আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
উত্তর কোরিয়া গতকাল বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াসং এইটটিন আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। সীমিত প্রস্তুতিতেই এই ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া সম্ভব। কারণ, এতে ব্যবহার করা হয়েছে সলিড ফুয়েল বা কঠিন জ্বালানি প্রযুক্তি। ধারণা করা হচ্ছে, এই প্রযুক্তি উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র–ব্যবস্থার উন্নতিতে বড় ভূমিকা রাখবে।
কঠিন জ্বালানি প্রযুক্তি কী
মূলত জ্বালানি ও অক্সিডাইজারের মিশ্রণে তৈরি হয় কঠিন জ্বালানি। ধাতব গুঁড়া, যেমন অ্যালুমিনিয়াম জ্বালানির কাজ করে এবং অ্যামোনিয়াম পারক্লোরেট, যা মূলত পারক্লোরিক অ্যাসিডের লবণ ও অ্যামোনিয়া সবচেয়ে প্রচলিত অক্সিডাইজার। এই জ্বালানি ও অক্সিডিজাইরকে কোনো রাবারজাতীয় শক্ত পদার্থ দিয়ে একীভূত করা হয় এবং একটি ধাতব কাঠামোর মধ্যে ভর্তি করা হয়।
যখন কঠিন চালিকা শক্তি পোড়ে, অ্যামোনিয়াম পারক্লোরেট থেকে অক্সিজেন অ্যালুমিনিয়ামের সঙ্গে মিশে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপাদন করে এবং তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত ওঠে, যেটা ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য যথেষ্ট।
কার কাছে এই প্রযুক্তি রয়েছে
শত শত বছর আগে চীনারা যখন আতশবাজি আবিষ্কার করে, তখনই কঠিন জ্বালানি প্রযুক্তির জন্ম। তবে বিশ শতকের মাঝামাঝি এসে এ প্রযুক্তিতে নাটকীয় উন্নতি ঘটে, যখন যুক্তরাষ্ট্র আরও শক্তিশালী চালিকা শক্তি উদ্ভাবন করে। উত্তর কোরিয়া স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
সত্তরের দশকে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম কঠিন জ্বালানির আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আরটি–টু ব্যবহার করে। এরপর ফ্রান্স উদ্ভাবন করে এস থ্রি, যা মধ্যমপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র। চীন নব্বইয়ের দশকের শেষে এসে এই প্রযুক্তির পরীক্ষা শুরু করে।
কঠিন–তরলের লড়াই
তরল চালক বেশি উত্তোলন শক্তি উৎপাদন করলেও এর প্রযুক্তি জটিল এবং ওজনও বেশি। কঠিন জ্বালানি ঘন এবং দ্রুত পোড়ে। এর ফলে অল্প সময়ে উত্তোলনশক্তি তৈরি হয়। কঠিন জ্বালানি কোনো ক্ষয় ছাড়াই দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করা সম্ভব।
মার্কিন অস্ত্রবিশেষজ্ঞ ভন ভ্যান ডিপেন বলেন, কঠিন জ্বালানি দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র সহজে ও নিরাপদে পরিচালনা করা সম্ভব। এতে কম কারিগরি সহায়তার প্রয়োজন হয়। ফলে সহজে ধরা পড়ে না।
উত্তর কোরিয়া বলছে, নতুন কঠিন জ্বালানি প্রযুক্তির আন্তমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নের ফলে তাদের পাল্টা পারমাণবিক হামলা সক্ষমতা অনেকটাই বাড়বে।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.