ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
নগরের আতুরার ডিপো এলাকায় চামড়ার আড়তগুলোতে কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহ শুরু হয়েছে। শনিবার (১ আগস্ট) দুপুরে নিয়ে আসা বেশ কিছু চামড়া পরিষ্কার করে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করার কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে শ্রমিকদের।
এ বছর চট্টগ্রামে গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ধরা হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ টাকা ও বকরির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা। গত বছর এ দাম ছিল যথাক্রমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও ৩৫ থেকে ৪০ টাকা।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমবায় সমিতির সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামেই আমরা চামড়া কিনছি।
লবণ ছাড়া কাঁচা চামড়া প্রতিটি লবণের খরচ বাবদ ৫-৬ টাকা কম দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সমিতির ১১২ জন সদস্য ছাড়াও আরও ১৫০ জন ব্যবসায়ী কোরবানির চামড়া কেনার সঙ্গে জড়িত।
তবে যেহেতু এখন গরম পড়ছে, তাই দ্রুত চামড়া ধুয়ে লবণ দিলে নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।
মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি দামের আশায় দীর্ঘসময় রেখে দেওয়ায় অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যায় বলেও জানান আবদুল কাদের।
জানা গেছে, এ বছর চামড়ার দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্য, বাংলাদেশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা, করোনা পরিস্থিতিতে সেই চাহিদা সঙ্কোচনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা, দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের গুণগত মান, বর্তমানে চামড়া মজুদের মতো নানান বিষয় বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
গতবছর কোরবানির চামড়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও অনেক জায়গায় কম দামে চামড়া বিক্রি করতে বাধ্য হয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। অনেকে বিক্রি করতে না পেরে নষ্ট হয়ে যাওয়া পশুর চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলেন।
করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর তুলনামূলক কম পশু কোরবানি হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে ৬ লাখ ৮৯ হাজার পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত ছিল। এর মধ্যে ৪ লাখ ৮৯ হাজার গরু-মহিষ ও দুই লাখ ছাগল। তবে হাটগুলোতে পশু ছিল কম। খামার থেকে কিছু গরু বিক্রি হয়েছে।
চট্টগ্রামে বর্তমানে রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি ট্যানারি চালু আছে। এই ট্যানারির পরিচালক মোহাম্মদ মোখলেসুর রহমান বলেন, প্রতিবছর কোরবানির মৌসুমে আমরা লক্ষাধিক চামড়া সংগ্রহ করি। কিন্তু এবছর করোনার কারণে বিশ্বজুড়ে চাহিদা কমে গেছে। এছাড়া আমাদের কাছে গত বছরের চামড়াও মজুদ আছে। এবার আমরা ৫০ হাজার চামড়া কিনছি।
চামড়া ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা জানান, এখনও ঢাকার কয়েকটি ট্যানারি মালিকের কাছে তারা ২৫ কোটি টাকার বেশি পাওনা আছেন। বকেয়া টাকা মেলেনি, এখন চামড়া কেনা ও সংরক্ষণে নতুন করে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে।
নগরের ৭ নম্বর পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের সবচেয়ে বড় চামড়ার বাজার আতুরার ডিপোকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। সন্ধ্যা-রাতে চামড়া বেচাকেনার জন্য লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চামড়ায় লবণ দেওয়ার পর লেজ, কানের বর্জ্য বস্তায় ভরে সড়কে রাখার জন্য আড়তদারদের বলা হয়েছে। রোববার (২ আগস্ট) ভোর থেকে এসব বর্জ্য অপসারণ শুরু হবে। সেখানে ছিটানোর জন্য ৮ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার রাখা হয়েছে।
এদিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে। কোরবানির পশুর চামড়া সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ থাকলে তা অধিদফতরের হটলাইন নম্বরে (১৬১২১) জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.