ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার বাসিন্দা সুরুজ মিয়া (৫০)। চট্টগ্রাম নগরীতে রিকশা চালান। ঈদ করবেন পরিবার-পরিজনের সঙ্গে। বাড়িতে দুই ছেলে এক মেয়ে এবং স্ত্রীসহ আছেন বৃদ্ধ বাবা। নগরীর নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতে ভ্যানে বিক্রি হচ্ছে কাপড়। সেখান থেকে পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করছেন সুরুজ।
তিনি বলেন, ‘মার্কেটগুলোতে কাপড়ের দাম বেশি। ফুটপাতে কম টাকায় কেনাকাটা করা যায়। এ কারণে নিজের এবং স্বজনদের জন্য কেনাকাটা এই ফুটপাত থেকে সেরে নিচ্ছি।’
শুধু সুরুজ নন ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ফুটপাতগুলোতে কেনাকাটাও বাড়ছে। নগরীর ফুটপাতগুলো যেন নিম্ন আয়ের মানুষের পাশাপাশি নিম্ন মধ্যবিত্তদের কেনাকাটার স্থল হয়ে উঠেছে।
নগরীর নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতের বাইরেও হকাররা কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন সড়কের ওপর। সেখানে বিক্রি হচ্ছে থ্রি পিস, শার্ট, প্যান্ট, শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের কাপড়, টুপি, আতর, জুতাসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাক। নিউমার্কেটের সামনে ফুটপাতে ভ্যানে করে কাপড় বিক্রি করছেন কবির হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন ফুটপাতে মানহীন কাপড় বিক্রি হয়। এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। এখানে ভালো মানের কাপড়ও পাওয়া যায়। ফুটপাতে মালামাল বিক্রি করতে প্রশাসন এবং কিছু রাজনৈতিক পরিচয়ধারীদের দৈনিক হিসেবে চাঁদা দিতে হয়। এরপরও ফুটপাতে দোকান বসাতে খরচ কম পড়ে। যার কারণে কম টাকায় কাপড় বিক্রি করা যায়।’
শুধু যে নিউমার্কেটের সামনে হকার বসেছে তাই নয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, নগরীতে ২৮১ কিলোমিটার ফুটপাত রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে ৮০ শতাংশ ফুটপাত অবৈধ দখলদারদের কবলে। যার বেশিরভাগ ফুটপাত দখল করে হকাররা বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
ঈদকে ঘিরে নগরীর ব্যস্ততম ফুটপাতগুলোতে কাপড়ের দোকানই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে নগরীর স্টেশন রোড, চকবাজার, আন্দরকিল্লা, বহদ্দারহাট, আমতলা, খাতুনগঞ্জ, লালদীঘি, জিইসি মোড়, মুরাদপুর, ষোলশহর, অক্সিজেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, দুই নম্বর গেট, টেক্সটাইল, বাংলা বাজার, শেরশাহ, আতুরার ডিপো, আগ্রাবাদ, চৌমুহনী, বাকলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যস্ততম সড়কের ফুটপাতে বসেছেন হকাররা। এসব ফুটপাতে জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে ফুটপাত তথা সড়কের উপর দোকান বসানোর কারণে সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি মিরন হোসেন মিলন জানান, ‘যাদের মার্কেটে দোকান নেওয়ার সক্ষমতা নেই মূলত তারাই ফুটপাতে ব্যবসা করেন। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বেচাকেনাও তত বাড়ছে। ফুটপাতে পণ্যের দাম কম থাকায় বেচাকেনা ভালো হচ্ছে।’
তিনি জানান, চট্টগ্রাম নগরীতে ৩৫ হাজারের মতো হকার রয়েছে। যারা বিভিন্ন ফুটপাত তথা ভ্যানে করে পণ্য বিক্রি করেন। চট্টগ্রামে হকার্স সংগঠন আছে ১৬টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম সম্মিলিত হকার্স ফেডারেশনে অধীনে হকার্স সদস্য আছে ২৫ হাজার।
চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবির বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, চট্টগ্রামে মার্কেটকেন্দ্রিক কিছু ফুটপাতে হকার বসে। তবে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি থানা পুলিশ যথাসাধ্য সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। কেনাকাটার জন্য মার্কেটে আসা লোকজনের নিরাপত্তায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.