খেলাধুলা ডেস্ক:
পাঁচ দিনের ছুটি শেষে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের চতুর্থ তলার ক্যাম্পে ফিরে আসেননি নারী জাতীয় ফুটবল দলের অন্যতম রাইটব্যাক আনাই মোগিনি। অন্যদের সঙ্গে মঙ্গলবার ফেরার কথা ছিল তার। তবে তিনি ফিরেননি। বাফুফেরই একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, খাগড়াছড়ির এই ফুটবলার আর ক্যাম্পের ফিরবেন না।
মাস কয়েক আগে পারফরম্যান্সের কারণে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন আনাইয়ের বোন আনুচিং মোগিনি। অভিমানে ফুটবলকে বিদায় জানান এই ফরোয়ার্ড। আনাই অবশ্য ঠিকই ছিলেন ক্যাম্পে। জাতীয় দলের অপরিহার্য অংশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে নারী ফুটবলে ঘটে যাওয়া নানা নেতিবাচক ঘটনায় ফুটবলের ওপর বিতৃষ্ণা তৈরী হয়েছে বলেই হয়তো না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনাই।
বাফুফে ও কে-স্পোর্টস ক্যাম্পে থাকা মেয়েদের দেখিয়েছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলানোর মিথ্যে স্বপ্ন। বারবার তারিখ দিয়েও তারা পারেনি টুর্নামেন্টটি মাঠে গড়াতে। সর্বশেষ ৮ জুন ক্যাম্পে থাকা মেয়েরা যখন জানতে পারে এই টুর্নামেন্ট হওয়ার সম্ভাবণা নেই, তখন ক্যাম্পে নেমে আসে হতাশার ছায়া। ক্ষোভে ফুসতে থাকেন মেয়েরা।
বেগতিক বুঝে বাফুফে তড়িঘড়ি ক্যাম্প বন্ধ করে দেয় এবং সিনিয়র দলের সদস্যদের পাঁচ দিনের ছুটিতে পাঠায়। ছুটি শেষে মঙ্গলবার তিনজন ফুটবলার বাদে সবাই ক্যাম্পে ফিরে আসে। ফিরেননি আনাই, ফরোয়ার্ড তহুরা ও ডিফেন্ডার নিলুফার ইয়াসমিন নিলা।
জানা গেছে, অসুস্থতার কারণে তহুরা ও পরীক্ষার কারণে ফিরেননি নিলুফার। আনাইয়ের ব্যাপারে গতকাল খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খাগড়াছড়ি থেকে দলের মিডফিল্ডার মনিকা চাকমার সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে বাস ধরার কথা ছিল আনাইয়ের।
একই জেলা থেকে সকালের বাসে ঢাকায় আসা দলের সহকারী কোচ তৃষ্ণা চাকমা বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে বাসে চড়ার আগে ওর সঙ্গে আমার কথা হয়। ও জানায় দুপুরে মনিকার সঙ্গে এক সঙ্গে ফেরার টিকিট করেছে। পরে সন্ধ্যায় আমাকে ফোন দিয়ে জানায়, সে আর ক্যাম্পে যোগ দিবে না। আমি এরপর থেকে ওর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি, তবে ওর ফোন বন্ধ পাচ্ছি। ওর মতো খেলোয়াড়ের এমন সিদ্ধান্ত অবশ্যই কাম্য নয়।’
বিষয়টি নিশ্চিত হতে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় আনাইয়ের সঙ্গে। তবে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে সাবেক কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের জায়গায় ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু জানিয়েছেন, ‘ওর সঙ্গে আমাদের এখনও যোগাযোগ হয়নি। কথা হলে ব্যাপারটা বুঝতে পারতাম।’
ওদিকে ক্যাম্পে যোগ দেওয়া এক সিনিয়র ফুটবলার এ ব্যপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘সাফ জিতে আসার পর ৯ মাস কেটে গেলো। একটা ম্যাচও খেলার সুযোগ হয়নি আমাদের। কোন লক্ষ্য ছাড়াই দিনের পর দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বেতন বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি এখনই পূরণ হয়নি। তার ওপর আমাদের বাবা’র মতো কোচ ছোটন স্যারও চলে গেছেন। কিসের আশায় মেয়েরা ক্যাম্পে থাকবে বলেন তো? এভাবে দেখবেন ধীরে ধীরে সবাই ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।’
স্বপ্ন ধূসর হয়ে যাওয়ায় কিছুদিন আগে ক্যাম্প ছেড়েছিলেন সাফজয়ী দলের অন্যতম স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না। ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনও ক্যাম্প ছেড়েছেন চিনে খেলতে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে। এবার আনাইয়ের না ফেরার সিদ্ধান্তে নারী ফুটবলের উজ্জ্বল সম্ভাবণায় লেগেছে বড়সড় ধাক্কা।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.