আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজার রাফায় ইসরাইলের হামলা পরিকল্পনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীরা। তারা যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, রাফায় যদি ইসরাইলি বাহিনী সামরিক হামলা চালায় তাহলে সেখানে ভয়াবহ এক মানবিক বিপর্যয় ঘটবে। এ বিষয়ে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এ জন্য তারা বলেছেন, বন্ধু এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কথা শোনা উচিত ইসরাইলের। তা হলো, হামাসকে পরাজিত করার মূল্য যেনো সাধারণ মানুষকে দিতে না হয়। গাজার খান ইউনূসে অবস্থিত নাসের হাসপাতাল থেকে শত শত মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরাইল। এরপর তাদের স্নাইপার হামলার মধ্যেই ওই হাসপাতালে আটকে থাকা বিপুল সংখ্যক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছিলেন। এরই মধ্যে গাজায় ইসরাইলের ড্রোন হামলায় আহত হয়েছেন দু’জন সাংবাদিক। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ হামলার নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ।
৭ই অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় কমপক্ষে ২৮ হাজার ৫৭৬ জন মানুষকে হত্যা করেছে ইসরাইল। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬৮ হাজার ২৯৭ জন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
মুসলিম বিশ্ব এবং বিশ্ববাসীর চোখের সামনে যা ইচ্ছে তাই করে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা নগ্নভাবে মারণাস্ত্র ব্যবহার করছে সাধারণ গাজাবাসীর ওপর। বিশ্ববাসী শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। বড় বড় নেতারা শুধু বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছেন। কিন্তু ইসরাইলের উন্মত্ততা কিছুতেই কমছে না। উল্টো তারা দম্ভ দেখিয়ে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘোষণা দিয়ে হামলা করছে।
বিবৃতি দিচ্ছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা, সৌদি আরব সহ অনেক দেশ। সর্বশেষ যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লুক্সোন। তারা বলেছেন, রাফায় সামরিক অভিযানের ফল হবে বিপর্যয়কর। প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি ওই এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন। এর মধ্যে আমাদের অনেক নাগরিক ও তাদের পরিবারের সদস্য আছেন। এরই মধ্যে গাজার মানবিক পরিস্থিতি ভয়াবহ। তার ওপর এসব সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সামরিক হামলা চালালে তা আরও বিপর্যয় ডেকে আনবে। এই পথ অবলম্বন না করতে আমরা ইসরাইলি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।
এর আগে ১৩ই ডিসেম্বর অবিলম্বে মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভোট দিয়েছে ১৫৩টি দেশ। তার মধ্যে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড অন্যতম। তারপরও এই তিনটি দেশের প্রধানমন্ত্রী বিবৃতি দিয়েছেন। তাদের আছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও শক্তিশালী সম্পর্ক। ফলে তাদের দেয়া এই বিবৃতিই বলে দেয় ইসরাইলের ওপর কি পরিমাণ আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক এজেন্সি ওএইচসিএ বলেছে, রাফায় একটি ‘স্ট্যাবিলাইজেশন সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা জরুরি হয়ে পড়েছে। সেখানে গাজায় ভয়াবহ পুষ্টিহীন শিশুদের চিকিৎসা দেয়া হবে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ গাজায় আটা সরবরাহ এখনও বন্ধ করে রেখেছে বলে বুধবার জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভাস। ফিলিস্তিনিদের খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এই আটা।
ওদিকে রাফা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে অন্টারিওতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জর্ডানের বাদশা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহ। রাফা নিয়ে যৌথ বিবৃতি দেয়ার অল্প আগেই এই বৈঠক করেন তারা। কানাডা প্রধানমন্ত্রীর অফিসের বিবৃতি অনুযায়ী, দুই নেতা রাফায় ইসরাইলের পরিকল্পিত সামরিক হামলা নিয়ে তাদের উদ্বেগের বিষয়ে কথা বলেছেন। আলোচনা করেছেন ওই এলাকায় আশ্রয় নেয়া সাধারণ মানুষের ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নিয়ে।
তবে রাফায় অভিযান চালানোর বিষয়ে অটল অবস্থায় আছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, রাফা থেকে সাধারণ মানুষ সরে যাওয়ার পর সেখানে তিনি শক্তিশালী অভিযান চালাবেন। নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে হিব্রু ভাষায় দেয়া বিবৃতিতে বলেছেন, পুরোপুরি বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের যুদ্ধ চলবে। এর মধ্যে আছে রাফায় শক্তিশালী অভিযান।
তবে তাকে সতর্ক করেছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি করার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, নিহতের বিষয় হবে অসহনীয়।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.