নিজস্ব প্রতিবেদক:
মহেশখালীতে প্রশাসনিক হয়রানি থেকে বাঁচতে লবণ ও চিংড়ি ব্যবসায়ী বড় মহেশখালী জাগিরা ঘোনার বাসিন্দা হাজী মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র হাজী মোস্তাক আহমদ প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন। তিনি আবেদনে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিচালক, পরিবেশ অধিদপ্তর, মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ওসি মহেশখালী, সহকারি কমিশনা, ভূমি, মহেশখালী, বিট কর্মকর্তা, গোকরঘাটা বিট, মহেশখালী, বিট কর্মকর্তা, ঘটিভাঙ্গা বন বিট, মহেশখালী বরাবরে প্রেরণ করেন।
আদালতের আদেশ থাকার পরও ভুল তথ্যের কারণে তিনি ইতিমধ্যে কয়েকবার প্রশাসনের হয়রানির শিকার হয়ে ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন। যার কারণে তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে সঠিক তথ্য উল্লেখ করে লিখিত আবেদন করেছেন যা ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়েছে।
আবেদন সূত্রে জানাযায়, বিগত ২০০৬-২০০৭ ইংরেজী সালের ১৮৪ নং ইজারা মূলে মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ঘটিভাঙ্গা (বর্তমানে পানদ্বীপ) মৌজার এস.টি. মামলামূলে ১০.০০ (দশ) একর জমি লীজ প্রাপ্ত হন হাজী মোস্তাক আহমদ। উক্ত সময়ে তিনিসহ মোট ১৫ (পনের) জন ব্যক্তিকে ১০.০০ (দশ) একর করে জমির লীজ প্রদান করা হয়। তিনি বিগত ২০১২ ইংরেজী সাল পর্যন্ত সরকারের খাজনা আদায় করেছেন। তারপর উক্ত মোট ১৫০.০০ একর জমিতে আমি সহ অপরাপর লীজ গ্রহীতাগণ মিলে শুষ্ক মৌসুমে লবণ চাষ ও বর্ষা মৌসুমে চিংড়ি চাষের জন্য লীজকৃত জমি আবাদ এর উদ্দেশ্যে বহু অর্থ ব্যয়ে চাষ উপযোগী করেন। বর্তমানে চতুর্দিকে বেড়ীবাঁধ সহ ভোগ-দখলে আছেন। কিন্তু ২০১৩ ইংরেজী সালের দিকে এসে সরকার পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) উক্ত এস.টি. মামলার অনুবলে খাজনা নিতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং- ৫৩৬৫/২০১৩ দায়ের করে এবং মহামান্য হাইকোর্ট তিনি সহ অপরাপর ১৫ (পনের) জন লীজ গ্রহীতাকে শান্তিপূর্ণ ভোগ-দখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। উপকূলীয় বন বিভাগ উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের মাননীয় চেম্বার জজ এর বরাবরে লীভ টু আপীল- ০৮/২০১৩ নং মামলা দায়ের করলে মাননীয় চেম্বার জজ বিগত ১১/০৯/২০১৩ ইং তারিখ উক্ত লীভ টু আপীল আবেদন খারিজ করিয়া দেন।
আবার পরবর্তীতে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে বন বিভাগ পুনরায় মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদন করলে মহামান্য হাইকোর্ট উক্ত রীট মামলায় বিগত ১৫/০৫/২০১৫ ইং তারিখের প্রদত্ত লীজ গ্রহীতাগণকে ভোগ-দখলে ব্যাঘাত না করার নির্দেশ প্রদান করে উক্ত লীভ টু আপীল- ০৮/২০১৩ নং মামলা খারিজ করে দেন। যাহা বিগত ২৪/১১/২০১৫ ইং তারিখ পর্যন্ত বলবৎ থাকে।
সর্বশেষ মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের বিগত ২৮/০৫/২০২৫ ইং তারিখ পরবর্তী ০৬ (ছয়) মাসের জন্য লীজ গ্রহীতাগণকে ভোগ- দখলে ব্যাঘাত না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে প্রতিনিয়ত তাকে ও লীজ গ্রহীতা সহ অপরাপর লীজ গ্রহীতাগণ মোট ১৫ জনের ১৫০.০০ (একশত পঞ্চাশ) একর জমিতে আমাদের ভোগ-দখলে থাকা লবণ চাষের জমিতে বর্তমানে লবণ উত্তোলনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। যদি তিনি সহ অপরাপর লীজ গ্রহীতাগণকে উক্ত লীজকৃত জমি হতে বেআইনীভাবে উচ্ছেদ করা হয়, তাহলে আইনের আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় খোলা থাকবেনা বলে তিনি মনে করেন।
তিনি আরো বলেন, লীজকৃত জমিতে বর্তমানে প্রায় ৩০০ এর অধিক পরিবার সরাসরি লবণ চাষ করিয়া জীবিকা নির্বাহ করে। যদি উচ্ছেদ হয় ৩০০ পরিবারসহ তাদের পথে বসে যাওয়া ছাড়া আর কোন পথ থাকবেনা।
তিনি মনে করেন, এমতাবস্থায় লীজকৃত জমিতে শান্তিপূর্ণ ভোগ-দখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি করা হতে বিরত থাকার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি জেলা প্রশাসনের নির্দেশ প্রদান করা একান্ত আবশ্যক। অন্যথায় তাদের অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হবে।
শেষে তিনি ৩০০ পরিবার ও জীবন জীবিকার প্রতি অনুগ্রহ এবং আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান পূর্বক সমস্ত বিষয়াদি সদয় বিবেচনা করে জনহিতকর সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য বা বিকল্প প্রতিকার প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহবান করেন।
তফসিল:- মৌজা- পানদ্বীপ (সাবেক ঘটিভাঙ্গা), ইউনিয়ন- কুতুবজোম, উপজেলা- মহেশখালী, জেলা- কক্সবাজার, বি.এস. ১নং খতিয়ানের বি.এস. ৩৩৮১ দাগের আন্দর ১৫০.০০ একর বা ৩৭৫ কানি জমি।
চৌহদ্দি:- উত্তরে- মালেক ও মহসিন আনোয়ার, দক্ষিণে- বড় খাল, পূর্বে- মোচ খাল, পশ্চিমে- সমশের উল্লাহ বা মাষ্টার আমিন শরীফ। এই চকবন্দে ১৫০.০০ একর বা ৩৭৫ কানি জমি।
রিট ও আদশের বিষয়ে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী রাশেদুল হক খোকন বলেন, উক্ত রিট পিটিশন আবেদনকারীর (রিটকারী) আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ছয়মাসের জন্য রিটকারীসহ অপরাপর ১৫ জন লীজগ্রহীতাগণকে ভোগদখলে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ মহামান্য হাইকোর্টের আপীল বিভাগ। আদালতের আদেশ পালনে আমরা সবাই বাধ্য।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.