ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই গুম করা হতো বলে জানিয়েছেন গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী। গুম করা অনেককে ভারতে পাঠিয়ে সেখানকার পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হতো বলেও জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সভাপতি এসব তথ্য জানান। কমিশনে দাখিল করা অভিযোগ বিশ্লেষণে এসব তথ্য দেন তিনি।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গুম হওয়া ব্যক্তিদের চার পরিণতি হতো। গুম করে তাকে হত্যা করা হতো। এ ছাড়া গুম ব্যক্তিকে জঙ্গি তকমা দিয়ে উপস্থাপন করা হতো। এ ছাড়া কাউকে কাউকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে পাঠিয়ে দিয়ে সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেপ্তারের ব্যবস্থা করা হতো।
তবে কারো ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে, অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রে মামলা না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এক হাজার ৮৫০টি অভিযোগ বিশ্লেষণের মধ্য থেকে ২৫৩ জন গুমের শিকার ব্যক্তির তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘কমিশনে দাখিলকৃত ৮১% অভিযোগ জীবিত ভিকটিমদের হলেও, ১৯% অভিযোগ ফেরত না আসা ভিকটিমদের। গুম থেকে ফিরে না আসা ১২ জনের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে এবং তাদের গুমের জন্য কারা দায়ী তা প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করতে পেরেছি।
চলমান অনুসন্ধানের স্বার্থে এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
ফিরে না আসা ভিকটিমদের আরো অনেকের বিষয়েই কমিশনের কাজের অগ্রগতি রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু একেকজন ভিকটিমের বিষয়ে অনুসন্ধান সম্পন্ন করার আগে তথ্য প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। ফিরে না আসা ভিকটিমদের বিষয়ে অপরাধী এবং গুমের অপরাধ সংঘটনের স্থানসহ নানাবিধ বিষয়ে তথ্যের ঘাটতি বা পুরনো কললিস্ট না পাওয়াসহ নানা রকম বিলম্বঘটিত প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও কমিশন আন্তরিকতার সঙ্গে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।’
সন্ত্রাসবাদ সারা বিশ্বে একটি বাস্তব হুমকি-বাংলাদেশও এর বাইরে নয় উল্লেখ করে গুম কমিশনের সভাপতি বলেন, ‘২০১৬ সালের হলি আর্টিজানে হামলার মতো ঘটনা এর প্রমাণ। তবে এই হুমকি মোকাবিলায় রাষ্ট্রের সততা, মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতি এবং আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় অটল থাকা জরুরি।
সরকার সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারণাকে যখন রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, তখন তা আইনের শাসন, প্রতিষ্ঠান ও জনগণের বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়।’
গুমের সঙ্গে র্যাব সবচেয়ে বেশি জড়িত উল্লেখ করে মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘গুমের সঙ্গে বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের পাশাপাশি ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীরাও জড়িত। বাংলাদেশে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভারতীয় যারা জড়িত, তাদের বিষয়ে আমরা কিছু করতে পারব না।’
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির সদস্য নুর খান লিটন বলেন, ‘গুমের বিষয়ে ডিজিএফআইয়ের কর্মকাণ্ডে সরাসরি সেনাবাহিনীর দায় নেই। তবে তারা জানত না এটা বলা যাবে না।’
আরেক সদস্য মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘ভারতে বন্দি থাকা বাংলাদেশিদের তথ্য চেয়েছি। এদের মধ্যে গুমের কেউ আছে কি না খতিয়ে দেখছি। পুশ-ইন যাদের করা হচ্ছে, এদের মধ্যে কেউ গুমের শিকার কি না খতিয়ে দেখছি।’
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.