মাহমুদ হাসান ফাহিম:
ইসলাম অর্থ মুক্তি ও শান্তি। মানবজাতির ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির চিরসত্য পয়গাম, যা বিশ্বের সব মানুষের জন্য সমানভাবে অনুকরণীয় জীবনাদর্শ। ইসলাম এমনই এক ধর্ম, যা সবার শান্তির নিশ্চয়তা দেয়। এর বিধান প্রতিষ্ঠিত হলে অমুসলিমরাও শান্তিতে বসবাস করতে পারে।
আল্লাহতায়ালা ইসলামকে সব দিক দিয়ে পূর্ণতা দান করেছেন। এর অনুসারীদের অন্যের মুখাপেক্ষী করে ছেড়ে দেননি যে, শান্তির জন্য তাদের অন্যের আশ্রয় নিতে হবে। ইসলামই আল্লাহর একমাত্র মনোনীত ও পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম। আর পরিপূর্ণ করলাম আমার নিয়ামত এবং তোমাদের জন্য দ্বীন হিসেবে ইসলামকে (চিরদিনের জন্য) পছন্দ করে নিলাম। (সুতরাং একে পূর্ণরূপে পালন করো)।’ (সুরা মায়েদা ৩)
পবিত্র কোরআনের বহু জায়গায় ‘ইসলাম’, ‘সালাম’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। প্রায় সবগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো মুক্তি ও শান্তি। ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে এসেছে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে চায় তিনি এর দ্বারা তাদের শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং নিজ ইচ্ছায় তাদের অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর তাদের দেখান সরল পথ। (সুরা মায়িদা ১৫-১৬)
বিশ্ববাসীর জীবন থেকে চিরকালের জন্য অশান্তিকে বিদায় জানাতে আগমন ঘটে ইসলামের। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন সে (কলহপ্রিয় মানুষ) প্রত্যাবর্তন করে তখন সে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টির এবং শস্যক্ষেত্র ও জীবজন্তু ধ্বংসের চেষ্টা করে। আর আল্লাহ অশান্তি পছন্দ করেন না।’ (সুরা বাকারা ২০৫)।
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তোমরা তাতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না। আর আল্লাহকে ভয় ও আশা নিয়ে ডাকো। নিশ্চয় আল্লাহর অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়ণদের খুবই নিকটবর্তী।’ (সুরা আরাফ ৫৬)। এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, যেসব কর্মকাণ্ড পৃথিবীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, সেগুলো করতে আল্লাহতায়ালা নিষেধ করেছেন। কেননা শান্ত পরিবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তা বান্দাদের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়।
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা পৃথিবীতে ফাসাদ (অশান্তি) সৃষ্টি করো না।’ (সুরা বাকারা ১১) এর ব্যাখ্যায় হজরত আবুল আলিয়া (রহ.) বলেন, ‘ফাসাদ সৃষ্টি করো না’ অর্থাৎ পৃথিবীতে আল্লাহর অবাধ্য হয়ো না। মুনাফিকদের ফাসাদ সৃষ্টির অর্থই হচ্ছে পৃথিবীতে আল্লাহর নাফরমানি ও অবাধ্যতা অবলম্বন করা। কেননা যে কেউ পৃথিবীতে আল্লাহর অবাধ্য হবে, অথবা অবাধ্যতার নির্দেশ দেবে সেই হবে পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টিকারী। কারণ আকাশ ও জমিন একমাত্র আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত থাকে। (আত তাফসিরুস সহিহ)
ইসলাম বাস্তব অর্থেই শান্তির ধর্ম। মানব রচিত শান্তি নয়; বরং দুনিয়া ও আখেরাতের চূড়ান্ত শান্তির পয়গাম। তাই পূর্ণ আত্মসমর্পণকারী হয়ে ইসলামের অনুশীলন করার কথা বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। যারা নামমাত্র মুসলিম কিন্তু ইসলাম অনুশীলনের ধারেকাছেও নেই, এই ইসলাম তাদের কীভাবে শান্তির পয়গাম শোনাবে! ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা সর্বাত্মকভাবে ইসলামে প্রবেশ করো এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা ২০৮)
মানব রচিত শান্তিকে আসল শান্তি মনে করে যারা ইসলাম গ্রহণ করেনি কিংবা ইসলাম গ্রহণ করার পরও বিজাতীয় কৃষ্টি-কালচারের অনুসরণ ও অনুশীলন করেছে, পরকালে তারাই হবে মহা ক্ষতিগ্রস্ত, এ কথাও কোরআনে বলে দেওয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দ্বীন গ্রহণ করবে তার থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না। আর সে হবে আখেরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।’ (সুরা আলে ইমরান ৮৫)
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.