ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
দখল, বন উৎসাদন ও দূষণে বিপন্ন সোনাদিয়া দ্বীপের জীববৈচিত্র্য। এই দ্বীপের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ক্যাম্পেইন করেছে কিশোর পরিবেশ অধিকার কর্মী ও ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার তাসফিয়া তাহসিন পূর্ণতা। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিও ছিল তার ক্যাম্পেইনে।
স্থানীয় জনগণ, জেলে ও পর্যটকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ ক্যাম্পেইন চালানো হয়।
এছাড়াও তিনি সোনাদিয়া দ্বীপের একটি অংশে সীমিত পরিসরে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালান। এ সময় তিনি ওই এলাকায় পড়ে থাকা পানির বোতল ও ভোজ্য তেলের কনটেইনারসহ নানা প্লাস্টিক পণ্য, খাবারের মোড়ক, পলিথিন ইত্যাদি বর্জ্য অপসারণ করেন। এসব বর্জ্য কক্সবাজারে এনে ডাস্টবিনে ফেলা হয়।
জানা গেছে, শনিবার সারাদিন সোনাদিয়া ও কালাদিয়া দ্বীপের বিভিন্ন অংশে নিজ হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন পূর্ণতা। এসব পোস্টারে সোনাদিয়া দ্বীপ রক্ষা, কার্বন গ্যাসের নিঃসরণ কমানো, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের নানা স্লোগান ছিল। এ সময় বেশ কিছু মাছ ধরার নৌকা কাছে আসে। উৎসুক জেলে ও মাঝিরা বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চান। তাসফিয়া তাদেরকে সোনাদিয়া দ্বীপের পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি দ্বীপের প্যারাবন ধ্বংস না করা, যেখানে-সেখানে প্লাস্টিক ও পলিথিন না ফেলা, নদী ও সাগরে বর্জ্য নিক্ষেপ না করার আহ্বান জানান।
তাসফিয়া তাহসিন পূর্ণতা একজন সৌখিন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার ও চিত্রশিল্পী। দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী তাসফিয়া ১৪ বছর বয়স থেকে ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি করছেন। পাখি ও প্রাণীদের ছবি আঁকাও তার অন্যতম শখ। ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফি করতে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিবেশ দূষণ, বনের বৃক্ষ নিধন, বন্যপ্রাণী শিকারের মতো বিষয়গুলো মোটাদাগে তার মনে দাগ কাটে। এ থেকে তিনি পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে সচেতনতা বাড়ানোর বিষয়ে ক্যাম্পেইন চালানোর সিদ্ধান্ত নেন।
চলতি মাসেই তিনি সুন্দরবন ও সংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষা বিষয়ে আরেকটি ক্যাম্পেইনে যাবেন।
তাসফিয়া তাহসিন পূর্ণতা তার ক্যাম্পেইন সম্পর্কে বলেন, পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে আমি বন্যপ্রাণীদের ছবি তুলি। ছবি তুলতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি, আমাদের বন, জলাভূমি, প্রাণীদের আবাসস্থল ক্রমেই কমে যাচ্ছে। এর সঙ্গে পরিবেশ দূষণ তো আছেই। এসব কারণে আগের মতো পাখি ও বন্যপ্রাণী দেখা যাচ্ছে না। আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বই-পুস্তক পড়ে ও গণমাধ্যম থেকে আমরা বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারছি। উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনে যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, বাংলাদেশ তাদের একটি। উন্নত দেশগুলোর কর্মকাণ্ডের মাশুল দিচ্ছি আমরা। এর মধ্যে যদি নিজেরাও পরিবেশ নষ্ট করতে থাকি, তাহলে আমাদের ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে।
তাসফিয়া বলেন, এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী দিনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আরও তীব্র হবে। আর তাতে এখন আমরা যারা কিশোর-কিশোরী আছি এবং আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যারা, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমাদের নিজেদের প্রয়োজনেই কিশোর-কিশোরীসহ নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সোচ্চার হতে হবে।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.