থান পাহাড়ের দৈর্ঘ্য-প্রস্ত কমিয়ে ফেলেছে।

প্রতিনিয়ত মানুষ, জীব জন্তুর অবাধ বিচরণ চোখে পড়ার মতো। এমনকি স্থানীয়রা এটিকে গরু ছাগলের চারাণ ভূমি হিসেবে ব্যাবহার করে আসছে যুগপৎ। ফলে একদিকে যেমন থাকছেনা কবরস্থানের ধর্মীয় পবিত্রতা, অন্যদিকে আয়তনের দিক দিয়েও তা দিনে দিনে কমে আসছে।

একটি সূত্র জানায়,দরগাহ মুরা কবরস্থানের চতুর্পাশের সীমানা প্রাচীর তৈরি, লাশ রাখার ঘর,পাঁচ ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়ার জন্য একটি মসজিদ (পঞ্জেগানা) সহ অন্যান্য একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে দরগাহ মুরা কবরস্থান কমিটির সদস্যরা।

ইতিপূর্বে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষ তাদের মৃত পূর্ব পুরুষদের সমাহিত কবর সংরক্ষণ ও পবিত্রতা রক্ষার্থে মুক্তহস্তে সাহায্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় মান্যগণ্য ব্যক্তি, নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে প্রাথমিকভাবে কবরস্থানের উত্তর পাশে সম্প্রতি বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণে পিলার স্থাপনের মধ্যে দিয়ে এ কবরস্থান সংস্কার কাজ শুরু করেন তারা।

স্থানীয়রা জানান, এ কবরস্থানের চতুর্পাশের সীমানা প্রাচীর তৈরি করতে অনেক টাকা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা বিত্তবানেরা এগিয়ে না আসলে এলাকার নিম্ন - মধ্যবিত্ত মানুষের পক্ষে এই বহুমুখী প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় সম্ভব হয়ে না উঠতে পারে। বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একাধিক বার স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজরে আনলেও উল্লেখ্য‌ কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য এ পর্যন্ত কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

কবরস্থান সংস্কার কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন- প্রায় ১ হাজার ফুট গাইডওয়াল নির্মাণ এবং জানাযার মাঠ তৈরি, লাশ রাখার স্থান, মসজিদ নির্মাণের কাজ তারা হাতে নিয়েছে। এতে ২০ -২৫ লক্ষ টাকার দরকার । তবে তারা স্থানীয় জনসাধারণের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা চাঁদা তুলেছেন। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন।কবরস্থান কমিটির অন্য কয়েকজন সদস্য জানিয়েছেন- পাহাড়ি জায়গা হওয়ায় বর্ষার সময় কবরস্থান পাহাড়ের মাটি পিচ্ছিল হয়ে যায়। যার দরুন বর্ষাকালে লাশ কবরস্থ করা, লাশ রাখা ও জানাজা পড়া খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আপতত একটি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে সেখানে অনেক কাজ বাকি আছে। সেটিও প্রতিবর্ষা মৌসুমে ভেঙে যায়। এ থেকে রক্ষার জন্য আমাদের একটি গাইডওয়াল দরকার। পর্যাপ্ত ফান্ড না থাকা সত্ত্বেও আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। এব্যাপরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এমপি এবং উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তারা।ধর্মপ্রাণ আপামর জনসাধারণ, বিত্তবান ব্যক্তি ও প্রবাসীদের নিকট ধর্মীয় এ মহৎ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে আবেদন জানিয়েছেন কবরস্থান কমিটির সদস্যদের পক্ষে আবদুস শুকুর, আব্দুর রশিদ, আব্বাস উদ্দিন, খোরশেদ আলম।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার অহিদুল আলমকে অবহিত করলে পবিত্র কবর স্থান রক্ষার জন্য ব্যক্তিগতভাবে এবং পরিষদের মাধ্যমে সার্বিক সহযোগিতা করে যাবেন।আর চেয়ারম্যান মহোদয় পবিত্র ওমরা পালন শেষে এলাকায় আসলে তাঁর সাথে আলোচনা করে এই কবরস্থানের পবিত্রতা রক্ষার্থে জরুরি ভিত্তিতে একটি ফান্ড দিতে জোর সুপারিশ করবেন বলে জানান।