ভয়েস প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদের ওপারে মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত চলছে। টেকনাফের জালিয়ারদিয়া খুব নিকটবর্তী পূর্ব পাশে অবস্থিত লালদিয়া নামের চরটি নাফ নদের মিয়ানমার জলসীমানায়। ওই এলাকায় বুধবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হওয়া গোলাগুলি বেলা ৩টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এ গোলাগুলির ঘটনায় গুলি এসে টেকনাফ স্থলবন্দরের কার্যালয়, একটি পণ্যবাহী ট্রাক ও স্থানীয় এক ব্যক্তির বসতঘরে লেগেছে। এতে টেকনাফের স্থল বন্দরসহ দমদমিয়া এলাকায় গুলির অব্যাহত শব্দ স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয়রা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, লালদিয়া চরে অবস্থানরত রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরএসওকে হঠিয়ে আরাকান আর্মি চরটি নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়। এ নিয়ে গত বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) একবার গোলাগুলি হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় আজ বুধবার আবারও সংঘাত চলছে।
হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘বুধবার দুপুরে গুলির শব্দে দমদমিয়াসহ বন্দর এলাকা কাঁপছে। ইতোমধ্যে সংঘাতে ছোড়া গুলি দমদমিয়ার আয়ুব নামের এক ব্যক্তির বসতঘরে এসে লেগেছে। বাড়িটির জানালা, ঘরের ভেতরে আলমারিতে গুলি লেগেছে। বন্দরেও কয়েকটি গুলি এসে পড়েছে।’
স্থলবন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্ট লিমিটেড টেকনাফের ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুপুরে কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাই। একপর্যায়ে কার্যালয়ের জানালায় এসে গুলি লাগে। জানালা ভেঙে যায়। এ সময় বন্দর পণ্য বোঝাইকারী একটি ট্রাকের কাচে গুলি লেগে ভেঙে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এর আগে বুধ-বৃহস্পতিবারও গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এতে সবাই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ আছে।’
‘লালদিয়া’ নামক স্থানে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি এবং রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) মধ্যে এই গোলাগুলি বলে জানিয়েছেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওযার্ডের ইউপি সদস্য নজির আহমদ।
তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আরএসও লালদিয়ায় অবস্থান করে আসছিল। তাদের লালদিয়া ছেড়ে চলে যেতে সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু আরএসও লালদিয়ার নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে না দেওয়ায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি হামলা করেছে। এতে উভয়পক্ষে ব্যাপক গোলাগুলিতে হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এর কারণে টেকনাফ সীমান্তের স্থলবন্দর সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছেন।’
টেকনাফের ইউএনও মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘বুধবার দুপুর ১২টার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের জেরে ছোড়া কয়েকটি গুলি টেকনাফ স্থলবন্দরের ভবনে আঘাত হানে। এতে ভবনটির দরজা-জানালার কাঁচ ভেঙেছে। তবে এতে কেউ হতাহত হননি।’
স্থানীয়দের কাছে থেকে ঘটনাটি শোনার পর বিজিবি ও কোস্ট গার্ডসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে কথা বলতে বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2024 Coxsbazar Voice. All rights reserved.