ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান পরিচালনার আগে সমন্বয় করে নেওয়ার জন্য জননিরাপত্তা বিভাগকে চিঠি দিয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সম্প্রতি বিভিন্ন হাসপাতালে অভিযানের কারণে স্বাস্থ্যসেবা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে সৃষ্ট চাপা অসন্তোষের কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এই সিদ্ধান্তের কারণে হাসপাতালগুলোতে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান ‘সমন্বয়ের ফাঁদে’ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টজনরা।
অভিযান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতীতে পরিচালিত প্রতিটি অভিযানই ছিল যৌথ অভিযান। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়েই অভিযান পরিচালিত হয়ে আসছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ যে সমন্বয়ের কথা বলছে— তা নতুন কিছু নয়। আগেও সেই সমন্বয় ছিল।
জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর দেশের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নানা বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করছেন। একটি হাসপাতালে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করাতে তাদের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং এ কারণে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে এক ধরনের চাপা অসন্তোষ বিরাজ করছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযান সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, অনুমতি বা সমন্বয় একটা ফাঁদ হয়ে আসতে পারে। কেননা, অতীতে কোনও অভিযান পরিচালনার আগে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি। এতে নেতৃত্ব দিয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। অন্যরা সহযোগিতা করেছে। সমন্বয়ের নামে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করা হলে অভিযান বাঁধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া, অভিযানের তথ্য ফাঁস হলে অপরাধীরা পার পেয়ে যাওয়া বা অপরাধের আলামত সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে পরিচালিত অভিযানে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের চিঠির সমালোচনা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। স্বাস্থ্য বিভাগের এই সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রকাশের সুযোগকে প্রতিহত করতে পারে উল্লেখ করে টিআইবির প্রধান নির্বাহী ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন,‘দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম-দুর্নীতির যে চিত্র প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল, এ সিদ্ধান্ত সেটিকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় ছাড়া আর কিছু হিসেবে ভাবাটা খুবই কঠিন।’
স্বাস্থ্য বিভাগের এ সিদ্ধান্তের পেছনে তিনটি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা হয়তো মনে করছেন, চুনোপুটি টানাটানি করলে রুই কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে। সেটা তাদের একাংশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। দ্বিতীয়ত, যে সব সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব সৃষ্টি করেছিলেন— তাদের আত্মবিশ্বাস নেই যে তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব স্বচ্ছতা, নৈতিকতার ও দুর্নীতিমুক্তভাবে পালন করতে পারেন। আরেকটি কারণ হতে পারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ক্ষমতার অপব্যবহার না করে পালন করবে এধরনের আস্থা মন্ত্রণালয়ের নেই।’
স্বাস্থ্য বিভাগের এ সিদ্ধান্তের কারণে হাসপাতালগুলোর অনিয়ম -দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান এক মুহূর্তের জন্যও থেমে থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সমন্বয়ের কথা বলেছি। এর কারণে কোথাও কোনও অভিযান এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ থাকবে না। অন্যায়-অনিয়ম হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সূত্র:বাংলাট্রিবিউন।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.